আজ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারক লিপি
বার্তা পরিবেশক ॥
মহেশখালীর কালারমারছড়ার ইউনিয়ন পরিষদ পুলিশ কর্তৃক ভাংচুর ও চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফকে হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে ইউপি সদস্যরা কক্সবাজারে একটি অভিজাত হোটেলে শনিবার (১৪ অক্টোবর) এক সাংবাদ সম্মেলন করেন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করেন, পুলিশ উদ্দেশ্যে প্রণোদিত ভাবে ককালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের নগ্ন হামলা চালিয়েছে। ক্যাম্প ইনচার্জ রাজু আহমদ গাজী ও এএসআই অহিদুর রহমানসহ বিতর্কিত পুলিশ সদস্যদের অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন ইউপি সদস্যরা। অন্যতাই পুলিশের অনাচার, নির্যাতন ও নীরহ লোকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় জড়িত করার অভিযোগে কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদ অত্র ইউনিয়নের ৬০ হাজার জনগণকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ইউপি সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গতকাল শনিবারের সংবাদ সম্মেলন আজ ১৫ (অক্টোবার) দূর্নীতিবাজ, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী, নারী লোভী, মাতাল প্রকৃতির পুলিশ কর্মকর্তা এসআই রাজুসহ বিতর্কিত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। এরপরও প্রশাসনের টনক না নড়লে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন ইউপি সদস্যারা। এদিকে ইউপি সদস্যরা আশংকা ব্যক্ত করেছেন তাদের সংবাদ সম্মেলনের খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে এলাকায় গণগ্রেফতার ও মিথ্যা মামলা দায়েরের ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, নীরহ লোকজন, ব্যবসায়ী, শিক্ষক ও পেশাজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণীর লোক চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানের চেয়ারম্যান (১) লিখিত বক্তব্যে আবুল কাশেম বলেন, শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কালারমারছড়া ক্যাম্পের আইসি এসআই রাজু আহমদ গাজী ও এএসআই অহিদুর রহমানের নেতৃতে কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে অনধিকার প্রবেশ করে নগ্নভাবে হামলা চালিয়ে ১০ অক্টোবর গ্রাম আদালতে সরকারী ভাবে বরাদ্দ পাওয়া এজলাসের নতুন আসবাব পত্র ও মূল্যবান জিনিসপত্র ভাংচুর করে।
কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা আরো বলেন,কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ ভাংচুরের ব্যাপারে পুলিশ ক্যাম্পের নিচে গিয়ে এসআই রাজু আহমদের কাছে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিতভাবে অশ্লীল ভাষায় চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফকে গালিগালাজ করে। ওই পুলিশ কর্মকর্তা সাথে সাথে উত্তোজিত হয়ে অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে। এতে পথচারীসহ ৫জন গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধরা হচ্ছে আবদুর রহিম (৩৫), আবদুশুক্কুর (৩৭), শহিদুল্লাহ (২২), মোস্তফা (২২), আবদুশুক্কুর (২৮)। গুলিবিদ্ধ আহতদের মহেশখালী ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এসময় এলাকার জনগণ মানব বেষ্টনি করে রেখে ইউপি চেয়ারম্যানকে পুলিশের বেপরোয়া গুলিবর্ষন থেকে রক্ষা করে। গুলিবিদ্ধ সাধারণ জনগণ ও পথচারীদের কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে নিয়ে আসে। মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভাংচুর ও গুলিবিদ্ধ আহত ও পথচারীদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। এসআই রাজু আহম্মেদ ও এএসআই অহিদুর রহমানের এ নগ্ন হামলায় এলাকার জনগন হতভম্ব। এ ঘটনা কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদপত্রে গুলির ম্যাগজিন ছিনতাইয়ের কথা উল্লেখ থাকলেও প্রকৃতপক্ষে এধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি। বরং এসআই রাজু আহম্মেদ গাজী তাহার প্যান্টের পকেটে ম্যাগজিন ঢুকিয়ে রাখার ছবি আমরা দেখেছি। কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদে নগ্ন হামলাকারী এসআই রাজু আহম্মেদ গাজী ও এএসআই অহিদুর রহমানকে পুলিশ ক্যাম্প হতে প্রত্যাহার করে ওই ঘটনার সুষ্ঠ ও নিরপক্ষ তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সংঘটিত ঘটনা যাতে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে না পারে সে জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নির্মরমোহ হস্তক্ষেপ চেয়েছেন এলাকাবাসী।
সংবাদ সম্মেলনের উপস্থিত ছিলেন, কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ লিয়াকত আলী, ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কাশেম, ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোস্তাক আহমদ, ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ ইয়াছিন, ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শরীফুল ইলাম, ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক, ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শরীফুল আলম, ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আমির হোছাইন, সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্যদের মধ্যে ১,২, ও ৩নং খদিজা বেগম, ৪,৫, ও ৬ ওয়ার্ডের নয়ন মনি ও ৭,৮, ও ৯নং ওয়ার্ডের মনোয়ারা বেগম।
কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের সংবাদ সম্মেলন
পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে
