বিশেষ সংবাদদাতা :

কক্সবাজার শহরের বালিকা মাদ্রাসা সড়কস্থ উত্তর বাহারছড়ায় বিয়ের ৪ মাসের মাথায় যৌতুকের কারণে বিগত ০৪/১০/২০১৭ ইং তারিখ নির্মমভাবে খুন হয়েছে এক গৃহবধূ। নিহত গৃহবধূকে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে রেখে স্বামী মাহমুদুল করিম (২৭) পালিয়ে যায়। নিহতের পরিবারের দাবি, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য রিয়াজুল জান্নাতের স্বামী,তার মা ও অন্য দু‘জন সহযোগী আসামীর সহযোগীতায় নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। নিহত রিয়াজুল জান্নাত চকরিয়া উপজেলার পূর্ব কাকারা পাহাড়তলী এলাকার মো. শফিকুল ইসলামের মেয়ে।ছয় সন্তানের মধ্যে নিহত রিয়াজুল জান্নাত দ্বিতীয়। ঘটনার খবর পেয়ে কক্সবাজার থানা পুলিশ দ্রুত কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে নিহতের সুরতহাল রির্পোট তৈরি পূর্বক ময়নাতদন্ত করে লাশ পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করেন। এসময় হাসপাতাল থেকে গৃহবধুর শ্বাশুড়ী মুর্তুজা বেগমকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী আটক করে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত C/W মুলে হাজতে প্রেরণ করেন।
প্রত্যেক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত ৪ মাস পূর্বে বিগত ০৪/০৫/২০১৭ ইং তারিখ কক্সবাজার শহরের উত্তর বাহারছড়া বালিকা মাদ্রাসা এলাকার মৃত অছিয়র রহমানের ছেলে মাহমুদুল করিমের সাথে চকরিয়া থানার পূর্ব কাকারা পাহাড়তলী এলাকার শফিকুল ইসলামের ২য় কন্যা রিয়াজুল জন্নাত এর ইসলামী শরীয়তের বিধান মতে সামাজিকভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের পর হইতে যৌতুকের দাবীতে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করিত।নিহতের বাবা শফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাতেও আমাকে ফোন করে জানিয়েছিল স্বামী ও শ্বাশুড়ির মারধর ও নির্যাতনের কথা। এর আগেও যৌতুকের টাকার জন্য বিভিন্নভাবে নির্যাতন করলে আমি ৫০ হাজার টাকা যোগাড় করিয়া দিই।এরপর সকালে ছেলের মা‘ ফোন করে বলে নিহতের বাবা শফিকুল ইসলামকে জানায় তোমার মেয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আছে। তখন আমি,ইউপি মেম্বার ও প্রতিবেশি লোকজন কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ছুটে আসি,আসিয়া দেখিতে পাই যে আমার নিহত মেয়ে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে পড়ে আছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া জানান, আমরা মরদেহটি হাসপাতালে পেয়েছি। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে দাগ দেখা যাচ্ছে ও গলায় বড় ধরণের দাগ আছে। ময়না তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।পরবর্তিতে নিহতের পিতা থানায় মামলা করিতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ পি.এম রির্পোট আসলে মামলা নিবে মর্মে আশ্বস্ত করেন।উক্ত বিষয়ে আজ নিহতের পিতা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আসামীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী দরখাস্ত দায়ের করিলে তা নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু করার জন্য থানা কর্তপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করেন।এই বিষয়ে মামলার নিয়োজিত কৌশুলি অ্যাডভোকেট খালেদুল কবির জানান”আইন-আদালত হচ্ছে মানুষের ন্যায় বিচার প্রাপ্তির শেষ আশ্রয়স্থান।আইনের অজ্ঞতার কারনে ও অসহায়ত্বের কারণে যাতে কোন ন্যায় বিচার প্রার্থী বঞ্চিত না হয়”।