সাইফুল ইসলাম :

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পার্কিংয়ে আড়ালে হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশ প্রকাশ ও দেলোয়ারের বিরুদ্ধে টাকা বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রতিনিয়তে হয়রানির শিকার হচ্ছে রোগি ও গাড়ির চালকদের। সূত্রে জানা গেছে, পার্কিং নিষেধ এর সাইন বোর্ড দেখিয়ে রোগি নিয়ে হাসপাতালের বর্ডারে সিএনজি, টমটম ও রিক্সা ঢোকা মাত্রই টাকা আদায় করেছে পুলিশ। না দিলে নানা অযুহাত দেখিয়ে চালকদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। এ কাজটা বেশির ভাগই হয়ে থাকে প্রতিদিন মাগরিবের পর থেকে। টেকনাফ হোয়াইক্যং থেকে রোগি নিয়ে আসা সিএনজির ড্রাইভার আব্দুল্লাহ বলেন, আমি গত ৩ই অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে হোয়াইক্যং লম্বাবিল থেকে একজন রোগি নিয়ে সদর হাসপাতালে এসেছি। এসময় রোগির সাথে ছিলো সেলিম নামে একজন স্বজন। রোগি একা হাটতে পারেনা তাকে ধরতে হবে। তখন রোগির সাথে থাকা সেলিম বললো আমিতো একা পারবো না, গাড়িটা থামিয়ে জরুরি বিভাগে একটু পৌঁছে দেন। তখন রোগিকে জরুরি বিভাগে দিয়ে এসেই দেখি আমার গাড়ির ব্যাটটা নিয়ে গেছে পুলিশ। আমি যখন গাড়ির ব্যাটটা পুুলিশের কাছ থেকে খুঁজলাম তখন বললো এখানে পার্কিং নিষেধ সাইন বোর্ড আছে কিনা দেখ। তখন ড্রাইভার আব্দুল্লাহ বললো স্যার আমি খেয়াল করেনি। রোগির অবস্থা খারাপ তিনি হাটতে পারেনা তাকে একটু পৌঁছে দিয়ে আসলাম। করার কিছু নেই গাড়িটা থানায় চলে যাবে বলে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দিয়ে থাকে। হোয়াইক্যং থেকে রিজার্ভ ভাড়া নিয়ে এসেছি ৫০০ টাকা ওই টাকা থেকে ৩০০ টাকা দেওয়ার পরে আমরা গাড়ির ব্যাটটি দিয়েছে পুলিশ। না হয় আমার গাড়িটাও থানায় চলে যাবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে পুলিশ প্রকাশ ও দেলোয়ার। টাকা দেওয়ার পূর্বেই রোগির সাথে থাকা সেলিমও পুলিশকে ব্যাটটা দেওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ করেছিল। কিন্তু দিলোনা। টাকার দেওয়ার পরে ব্যাটটি দিয়ে দিলো। এভাবেই প্রতিদিন অনেক রোগি ও গাড়ির চালকদের হয়রানির শিকার হচ্ছে এ দায়িত্বরত পুলিশের কাছে। ১ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯ টার দিকে একইভাবে গাড়ি রেখে সিএনজি চালক রফিক রোগি পৌঁছে দিয়ে এসেই দেখে তার গাড়ির ব্যাটটি নিয়ে গেছে। এরপরে ড্রাইভার তার পরিচিত এক সাংবাদিককে দেখলেন এবং বললেন, ভাইয়া আমার গাড়ির ব্যাটটি নিয়ে গেছে পুলিশ। কি জন্য জিজ্ঞাস করা হলে বললো আমি গাড়িটা এখানেই রাখছি বিধায়। আপনি এখানেই পার্কিং নিষেধ ওইটা দেখেননি। আমি নতুন আসছি তাই খেয়াল করেনি। তখন সাংবাদিক গিয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বরত পুলিশ প্রকাশ ও দেলোয়ার বলেন, আরওএমকে বলতে হবে। সাংবাদিক আরওএম সাথে কথা বলেছে। তিনি বললেন তত্ত্বাবধায়কের সাথে কথা বলো। তারপর প্রতিবেদক তত্ত্বাবধায়কের সাথেও কথা বললো এবং তিনি বললেন কালকে সকাল ১০ টার দিকে আসিয় বলে ফোন কেটে দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাশের একজন ব্যবসায়ী জানান, প্রতিদিন পার্কিং নিষেধের অযুহাত দেখিয়ে সিএনজি, টমটম ও রিক্সা থেকে হুমকি ধমকি দিয়ে টাকা আদায় করছে হাসপাতালে পুলিশ বক্সে দায়িত্বরত পুলিশ। এমনকি অনেকে রোগির স্বজন ও ড্রাইভারের সাথে ঝগড়াও হয়ে যায়। কেউ কেউ ক্ষমতা দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আবার কাউকে টাকা দিতে হচ্ছে। না হয় গাড়ি থানায় চলে যাবে হুমকি দিয়ে থাকে। অনেক সময়ে দেখা যায়, যতো টাকা নিয়ে ভাড়া নিয়ে হাসপাতালে এসেছে তার চাইতে বেশি টাকা গাড়িটা ছাড়িয়ে নিতে হয় অনেকের।

এ বিষয়ে কয়েকদিন আগে শহরের ৬নং থেকে রোগি নিয়ে যাওয়া রোগির ছেলে রিয়াদ মোর্শেদ রাশেদ বলেন, আমি টমটম নিয়ে আমার মাকে হাসপাতাল নিয়েছিলাম। আমার মা একেবারেই হাটতে পারে তাকে ধরার জন্য ড্রাইভারকে একটু অনুরোধ করলাম সে আমার কথা অনুযায়ী ধরে জরুরি বিভাগে পৌঁছে দেন। এরপরে দ্রুত সে চলে এসেই দেখছে তার গাড়ির চাবি পুলিশে নিয়ে গেছে। আমি ও ড্রাইভার অনেক অনুরোধ করেছি পুলিশকে। গাড়ির চাবি দিলো না। শেষ পর্যন্ত ২শ’ টাকা দিয়েই গাড়ির চাবিটা নিতে হলো।

এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. পু চ নু অভিযোগ অস্বিকার করে জানান , এধরনের টাকার বানিজ্য হচ্ছে না সদর হাসপাতালে। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। টাকার বিষয়ে কেউ কোন ধরণের অভিযোগও দেয়নি।