মমতাজ উদ্দিন আহমদ, আলীকদম: 

ঢাকা-আলীকদমের একটি পাচারকারী সিন্ডিকেটের কবল থেকে বান্দরবানের আলীকদম মুরুং কমপ্লেক্স থেকে পুলিশ ৯টি বিরল প্রজাতির পাহাড়ি কচ্ছপ উদ্ধার করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার বিকেলে বনবিভাগের সহায়তায় পুলিশ কচ্ছপগুলো উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শাহারিয়ার সিজার নামের এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ ও বন বিভাগের কর্মকর্তরা।
আলীকদম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী সাইদুর রহমান রবিবার সকালে জানান, মুরুং কমপ্লেক্স থেকে উদ্ধার করা কচ্ছপগুলো শনিবার রাতে স্থানীয় বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আটককৃত ব্যক্তির দেখানো ‘অনুমোদন’ কপিসহ তাকে রবিবার লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নিকট পাঠানো হয়েছে।
আলীকদম তৈন রেঞ্জের ফরেস্ট রেঞ্জার খন্দকার শামসুল হুদা জানান, শাহরিয়া সিজার নামে এক ব্যক্তি কচ্ছপগুলো আলীকদমের দুর্গম এলাকা থেকে ¤্রাে সম্প্রদায়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করেন। শাহারিয়ার সিজার উদ্ধারকৃত কচ্ছপগুলো ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্রের জন্য নিয়ে যাওয়ার কথা বললেও বাংলাদেশ বন্য প্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের গত ২৫ সেপ্টেম্বরের একটি অনুমতির ফটোকপি দেখান। তবে এ ‘অনুমতি’র সত্যতা জানার জন্য রবিবার তাকে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার (ডিএফও) নিকট পাঠানো হয়েছে। ডিএফও’র সিদ্ধান্তেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে আলীকদম মুরুং কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধায়ক ইয়োংলক মুরুং বলেন, এ বিষয়ে আমি জানিনা। কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পাসিং ¤্রাে আমার অনুমতি ছাড়া কোন একসময় কচ্ছপগুলো কমপ্লেক্সে রেখেছিল। পাসিং ¤্রাে মেম্বার বলেন, শাহরিয়ার সিজার নামে একব্যক্তির জন্য তিনি কচ্ছপগুলো এখানে এনে রেখেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, এর আগেও আলীকদমসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা থেকে বিরল প্রজাতির কচ্ছপ বেশ কয়েকবার নিয়ে যান এই শাহারিয়ার সিজার। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা বিভাগের ডিএফও জহির উদ্দিন আকন স্বাক্ষরিত ৬ জুনের একপত্রে দেখা যায়, সাঙ্গু সংরক্ষিত বনাঞ্চল হতে বিভিন্নভাবে উদ্ধারকৃত বিরল প্রজাতির ১০টি পাহাড়ি কচ্ছপ ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্রে স্থানান্তরের ‘অনুমতি’ দেওয়া আছে। স্থানীয় সলোমন ¤্রাে জানান, ইতোমধ্যেই এই কচ্ছপগুলো নিয়ে গেছে শাহরিয়া সিজার। নতুন করে পাহাড়ি কচ্ছপ ধরে পাচারের উদ্দেশ্যে মজুত করা হয়েছিল।
অভিযুক্ত শাহারিয়ার সিজার সংবাদিকদের জানান, বিরল প্রজাতির হওয়ায় কচ্ছপগুলোর প্রজনন বাড়াতে ও সংরক্ষণ করতে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই সেগুলো ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহামদ জানান, উদ্ধারকৃত কচ্ছপগুলো আমাদের পানবাজার বিটে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে কচ্ছপগুলো ডুলাহাজারা সাফারী পার্ক অথবা মাতামুহুরী রিজার্ভের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে। তবে এখনো এ বিষয়টি আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।