শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর উপজেলা প্রতিনিধি :

কক্সবাজার সদর উপজেলার দৃষ্টিনন্দন ঈদগাঁও-চৌফলদন্ডী-খুরুষ্কুল ব্রীজ নির্মাণের ফলে পর্যটন ও উন্নয়নের অপার সম্ভাবনার দ্বার খুলছে। যার ফলে ভ্রমণ পিপাসু দর্শনার্থীদের প্রায়শ বিকেলে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্যণীয়। এমনকি দিগন্তরেখায় মহেশখালী চ্যানেলের সৌম্য সুনীলস্বচ্চ জলরাশি, অদূরে বাঁকখালী ও বঙ্গোপসাগরের মিলনমুখ, উপকণ্ঠে সমুদ্র শহর, একটু তুফাতে জোয়ারভাঁটার অরণ্য ও বৈচিত্রময় জলজীবনের আনন্দ বেদনার দৃশ্যকাব্য, বিস্তীর্ণ লবণক্ষেতের রূপালী শস্যসহ সব মিলিয়ে সমস্ত সম্ভাবনা ও সৌন্দর্য্যরে হেলেনিক নান্দনিকতায় আবর্তন করছে চৌফলদন্ডী-খুরুষ্কুলের উপকূলঘেরা সাগর নদী চ্যানেলের মোহনা থেকে খোসাডাঙ্গা দিগন্তের অবারিত জলভূমি।

জানা যায়, কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে দীর্ঘ বছরের চেষ্টা ও সাধনায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এই চোখ জুড়ানো দৃষ্টিনন্দন ব্রীজটি। কালের খেয়াঘাট, মালকা বানু-মনুমিয়ার প্রেমের লোকজপুরাণ ও পদচারণাধন্য পূণ্যতীর্থ ওই জনপদে এতদিন ধরে লুকিয়ে ছিল প্রেম-প্রমোদ-পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। নির্মিত ব্রীজের উভয়পাশের বৈচিত্রময় জীবন ও জীবিকা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অস্থিত্বের লড়াই, জীববৈচিত্র, বিস্তৃত জলপ্রান্তের সুপ্ত সম্ভাবনাকে জাগিয়ে দিয়েছে। নির্মিত এই ব্রীজের দু’পাশে যুক্ত হয়েছে জলনির্ভর পর্যটনের নতুন মাত্রা। চৌফলদন্ডী-খুরুষ্কুল ব্রীজের ফলে জেলার সুবিধাবঞ্চিত বৃহত্তর জনসংখ্যা অধ্যুষিত এলাকা ও অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র ঈদগাঁও থেকে জেলা শহরের দুরত্ব অনেক কমে গেছে। এছাড়া কমে গেছে উপকূলীয় এলাকা চৌফলদন্ডী, পোকখালী, ইসলামাবাদ, ইসলামপুর ও ভারুয়াখালীসহ অপরাপর এলাকার গণমানুষের দীর্ঘপথ পরিভ্রমণ করে জেলা শহরে যাতায়াত করার ঝক্কি-ঝামেলা এবং লবণ, কাঠ, চিংড়ি, নাপ্পি ও নানা জাতের মাছের পোনাসহ পণ্য পরিবহন ব্যবস্থায় অর্জিত হবে যুগান্তকারী সাফল্য। ব্রীজের পার্শ্ববর্তী মহেশখালী চ্যানেল, বাঁকখালী ও বঙ্গোপসাগরের মিলনমুখ অবধি এবং পূর্বে খুরুষ্কুল থেকে চৌফলদন্ডী হয়ে ইসলামপুর পর্যন্ত উপকূলীয় খোসাভাঙ্গা দিগন্তের বিকশিত হবে পর্যটন শিল্প। পর্যটন শিল্প খাতে বৈদেশিক বিপুল বিনিয়োগ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ উপকূলীয় জনপদের জীবনযাত্রায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে এবং চৌফলদন্ডী ব্রীজটি যেন ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য একটি খোরাক বলে মত প্রকাশ করেন স্থানীয় মানুষজন। গতকাল বুধবার বিকেল বেলায় চৌফলদন্ডীর আকর্ষনীয় ব্রীজ দেখতে ভ্রমণে আসা চকরিয়ার কয়েক তরুণের সাথে কথা হলে তারা জানান- সমুদ্র সৈকত নোনাজল খ্যাত কক্সবাজারের সৌন্দর্য্যের পাশাপাশি এ ব্রীজটিও ভ্রমণ পিপাসু লোকজনের মাঝে আনন্দদায়ক খোরাক বটে। এ ব্রীজটি দেখে সত্যি মনজুড়িয়ে যায়। ব্রীজের দু’পাশের চিত্র যেন অতুলনীয়। এ বহুল প্রত্যাশিত চৌফলদন্ডী-খুরুষ্কুল সংযোগ ব্রীজের একপাশে গেঁথে আছে স্বপ্নময় পর্যটন শিল্প বিকাশের সম্ভাবনা আর অন্যপাশে গ্রামীন জনপদের ও নাগরিক মান উন্নয়ন। যা বদলে দিচ্ছে এতদঅঞ্চলের সমৃদ্ধির মানচিত্রও অর্থ-বাণিজ্যের। তবে স্থানীয়দের দাবী, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিলে এ এলাকাটি হতে পারে মিনি পর্যটন স্থান।