খালেদ হোসেন টাপু,রামু :

সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে কক্সবাজারের রামু উপজেলার শারদীয় দূর্গা পূজার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ। আজ মঙ্গলবার মহাষষ্ঠীর মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও দেবীর মুখোন্মোচনের মধ্যদিয়ে স্বাড়ম্বরে শুরু হতে যাচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা। আজ থেকে মন্ডপে মন্ডপে বেজে উঠবে ঢাকঢোল আর কাঁসার শব্দ। ৫ দিনব্যাপী উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে। গত মঙ্গলবার শুভ মহালয়ার মধ্যদিয়ে দেবীদূর্গার এসেছেন মর্ত্যলোকে। এবার রামুতে ১৯ প্রতিমা ও ১১ ঘট পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও গ্রহন করা হয়েছে।

রামুর বিভিন্ন পূজা মন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, রামু জুড়ে এখন বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। শেষ পর্যায়ে কোন কোন মন্ডপে চলছে রংতুলির কাজ, ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্ডপে চলছে উৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি। আবার কোথাও চলছে সাজ-সজ্জা, প্যান্ডেল ডেকোরেশনের কাজ। অপরদিকে কেনা কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। জামা কাপড় তৈরি, কেনা-কাটায় সরগরম বিপণীবিতানগুলোও।

রামু পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর রামু উপজেলায় ১৯টি প্রতিমা ও ১১টি ঘট পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে দেবী দূর্গাকে বরণ করতে নতুন সাঁজে নতুন রূপে হাজারো সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ অধীর আগ্রহে উন্মুখ হয়ে আছে।

রামু উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক তপন মল্লিক বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবারের দুর্গা উৎসব পালনে সব ধরনের প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে। মন্ডপগুলোতে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী কাজ করবে। তিনি বলেন রামুর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে কোন ধরনের শংকা নেই। সরকারে পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সাহায্য সহযোগীতা পাওয়া গেছে এবং প্রতিটি মন্ডপেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি সবাইকে শারদীয়া দূর্গা পূজা শুভেচ্ছা জানান তিনি।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা বলেন, ২৬ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে পাঁচ দিন ব্যাপী শারদীয় দূর্গা উৎসব। পূজাকে সামনে রেখে পূজা উদযাপন পরিষদের সকল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। প্রতিটি মন্ডপে আইন শৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় পূজা কমিটির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবককর্মী নিয়োগ করা হবে। শান্তি পূর্ণ পরিবেশে উৎসব পালনের লক্ষ্যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা জোরদার করার আহবান জানান তিনি।

রামু থানার অফিসার ইনচার্জ একে এম লিয়াকত আলী জানান, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দূর্গা পূজা উপলক্ষ্যে রামু থানা পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পূজা মন্ডপ গুলোকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পূজার শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে পুলিশ প্রশাসন সদা তৎপর থাকবে।

রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহজাহান আলি জানান, রামুতে সর্ব মোট ৩০ টি পূজা মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। তৎমধ্যে ১১টি ঘট পূজা। প্রতিটি পূজা মন্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাতে সুন্দরভাবে পূজা পালন করতে পারে সে লক্ষ্যে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি পূজা মন্ডপের নিজস্ব ভোলান্টিয়ার সদস্যরাও সক্রিয় থাকবে।

তিনি আরো জানান, সম্প্রীতির রামু হিসেবে অনেক সুনাম রয়েছে। এ সুনামকে ধরে রাখতে সকল সম্প্রদায়ের লোকজন সহমর্মিতা ও ধৈর্য ধারণ করতে হবে। তিনি রামুর সম্প্রীতি যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।

এদিকে সোমবার রামুর বিভিন্ন মন্ডপে পুজার শেষ প্রস্তুতি দেখতে পরিদর্শন করেন, রামু উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম। তিনি বলেন, রামুতে শারদীয় দূর্গাপূজা যাতে নির্বিঘেœ পালন করতে পারে সে লক্ষে সকল আইন শৃংখলা বাহিনীকে সজাগ থাকার জন্য বলা হয়েছে। তিনি এবারে শারদীয় দুর্গা পূজা উৎসব সফল করতে সকলের সহযোগীতা কামনা করেন এবং তিনি রামুর সনাতন ধর্মের সবাইকে শারদীয়া দূর্গা পূজা শুভেচ্ছা জানান।