আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনাবাহিনীর হাতে দমন-পীড়নের শিকার হয়ে গত আগস্টের শেষদিক থেকে প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসছিল। তবে গত দুইদিনে তা ব্যাপকহারে কমে গেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা (আইএমও)।

রোববার বিবিসির খবরে আইএমওর বরাত দিয়ে বলা হয়, গত দুই দিনে রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয়ের জন্য আসতে থাকা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা একেরারেই কমে গেছে।

হঠাৎ করেই রোহিঙ্গাদের আসা কমে গেলো কেন তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে বলে ওই খবরে বলা হয়েছে।

তবে জাতিসংঘের হিসাব মতে এরইমধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে অন্তত ৪ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা। আর থেকেই বাংলাদেশে ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রিত ছিল।

আইএমওর মুখপাত্র পেপ্পি সিদ্দিক বলেন, গত দুইদিন ধরে ‘উল্লেখযোগ্য হারে কমসংখ্যক’ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন।

এদিকে, শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানায়, নতুন করে রোহিঙ্গা আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। কক্সবাজার সীমান্তের বিজিবি কমান্ডার এসএম আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের সদস্যরা গত কয়েকদিনে কোনো রোহিঙ্গাকে আসতে দেখেননি।

অন্যদিকে, জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্দি বলেছেন, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনকালে তাদের অবস্থা দেখে তিনি গভীর মর্মাহত। রোহিঙ্গাদের থাকার জন্য উপযুক্ত জাগয়া দেওয়াই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে তিনি মন্তব্য করেন।

গত ২৫ আগস্ট রাখাইনের পুলিশ চৌকিতে হামলা করে রাখাইনের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিদ্রোহরত আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। ওই ঘটনার জেরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক সংস্কার ও জঙ্গিদের মূলোৎপাটনে নামে অভিযানে নামে দেশটির সেনাবাহিনী। শুরু হয় ব্যাপক হত্যা-ধর্ষণ ও নির্যাতন এবং রোহিঙ্গা বসতিতে সেনা ও রাখাইনদের যৌথ অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজ। এতে প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা।

এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন দেশটির নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি। তবে তিনিও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করে সেনা অবস্থানের পক্ষেই তার মনোভাব জানান দিচ্ছেন।