নিউজ ডেস্ক:
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা নির্যাতিত রোহিঙ্গারা যেন ফিরে যেতে না পারে সে জন্য সীমান্তে স্থলমাইন পুঁতে রাখছে দেশটির সেনাবাহিনী। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এ তথ্য জানিয়েছে।

গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে কয়েকটি পুলিশ চেকপোস্টে হামলার ঘটনায় দেশটিতে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু করে সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই ‘শুদ্ধি অভিযান’র নামে রাখাইন রাজ্যে নিরীহ মানুষের ওপর বর্বর নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ ও বাড়িঘরে আগুন দেয়ার মতো ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা চার লাখ ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এখনও বাংলাদেশ সীমান্তে স্থলমাইন পুঁতে রাখছে যা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে মিয়ানমারের কাছে।

গত কয়েক সপ্তাহ থেকে এসব মাইন পোঁতা হচ্ছে একাধিক সূত্র থেকে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দাবি করছে সংস্থাটি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

এতে প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে সংস্থাটি বলছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির সীমান্তের মূল পয়েন্টগুলোতে স্থলমাইন পুঁতেছে। এমনকি উত্তর রাখাইনের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে হামলার আগে সেখানকার রাস্তায়ও মাইন পুঁতে রাখা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, সৈন্যরা যে মাইন পাতছে – সেটাও তারা দেখেছেন। বিশেষ করে বুথিডং, টং পিও লেট ইয়ার সীমান্ত, এমনকি তারা নো ম্যানস ল্যান্ডেও মাইন পুঁতে রাখতে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ল্যান্ডমাইনের আঘাতে এ পর্যন্ত পাঁচজন নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছেন। বলা হচ্ছে, মূলত বাংলাদেশের তমরু সীমান্ত দিয়েই ল্যান্ডমাইনে আহত রোহিঙ্গারা বেশি ঢুকছে।

বিজিবির কক্সবাজারের অধিনায়ক লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান বলেন, শুরুতে কয়েকদিন প্রায় রোজই হাঁটুর নিচ থেকে বা পা উড়ে গেছে এমন মানুষ পেয়েছেন তারা। এই আহতদের দেখে বোঝা গেছে যে, স্থলমাইন বিস্ফোরণে তারা আহত হয়েছেন।

এদিকে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জালালউদ্দিন জানান, তারা হাসপাতালে এ পর্যন্ত শতাধিক আহত রোহিঙ্গার চিকিৎসা দিয়েছেন যাদের মধ্যে অন্তত ১৫/২০ জন স্থলমাইনে আহত হয়েছেন। সূত্র : বিবিসি