মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের হাইস্কুল সড়কটি দীর্ঘ দূই যূগেরও অধিক সময় ধরে সংষ্কার ও উন্নয়ন বঞ্চিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যার ফলে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার মানূষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। দেশে প্রতিনিয়ত সরকার, জনপ্রতিনিধি ও নেতৃত্বের পরিবর্তন হলেও জনবহুল এ সড়কটির উন্নয়ন বৈষম্যের কবলে পড়ে সংস্কার হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার উপকুলীয় ইউনিয়ন মগনামার প্রাচীন এই সড়কটি এক সময় অবিভক্ত ওই ইউনিয়নে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল। কিন্তু কালের পরিক্রমায় সংস্কার না হওয়ায় জনবহুল এ সড়কটি হারিয়ে যেতে বসেছে। এখন সড়কের তিন কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় দুই কিলোমিটার বিলীন হওয়ার পথে। বাকি অবশিষ্ট দেড় কিলোমিটার ব্রিক সলিং থাকলেও সেখানে ইটের কোন অস্তিত্ব নেই বললেও চলে। মগনামা ইউনিয়নের বাইন্যাঘোনা গ্রাম থেকে সওজের সড়ক থেকে সোজা পশ্চিমে বয়ে যাওয়া এ সড়কটি বেংখোয়ালঘোনা মহুরী পাড়া হয়ে কাজ্বী বাজার ফুলতলা সড়কের মগনামা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিকট হয়ে মিলিত হয়েছে এ হাইস্কুল সড়কটি। সংস্কার হলে এতদ:ঞ্চলের জন্য বর্তমান সময়ের সবচেয়ে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হতে পারত সড়কটি। কিন্তু উন্নয়নের কোন ছোঁয়া না লাগায় বিভিন্ন যানবাহন চলাচলতো দুরের কথা লোকজন পায়ে হেঁটে চলাচল করা দুষ্কর হয়েছে বিধ্বস্থ সড়কটি দিয়ে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মগনামা ইউনিয়নের দক্ষিন মগনামা মধ্য মগনামা পশ্চিম মগনামা ও পুর্ব মগনামার অন্তত ২০/৩০টি লোকালয়ের হাজার হাজার মানুষ নিত্যদিনের যোগাযোগের সেতু বন্ধন এ হাইস্কুল সড়কটি। কিন্তু বর্তমানে মৃত সড়ক বলা যায় একে। ১৯৯১সালের প্রলয়ংকারী ঘুর্ণিঝড় ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের পর এ সড়কটির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এলজিইডি ওই সড়কটি ১৯৯২সালে মহুরী পাড়া সংযোগ সড়েকের মাথায় পৌনে এক কিলোমিটার এবং পূর্ব মগনামা বাইন্যাঘোনা এলাকার বরইতলী-মগনামা সংযোগ সড়কের মাথায় প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার ব্রীক সলিং দ্বারা পাকাকরন কাজ করেছিল। কিš ‘ওই সড়কের দেড় কিলোমিটার ব্রিক সলিং হলেও মাঝখানে অবশিষ্ট অংশ কাচা থেকে যায়। ৯১ এর সাইক্লোনের পর দুর্গত এলাকায় ত্রান তৎপরতা জোরদার করতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সে সময় মগনামায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কেবল মাত্র এ সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল। সে সময় হাইস্কুল থেকে মুহুরী পাড়া হয়ে রুপাই খাল অংশ পর্যান্ত দেড় কিলোমিটার ব্রিকদ্বারা সংস্কার হয়েছে। অপর অংশ আর হয়নি।

এদিকে ওই দেড় কিলোমিটার পুরোটায় ইট না থাকায় কাচা সড়কে পরিনত হয়েছে। এক সময় এ সড়ক দিয়ে এই এলাকার উৎপাদিত লবন ও মৎস্য সম্পদ গাড়ি যোগে পরিবহন হত। এখন সড়কটি বিলিন হওয়ায় সওজের সড়কে আসতে প্রায় দুই কিলোমিটার বিপরীত দিক দিয়ে ঘুরে আসতে হয়।

মগনামা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড় এর ইউপি সদস্য নুরুল আজিম বলেন, ‘গ্রামীন অবকাঠামোর মগনামার এ সড়কটি পুরো উপজেলায় এক সময়ে অত্যন্ত প্রসিদ্ধ ছিল। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত যুগেও এটির সংস্কার শুধু বৈষম্যের কারনে থমকে রয়েছে। গত কয়েক বছর পূর্বে সড়কটি সংস্কারের জন্য এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সড়কটি পরিদর্শন করে গিয়েছেন। এরপর এলজিইডি পেকুয়া অফিস থেকে এর পরিমাপ করা হয়েছে। এসব দেখে স্থানীয়রা মনে করেছিলেন এ সড়কটির ভাগ্য খুলে যাবে। কিন্তু আগের মতো থেকে যায়।

এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু সড়কটির উন্নয়ন অবহেলা বৈষম্যের কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, মগনামা হাইস্কুল সড়কটির সংস্কারের জন্য বিগত অর্থ বছর থেকে এর প্রাক্কালন সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনো অনুমোদন হয়ে আসেনি। তবুও তিনি চেষ্টা চালঅচ্ছেন।

এ ব্যপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি পেকুয়ার প্রকৌশলী হারু কুমার পাল জানান মগনামাসহ পেকুয়ার বেশকিছু জনগুরুত্বপুর্ন সড়ক সংস্কারের জন্য ষ্টেমিইট উর্ধ্বতন মহলে প্রেরন করা হয়েছে। তবে এখনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।