পর্নোগ্রাফির অভিযোগে দেশের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী কুসুম শিকদারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রোববার দুপুরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুন্নাহার ইয়াসমিনের আদালতে মামলাটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার নাজমুল আহসান।

আদালত মামলাটি গ্রহণ করে রমনা থানাকে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলায় কুসুম সিকদার ছাড়াও সহ-মডেল খালেদ হোসাইন সুজন, ভিডিওটির পরিচালক শুভ্র খান ও শ্রাবণী এবং ভিডিও প্রকাশক প্রতিষ্ঠান বঙ্গ’র (স্টেলার ডিজিটাল লি.) ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়।

মামলা প্রসঙ্গে বাদী খন্দকার নাজমুল আহসান জানান, সুস্থ সংস্কৃতি ও শুদ্ধ সঙ্গীতের জন্যই মামলাটি করা হয়। আমি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেইনি। মিউজিক ভিডিওতে কাটপিসের মতো অপ্রাসঙ্গিক ও অহেতুক রগরগে যৌনতার দৃশ্য অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি।

প্রসঙ্গত, গত ৩ আগস্ট ‘বঙ্গ’ নামের প্রতিষ্ঠানের ইউটিউব চ্যানেল ‘বঙ্গবিডি’ থেকে অভিনেত্রী কুসুম শিকদারের ‘নেশা’ শিরোনামে একটি মিউজিক ভিডিও প্রকাশ হয়।

ভিডিওতে কুসুম শিকদারের খোলামেলা ও আবেদনময়ী উপস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে ও সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। গত ১৩ আগস্ট গানটির সব বৈধ-অবৈধ ভিডিও ও টিজার ইউটিউব থেকে সরানোর জন্য বাদীর পক্ষে আইনজীবী আফতাব উদ্দিন ছিদ্দিকী রাগিব আইনি নোটিশ দেন। কিন্তু গানটি না সরানোয় রোববার পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২-এর ৮ ধারায় মামলা করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, নেশা ভিডিওটি শুরুই হয়, ‘চোখে আমার তোমার নেশা। শ্বাসে আমার তোমার নেশা। সারা দেহে তোমার নেশা। রগে রগে তোমার নেশা। তোমায় পান করে… জ্ঞান হারাই, হই মাতাল’- এমন উত্তেজক কথা দিয়ে।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, মূল গানটি বিচ্ছেদ ধাঁচের। কিন্তু দৃশ্যায়নে অহেতুক ও অপ্রাসিঙ্গকভাবে জুড়ে দেয়া হয়েছে একের পর এক আপত্তিকর, যৌন উত্তেজক ও অশ্লীল দৃশ্য।

ভিডিওটিতে পাঁচটি শাওয়ারের দৃশ্য, সাতটি সুইমিং পুলের দৃশ্য, একটি শয্যাদৃশ্য ও তিনটি চুম্বনের দৃশ্যসহ অনেক শিল্পগুণবর্জিত যৌন উত্তেজক ও অশ্লীল অভিনয়, অঙ্গভঙ্গি, নগ্ন বা অর্ধনগ্ন দৃশ্য রয়েছে। যার সঙ্গে গানের থিম বা বক্তব্যের কোনো মিল বা সংযোগ নেই।

দ্রুত জনপ্রিয় করার সস্তা রাস্তা হিসেবে কাটপিসের মতো ওই সব দৃশ্য সংযোজন করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওটির কভার ছবিও অত্যন্ত অশ্লীল ও অরুচিকর। এ ধরনের যৌন উত্তেজক, কাটপিস স্টাইল মিউজিক ভিডিও কেবল মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি নয়; গোটা সমাজ, পরিবার ও রাষ্ট্রের জন্য অশনিসংকেত বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।