বিনোদন ডেস্ক:
তিন দশকের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার ইতি টানছেন ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় খল অভিনেতা মিশা সওদাগর। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তিনি আর অভিনয় করবেন না।

দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাক্ষাতকারে মিশা সওদাগর এমন তথ্য জানিয়েছে। তিনি বলেন, আমি অনেক ভেবেচিন্তে কথাগুলো বলছি, অভিনয় ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চলচ্চিত্রে অনেক দিন তো হলো, এবার নিজের জন্য একটু সময় দিতে চাই। মহরত, শুটিং, ডাবিং, প্রিমিয়ার -এসব করেই তো জীবনের অনেকটা সময় পার করে দিয়েছি।

মিশা আরও বলেন, আমি টাকার জন্য বাঁচতে চাই না, নিজের জন্য বাঁচতে চাই। একই ধরনের চরিত্র, প্রায় একই ধরনের সংলাপ। আর কত? কোনো বৈচিত্র্য নেই। বৈচিত্র্যহীন কাজ করতে আর চাই না। চলচ্চিত্রকে আর পেশা হিসেবে দেখব না। যদি আমার বয়স আর সময় বুঝে কেউ তেমন কোনো চরিত্র নিয়ে আসে, আর তা যদি খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে তেমন কাজ হয়তো মাঝে মাঝে করব। কিন্তু পেশা হিসেবে আর নয়।

হাতে থাকা ছবিগুলোর কাজ এই বছরেই শেষ করবেন বলে জানান মিশা। তিনি বলেন, কারও সঙ্গে আমার কোনো বৈরিতা (শত্রুতা) নেই। এ সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত। আমি চলচ্চিত্র ছাড়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেটি একেবারেই চূড়ান্ত।

অভিনয় ছাড়লেও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সঙ্গে থাকবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, আমি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি। সংগঠনে পর্যাপ্ত সময় দেব। চলচ্চিত্রের গুণগত পরিবর্তনের জন্য কাজ করব।

এ বিষয়ে ঢাকাই ছবির এ খল নায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘আমার যা বলার সব ওখানেই (সাক্ষাতকার) বলে দিয়েছি। আমি এ সিদ্ধান্ত ভেবে চিন্তেই নিয়েছি।’

১৯৮৬ সাল থেকে মিশা সওদাগর চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। এফডিসি আয়োজিত নতুন মুখ কার্যক্রমে নির্বাচিত হন তিনি। ছটকু আহমেদ পরিচালিত চেতনা ছবিতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন ১৯৯০ সালে। এরপর অমরসঙ্গী ছবিতেও তিনি নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন, কিন্তু দুটোর একটিতেও সাফল্য পাননি।

পরবর্তীতে বিভিন্ন পরিচালক তাকে খল চরিত্রে অভিনয়ের পরামর্শ দেন এবং তমিজ উদ্দিন রিজভীর ‘আশা ভালোবাসা’ ছবিতে ভিলেন চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। সেখান থেকেই তার সাফল্য শুরু। এরপর প্রায় ৯০০ ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন এ খল নায়ক।

উল্লেখ্য, চলচ্চিত্রের উন্নয়নের দোহাই দিয়ে নামকাওয়াস্তে যৌথ প্রযোজনায় ছবি বানানোর ঘোর বিরোধী ঢাকাই ছবির দাপুটে খল অভিনেতা মিশা সওদাগর।

গত ২৬ জানুয়ারি শিল্পী সমিতির নির্বাচন ঘিরে ‘নীতিগতভাবে আমরা এক, চলচ্চিত্র শিল্পীদের মিলনমেলা ও মতবিনিময়’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এখন যৌথ প্রযোজনার নামে যা হচ্ছে তা আমাদের চলচ্চিত্রের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এটা চলচ্চিত্রের কফিনে পেরেক ঠুকে দেয়ার মতোই। যৌথ প্রযোজনার যে নিয়ম তা এখন কেউই মানছে না।