সাইফুল ইসলাম:

২২ দিনেও উদ্ধার হয়নি অপহৃত কলেজ ছাত্রী শিরিন। এতে পরিবারের মাঝে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এই অপহরণের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কিছুদিন আগে মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলার তিন আসামীকে গত বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) আটক করেছে পুলিশ। কক্সবাজার শহর ও চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে পুলিশ ভিকটিম সম্পর্কে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ও সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক আখতারুজ্জামান। যার মামলা নং-৮০০/২০১৭ইং।

আটককৃতরা হলেন মামলার এজাহারভুক্ত আসামী কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালী পশ্চিম পাড়া এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে তারেক (২২), তাঁর ভাই আরিফ (২৯) ও শহরের তারাবনিয়ারছড়া এলাকার অপু শর্মার স্ত্রী মিনু শর্মা।

সূত্রমতে, গত ২২দিন আগে কলেজে যাওয়ার পথে শহরের বিমান বন্দর সড়কের শ্যামলী পরিবহণের কাউন্টার এলাকা থেকে তাকে জোরপূর্বক অপহরণ করা হয়। সে কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের এইচএসি প্রথম বর্ষের (বিজ্ঞান বিভাগ) ছাত্রী শিরিন। পরে এঘটনায় পরিবারের পক্ষ কক্সবাজার সদর থানায় কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়। দীর্ঘদিনেও উদ্ধার না হওয়ায় অপহৃতের পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার শহরের তারাবনিয়ার ছাড়া এলাকার মোহাম্মদ নুরুল ইসলামের কলেজ পড়–য়া কন্যা আফরোজা আক্তার শিরিন (১৫) কে কলেজে যাওয়া আসার পথে সদর উপজেলার ভারুয়াখালী পশ্চিম পাড়া এলাকার হাবিবুর রহমানের পুুত্র আশিক(২৪) প্রায় সময় উত্যক্ত করতো। বিষয়টি ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিকট অভিযোগ করা হলে আশিক ক্ষেপে যায়। তবে এলাকার মানুষের তৎপরতার ফলে অভিযোক্ত ছেলেটি বেশ কিছু সময় এলাকা ছাড়া হয়। কিন্তু এলাকা ছাড়ার প্রতিশোধ নিতে গত ১৭ আগস্ট শিরিন কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে ১০/১২ জন লোকা তাকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।

অভিযোগে দাবি করা হয় শহরের বিমান বন্দর সড়কের শ্যামলী পরিবহণের কাউন্টার এলাকা থেকে তাকে জোরপূর্বক অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় একই দিন কক্সবাজার মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু অভিযোগের ২২দিন অতিবাহিত হলেও এখনো কলেজ ছাত্রী শিরিনকে উদ্ধার করতে পারেনি মডেল থানার পুলিশ।

অপহৃতের ভাই অভিযোগকারী নুরুল মোমেন জুসেফ জানান, অপহরণের সাথে জড়িত ৩ জনকে আটক করা হলেও অপহৃত আমার বোনকে এখনো পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়নি। উক্ত আসামীগন তারাবনিয়ারছড়ার মাদক ব্যবসায়ী মিনু জেল হাজতে যাওয়ার পর হতে মামলার বাদিকে বিভিন্নভাবে সন্ত্রাসীরা হত্যা করবে বলে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। মামলার বাদি ও পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আশিক নামে এক মাদকাসক্ত ছেলে আমার বোনকে কলেজে যাওয়ার সময় উত্যক্ত করতো। এমনকি রাস্তার পাশে দাড়িয়ে প্রেমের প্রস্তাব দিতো প্রতিনিয়তে। কিন্তু আমার বোন তাকে পাত্তা দিত না বিধায় সে আমার বোনকে অপহরণ করেছে। তনি বলেন, ছেলেটি পুলিশের তালিকাভূক্ত চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মিনুর বাড়িতে ভাই পরিচয়ে থাকতো। দ্রুত আমার বোনকে উদ্ধার করে অপহরণকারীদের আইনের আওতায় আনা জন্য প্রশাসনের নিকট দাবি জানাচ্ছি।

উক্ত মামলার তদন্তকারী কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আখতারুজ্জামান জানান, ওই অপহরণের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই ৩ জন আসমীকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। অপহৃত কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধার বাকি আসামীদেরকে ধরার চেষ্টা চলছে।