উত্তর আরাকানে ১১ দিনে সহিংসতায় ২৬৭৪৭ জন বাস্তুচ্যুত, ৫৯ গ্রামের ৬৮৪২ বাড়ি ভস্মিভূত, ৮টি ব্রীজ ধ্বংস, ৩৯৭ ‘সন্ত্রাসী’ হত্যা: দাবী সুচি সরকারের

বিশেষ প্রতিবেদক , সিবিএন :

রোহিঙ্গাদের এখনও ‘বাঙালী’ নামেই অভিহিত করছে মিয়ানমার সরকার। গত ২৫ আগস্ট সেদেশের ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনাঘাঁটিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার ঘটনায় ‘বাঙ্গালী সন্ত্রাসী’দের অভিযুক্ত করে সূচির সরকার। এ ঘটনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হলে এর চারদিন পর ২৯ আগস্ট সন্ধ্যা থেকে সেদেশের সরকারের তথ্য বিভাগ রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদেরকে ‘আরসা সন্ত্রাসী’ নামে অভিহিত করে। কিন্তু গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মিয়ানমার সরকারের তথ্য কমিটি কর্তৃক জারি করা সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতেও রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালী’ নামে অভিহিত করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার মিয়ানমারের জনপ্রিয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যম মিজিমায় সুচি সরকারের তথ্য কমিটির বরাত দিয়ে প্রকাশিত উক্ত সংবাদে মিয়ানমারের উত্তর আরাকানে (রাখাইন এস্টেট) গত ২৫ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১ দিনের সহিংসতায় ৫৯ গ্রামের ৬৮৪২ বাড়ি ভস্মিভূত, ৮টি ব্রীজ ধ্বংস ও সেনা অভিযানে ৩৯৭ জন ‘আরসা সন্ত্রাসী’ হত্যার দাবী করা হয়। এছাড়া এই সময়ে ‘আরসা সন্ত্রাসী’দের সাথে ৯৭টি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছেও বলে দাবী করা হয়। যারমধ্যে ১৩টি নিরাপত্তা বাহিনী ও দুটি সরকারী চাকরীজীবীদের সাথে, বাকী সংঘর্ষ হয় বেসামরিক নাগরিকদের সাথে। এরমধ্যে ১৪টি ‘স্থানীয়’ নাগরিকদের সাথে, ৭টি করে ‘হিন্দু’ ও ‘বাঙালী’ বাসিন্দাদের সাথে। আর এসব ঘটনায় নিরাপত্তাবাহিনীর ১৫ জন সদস্য, ৩ জন অন্যান্য সরকারী চাকরীজীবী ও চারজন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হয় বলে দাবী করা হয় মিয়ানমার সরকারের উক্ত বিবৃতিতে। এসময় মাত্র ২৬৭৪৭ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে দাবী করা হয়।

মংদুতে পুড়িয়ে দেওয়া ঘরবাড়ির ধ্বংসস্তূপ। ছবিটি ৩১ আগস্ট তোলা। ছবি: রয়টার্স

অথচ জাতিসংঘ ও বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজন গত ২৫ আগস্ট থেকে এদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থী আসার সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ বলে ধারণা করছে।