এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া

চকরিয়ায় ঈদের ছুটিতে বান্ধবীর বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার পথে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়–য়া এক শিশু ছাত্রীকে (১১) তুলে নিয়ে আবাসিক হোটেলে আটকে রেখে জোরর্পুবক ধর্ষণ করা হয়েছে। ঘটনাটি জানতে পেরে চকরিয়া থানার ওসির নির্দেশে থানার এএসআই জুয়েল রায় এর নেতৃত্বে পুলিশের একটিদল তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ধর্ষক হুমায়ুন কবিরকে (২২) গ্রেফতার করেছে। সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত সময়ে চকরিয়া শহরে অবস্থিত আল রহমত নামের একটি আবাসিক হোটেলের ভেতরে ঘটেছে এ ধর্ষণের ঘটনা। গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ ভিকটিম ওই ছাত্রীকে চকরিয়া পৌরবাস টার্মিনালস্থ বেসরকারী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান চকরিয়া সিটি হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করেছে।

এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে ভিকটিম শিশুটির মামী হামিদা বেগম বাদি হয়ে গ্রেফতারকৃত ধর্ষককে আসামি করে চকরিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি মামলা রুজু করেছেন।

মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ গ্রেফতারকৃত আসামি হুমায়ুনকে আদালতের মাধ্যমে গতকাল বিকালে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। অপরদিকে গুরুতর আহত ওই ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসা এবং শাররীক পরীক্ষার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠিয়েছে। গ্রেফতারকৃত ধর্ষক হুমায়ুন উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের সাবানঘাটা এলাকার বদিউল আলমের ছেলে।

চকরিয়া থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) জুয়েল রায় ভিকটিম শিশুটির পরিবারের বরাত দিয়ে বলেন, বাবা রেজাউল করিম মারা যাওয়ার পর মা দিলোয়ারা বেগম জীবিকার তাগিদে চট্রগ্রামে পোশাক কারখানায় চাকুরী নেন। সেই সুবাদে শিশুটি মামার বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করে আসছে। ঘটনার দিন সোমবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে ছোট্ট মামাতো বোনকে সাথে নিয়ে হারবাং আশ্রয়ন প্রকল্পস্থ বান্ধবীর বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন শিশু ছাত্রীটি। ওইসময় রাস্তায় একাপেয়ে লম্পট যুবক হুমায়ুন ফুসলিয়ে তাদেরকে গাড়িতে তুলে চকরিয়া সদরে নিয়ে আসে।

তিনি বলেন, এরপর তাদেরকে (দুই শিশুকে) তুলা হয় চকরিয়া শহরে অবস্থিত আল রহমত নামের আবাসিক হোটেলের কক্ষে। সেখানে সকাল ১০টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত আটকে রেখে শিশু ছাত্রীকে ধর্ষণ করে হুমায়ুন। কয়েকদফা ধর্ষণের কারনে শিশুটির প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হলে ধর্ষক হুমায়ুন প্রথমে তাকে (শিশুটিকে) চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বিষয়টি পুলিশ কেইচ অনুমান করতে পেরে চিকিৎসা দেয়নি। এরপর তাকে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয় চকরিয়া সিটি হাসপাতালে।

এএসআই জুয়েল রায় আরো বলেন, সিটি হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা কৌশলে শিশুটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করে কৌশলে ধর্ষক ওই যুবককে আটকে রাখে। এরপর ঘটনার খবর পেয়ে সেখান থেকে ধর্ষক হুমায়ুনকে গ্রেফতার ও ভিকটিম শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মো.মিজানুর রহমান বলেন, শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনাটি জানতে পেরে তাৎক্ষনিক চকরিয়া সিটি হাসপাতালে পুলিশের একটি দলকে পাঠানো হয়। পরে পুলিশ সেখান থেকে অভিযুক্ত ধর্ষককে গ্রেফতার ও গুরুতর অবস্থায় ভিকটিম শিশুটিকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শিশুটির মামী হামিদা বেগম বাদি হয়ে গতকাল থানায় একটি মামলা রুজু করেছেন।

মামলার প্রেক্ষিতে গ্রেফতারকৃত আসামি হুমায়ুনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। অপরদিকে গুরুতর আহত ওই ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসা এবং শাররীক পরীক্ষার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ধর্ষণের ঘটনাস্থল যেহেতু আবাসিক হোটেল সেহেতু ঘটনার সাথে ধর্ষককে রুম ভাড়া দিয়ে সহযোগিতা করায় সমাণ অপরাধ করেছেন হোটেলটির মালিক ও ম্যানেজার। ঘটনার দিন হোটেলটি পরিচালনায় যাঁরা ছিলেন তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকেও অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।