নুরুল কবির,সীমান্ত থেকে ফিরে :

আর মাত্র একদিন পরই ঈদ কিন্তু ঈদের কোন আনন্দ নেই বান্দরবান নাইক্ষ্যং ছড়ি সীমান্তের ছয়টি নো ম্যান্স ল্যান্ডে বসবাসকারী হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের।মায়ানমার মিলিটারির অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচার জন্য তারা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তের ছয়টি নো ম্যান্স ল্যান্ডে। চোখে মুখে শুধু বাঁচার আকুতি।মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শুরু হওয়া গোলযোগ বন্ধ না হওয়ায় রোহিঙ্গাদের আগমন এখনো বন্ধ হচ্ছে না। এখনো বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুনধুম, তুমব্রু,চাকঢালা,আশারতলীসহ সীমান্তে প্রতিদিনই জড়ো হচ্ছে শত শত রোহিঙ্গা। সীমান্তের জিরো লাইনের ছোট ছোট টিলা ও পাহাড়গুলোতে ঝুপড়ি ঘর তৈরী করে সেখানে বসবাস শুরু করেছে কয়েক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা। আর এসব রোহিঙ্গাদের দেখতে প্রতিদিনই শুকনো খাবার নিয়ে আশপাশের এলাকা থেকে ছুটে আসছে শত শত মানুষ। আর এর ফলে এখনো পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের খাবার সংকট দেখা না দিলেও এবারের কোরবারীর ঈদ করার সুযোগ না থাকায় আনন্দ নেই শিশুদের মনে। এদিকে বুধবার সকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা সীমান্তের বড় ছন খোলা এলাকা পরিদর্শন করেছেন।নো ম্যান্স ল্যান্ডে বসবাসকারী কয়েকজন রোহিঙ্গা জানালেন ঈদ আনন্দ নয় বেঁচে থাকাটাই এখন অনেক বেশী আনন্দের।চোখের সামনে নিজের মেয়ের উপর নির্যাতন অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচার জন্য পালিয়ে এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছি র্বামা ও ঢুকতে পারছি না বাংলাদেশেও ঢুকতে পারছি না এর একটা সমাধান করে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা দিলে আমরা খুশি হবো।আর এক রোহিঙ্গা আমেনা বেগম ঘটনার র্বণনা দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি বলেন আমার স্বামীকে তারা জবাই করে মেরে ফেলেন প্রাণে বাঁচার জন্য ছোট ছোট ছেলে মেয়েকে নিয়ে এখানে পালিযে এসেছি।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার মুসলমান রোহিঙ্গা সীমান্তের জিরো লাইনের ছোট ছোট টিলা ও পাহাড়গুলোতে ঝুপড়ি ঘর তৈরী করে বসবাস শুরু করেছে। তাদের দেখতে প্রতিদিনই শতশত মানুষ শুকনো খাবার নিয়ে ছুটে আসছে । এতে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের খাবারের সংকট না থাকলেও ঈদ করার কোন সুযোগ না থাকায় আনন্দ নেই শিশুদের মনে।এদিকে রোহিঙ্গাদের সহায়তা করা হলেও তারা যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রেখেছে প্রশাসন।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, তসলিম ইকবাল চৌধুরী বলেন এখানে শুধু বাঙ্গালীরাই নয়, পাহাড়ীরাও খাবার দিচ্ছে। তাদের যাতে খাবারের অসুবিধা না হয় সে জন্য মানবিক দৃষ্টি বিচেনায় যতটুকু সম্ভব তাদের সহায়তা করা হচ্ছে পাশাপাশি তারা যাতে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারেও সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বিজিবি, উপ অধিনায়ক মেজর এম.আশরাফ আলী বলেন বাংলাদেশে যেন কোন অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটতে না পারে সেজন্য ৫দিন ধরে পাহাড়া দিচ্ছে বিজিবি। ধারনা করা হচ্ছে নাইক্ষংছড়ি সীমান্তে ৬টি পয়ন্টে প্রায় ১০হাজারও বেশি রোহিঙ্গা জড়ো হয়েছে।

বান্দরবান পুলিশ সুপার, সঞ্জিত কুমার রায় জানান, সীমান্তে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটার জন্য বিজিবির পাশাপাশি পুলিশের পাহাড়া ও টহল সব কিছুই বাড়ানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, বাংলাদেশের কোন সমস্যা নয়, যেহেতু এটা আর্ন্তজাতিক দুই দেশের সর্ম্পকের বিষয়, সরকার সরকারের তরফ থেকে মিয়ানমারের সাথে যোগাযোগ করছে। রোহিঙ্গা নারী পুরুষরা যেন এদেশে নির্যাতিত না হয় তার জন্য বিশেষ নজর দেবে প্রশাসন, এমনটাই আশা করছে এলাকাবাসী।