রাষ্ট্র নিজেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র নিজেই সন্ত্রাস করছে। তারা নিজেরাই অপরাধ করছে।’ বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকালে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে নয়া পল্টনে দলের কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গুম হওয়া ব্যক্তিরা কোথায় গেলেন, তা সরকারকেই বলতে হবে। এসব ঘটনার জন্য সরকারই দায়ী।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনের ফুটেজ ও দৈনিক পত্রিকার খবরের কাটিং ব্যবহার করে তৈরি করা গুম-খুন হওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে একটি প্রামাণ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। বিএনপি মহাসচিব জানান, গুমের শিকার ব্যক্তিদের ওপর তৈরি করা এই ভিডিওচিত্র জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে গুম-খুনের ঘটনার উদ্দেশ্যই হচ্ছে দেশে ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করা। অন্যরা যেন স্বাধীনভাবে কাজ না করতে পারে, সেজন্য ভীতি তৈরি করছে সরকার।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল দাবি করেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে একটিও গুমের ঘটনা ঘটেনি। তবে ওই সময়ে দুয়েকটি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর তথ্য অনুযায়ী, গত ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সারাদেশে ৩৮৪ জন গুমের শিকার হয়েছেন। আইন ও সালিস কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, একই সময়ে গুম হয়েছেন ৫৩৯ জন। কিন্তু প্রকৃত সংখ্যাটি আরও বেশি। সেটি এক হাজারেরও বেশি। কিছু ঘটনার তদন্ত চলছে।’
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, গত ২৭ আগস্ট নয়া পল্টনের বাসা থেকে কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান নিখোঁজ হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সন্দেহ করা হচ্ছে, তাকেও একই পরিণতি (গুম) বরণ করতে হতে পারে।’
বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রমুখ।