ডেস্ক নিউজ:

জিতবে কে? বাংলাদেশ না অস্ট্রেলিয়া, শেষ হাসি কার, মুশফিক, সাকিব, মিরাজের, নাকি স্মিথ-ওয়ার্নারের। কোরবানির ঈদ আসন্ন, ঘরে ঘরে কোরবানির প্রস্তুতি, আপনজনের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি ফেরার তাড়া, এ মধ্যেও অগণিত ক্রিকেটপ্রেমির চোখ মিরপুরের দিকে। অনেক কৌতূহলী প্রশ্ন, নানা গুঞ্জন, আর এর সব কিছুরই জবাব হয়তো আজই মিলবে। বৃষ্টি বাঁধা না দিলে বুধবার চতুর্থ দিনই ভাগ্য নির্ধারিত হবে মিরপুর টেস্টের।

আজকের হিসেব পানির মত সহজ। বাংলাদেশের দরকার ৮ উইকেট আর অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ১৫৬ রানের। মিরপুর স্টেডিয়ামের যা চরিত্র, গত তিনদিন উইকেট যা যেমন ব্যবহার করেছে তাতে১৫৬ রান কম নয়। প্রথম ইনিংসে তামিম-সাকিবের ১৫৫ রানের জুটির পরও বাংলাদেশ অলআউট হয়েছিল ২৬০ রানে।

Bisk Club
এখন খালি চোখে অস্ট্রেলিয়ার পাল্লা ভারী মনে হলেও বাংলাদেশের সম্ভাবনাও কিন্তু কম নয়। সাকিব, মিরাজ, লিওন ও অ্যাগার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন এই পিচে বল লাটিমের মত ঘোরে। সাকিব একাই প্রথম ইনিংসে অজি শিবিরে ধ্বস নামিয়ে দিয়েছিলেন। মিরাজ কম যাননি। ওয়ার্নার-স্মিথের মূল্যবান উইকেট দুটি এই তরুণ স্পিনারের পকেটে জমা পড়েছিল। আজ (বুধবার) ভাগ্য নির্ধারণই দিনে মিরাজের কাছ থেকে অমন স্পেলই চায় বাংলাদেশ।

তৃতীয় দিনের শুরুতেও উইকেটের পাগলাটে ভাব ছিল। স্বাভাবিকের চেয়ে বল অনেক বেশি টার্ন করেছে, বল বেশি লাফিয়ে উঠেছে, নিচুও হয়েছে, তাই তামিম উইকেটকে আনপ্রেডিটেবল বলেছেন। ইতিহাসও আশার বাণী শোনাচ্ছে। এই মাঠেই মাত্র দশ মাস আগে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১০৮ রানের অবিস্মরণীয় জয়ে রেকর্ড আছে। সে জয়ের রূপকার সাকিব-মিরাজ। ওই ম্যাচেও ইংলিশদের লক্ষ্য খুব বড় ছিল না। জিততে করতে হতো ২৭৩ রান। দুই ইংলিশ ওপেনার ডাকেট আর কুক এক সেশনে স্বাগতিকদের হতাশায় দুবিয়ে ১০০ রান তুলেছিলেন বিনা উইকেটে। তারপর হঠাৎ সাকিব-মিরাজের স্পিন ভেলকি। পরের সেশনে নাটকীয় ভাবে দৃশ্যপট বদল, ৬৪ রানেই পতন ঘটে ইংলিশদের দশ উইকেটের।

আজ এমনই এক স্পিন ভেলকির অপেক্ষায় বাংলাদেশ সমর্থকরা। যদিও ওয়ার্নার-স্মিথ এখনো ক্রিজে। স্বাগতিকদের যত চিন্তা তাদের নিয়েই। চাপের মুখে স্পাত দৃঢ়টায় মাথা তুলে দাঁড়ানোর পর্যাপ্ত সামর্থ্য আছে এ দুই ব্যাটসম্যানের। উপমহাদেশে ওয়ার্নারের রেকর্ড মোটেও ভালো না।

কিন্তু স্মিথ স্লো ও টার্নিং উইকেটেও ওস্তাদ। এই তো গত ফেব্রুয়ারি মার্চে ভারতের মাটিতে অশ্বিন-জাদেজাদের বিরুদ্ধে স্পিন ট্র্যাকে কি লড়াইটা না করেছেন। চার টেস্টে প্রায় ৫০০ রান (৪৯৯) আর তিনটি সেঞ্চুরি তার প্রমাণ। খানিক দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের। ওয়ার্নার-স্মিথ দুইজন সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সে সুযোগ কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি। ১৪ রানে জীবন পাওয়া ওয়ার্নার আর ০ ও ৩ রানে বেঁচে যাওয়া স্মিথ এখনও উইকেটে। ২৮ রানে ২ উইকেট পতনের পর তৃতীয় উইকেটে ৮১ রানের জুটি এটাই আশা জাগাচ্ছে অস্ট্রেলিয়াকে। বিপরীতে শঙ্কিত করে তুলেছে টাইগার ভক্তদের।

আজ সকালে এই জুটি দ্রুত ভেঙে দিতে পারলেই শঙ্কার কালো মেঘ কেটে আশার সূর্য উঠবে বাংলাদেশ শিবিরে। স্মিথ-ওয়ার্নারের জুটি বড় হলে সম্ভাবনার সূর্য হতাশার অন্ধকারে ঢাকা পড়বে, তখন ঘুরে ফিরে ১১ বছর আগের সেই আফসোস অনুশনাই সঙ্গী হবে। ২০০৬ সালে ফতুল্লায় ৩০৬ রানের লিডেও শেষ রক্ষা হয়নি। সেবার হাবিবুল বাশার বাহিনীর স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিলেন তখনকার অজি অধিনায়ক রিকি পন্টিং। এবার কী হয় সেটাই দেখার বিষয়?