অলি উল্লাহ রনি, চকরিয়া:
গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে মহিউদ্দিন সাহেল (১৫) নামের চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের ৮ম শ্রেণির এক ছাত্র। শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে স্বজন ও প্রতিবেশিরা বাসার দরজা ভেঙ্গে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে। এসময় আত্মহত্যার উপকরণ হিসেবে চিরকুট কিংবা কোন আলামত পাওয়া যায়নি দাবি উদ্ধারকারীদের।  তারা পৌর এলাকার গ্রামীণ ব্যাংক সংলগ্ন বাসায় ভাড়া থাকতেন।

উপজেলার কৈয়ারবিলের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী জসীম উদ্দিন মৃত ছাত্রের পিতা। প্রতিবেশিরা জানিয়েছে, তারা ওই বাসায় ভাড়ায় থাকতো। ধারণা করা হচ্ছে, সপ্তাহ খানেক আগে (৮আগস্ট’১৭) মাতা পারভীন আক্তার হজ্বের উদ্দেশ্যে সৌদিআরব গমণ করেন। আর দীর্ঘদিন থেকে জীবিকার তাগিদে সৌদিতে অবস্থান করছিলেন ছেলেটির পিতা জসীম উদ্দিন। সেই সুযোগে বাসায় কেউ না থাকায়, কোন এক পূঞ্জিভুত ক্ষোভ থেকে অভিমান করে শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন সাহেল আত্মহত্যার ঘটনা সংঘটিত করে।

এদিকে শনিবার সকাল ৮টায় চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের ছাত্র সাহেলকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে স্বজনরা উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখানেই কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তার সহপাটিসহ বিদ্যাপীঠের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জড়ো থাকে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে। এসময় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তরফ থেকে লাশ ময়না তদন্তের প্রক্রিয়া শুরু করলে বিক্ষোভ করতে থাকে কোরক বিদ্যাপীঠের ছেলে শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, সহপাটি সাহেলকে মর্গে নিয়ে গেলে টানা-হেছড়া করে কষ্ট দিবে ময়না তদন্তকারীরা। তাই সাহেলের লাশ ময়না তদন্ত ছাড়াই সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে দাফনের ব্যবস্থা করা হোক।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক নুরুল আখের জানান, শিক্ষার্থীরা ময়না তদন্তের পক্ষে নয়। তারা মনে করছে, মর্গে নিয়ে ময়না তদন্তকালে কাটা-ছেড়ার কাজ হলে তাদের সহপাটি (সাহেল) কষ্ট পাবে। তবে (বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে) শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়েছে। তিনি জানান, পিতার আবেদনের প্রেক্ষিতে সৌদি থেকে এসে ছেলের লাশ দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করলে; আপাতত কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে নেয়া হচ্ছেনা সাহেলের মৃতদেহ। বর্তমানে এ লাশ হিমাগারে রাখার প্রক্রিয়া চলছে। অন্যদিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের নিভৃত করার চেষ্টা চালায় বিদ্যাপীঠের সাবেক অভিভাবক সদস্য আলহাজ্ব হায়দার আলী। হাসপাতাল এলাকায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হলে কর্তৃপক্ষের সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন চকরিয়া থানার ওসি মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ। পরপরই ফের প্রধান শিক্ষক নুরুল আখের, কোন ধরনের কষ্ট পাবেনা এমনটি আশ্বস্থ করে শিক্ষার্থীদের উত্তেজিত পরিস্থিতি শান্ত করেন।

কৈয়ারবিল ইউপি চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেন জানান, জসীম উদ্দিন নামে একজন সৌদি প্রবাসী তার ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তবে তিনি কোথায় থাকেন সেই বিষয়ে স্পষ্ট না করলেও তার পরিবার চকরিয়া পৌর এলাকায় থাকেন বলে চেয়ারম্যান মক্কী যোগ করেন।