ডেস্ক নিউজ:

ষোড়শ সংশোনীর রায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের সৃষ্ট পরিস্থিতিতে কোনো অবৈধ সরকার আসতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেন।

‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় : অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক ও বাংলাদেশের রাজনীতি’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি।

ষোড়শ সংশোধনীর আদেশের পর্যবেক্ষণ নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা মানতে হবে। গত কয়েক দিন ধরে যা হচ্ছে, এতে একটা সংশয় আছে। বর্তমান সরকার রাষ্ট্রের আরেকটি স্তম্ভ নিয়ে লড়াইয়ের মতো পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়ছে। এটা অনভিপ্রেত। এটা ভবিষ্যতে কোনো সিরিয়াস চেহারা নিতে পারে। এটা ভাবতে হবে…।

তিনি বলেন, ‘আমার সন্দেহ হচ্ছে এ প্রেক্ষাপটে কোনো অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আসতে পারে- এমন প্রশ্ন আসছে। যদি কোনো অসাংবিধানিক সরকার আসার চেষ্টা করে তাহলে এর জন্য কে দায়ী হবেন? এটাই এখন বড় চিন্তা। আমি এটাই প্রশ্ন রাখতে চাই। আমরা চাই সরকার বিষয়টি বুঝতে পারুক।’

বি. চৌধুরী বলেন, ‘সংবিধানের কথা বললে মেনে নিতে হবে। এটাই সংবিধানসম্মত। রায় (ষোড়শ সংশোধনী) হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট যা বলেছেন সেটা গ্রহণ না করে কোনো উপায় নেই। এটা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা সংসদে হতে পারে। এরপরও একটা ভদ্রতা থাকতে হবে। সংসদ সদস্য হিসেবে আত্মমর্যাদা নিয়েই কথা বলতে হবে। এটাই নিয়ম। এটা যারা মানেন না, তাদেরই ইমম্যাচিউরড বলে।’

তিনি আরও বলেন, যারা এ রায় পছন্দ করেন না তাদের উচিত হবে সংসদে আলোচনা করা। সংসদে সব বিষয়েই আলোচনা করা যায়।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রতি ইঙ্গিত করে বি. চৌধুরী বলেন, ‘এই রায় নিয়ে প্রথমেই একজন সিনিয়র মন্ত্রী বললেন, যতবার রায় দেয়া হবে ততবার আমরা তা পরিবর্তন করব। সংবিধান পরিবর্তন করব। প্রলাপ কাকে বলে? এরপর তার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা তার ব্যক্তিগত মত। এটা দলের কোনো বক্তব্য নয়। দলের লোক দলের বাইরে কীভাবে হয়, এটা আমি জানি না। এরপর যে বক্তব্য আসছে তা তুফানের মতো। কারণ তুফান বললেই ভালো হয়। তারা তুফান পছন্দ করেন।’

‘রায় নিয়ে যেসব বক্তব্য আসছে এগুলো আদালত অবমাননা কি না’- প্রশ্ন রাখেন তিনি।

‘অচিরেই ক্ষমতাসীনরা এটি (ষোড়শ সংশোধনীর রায়) গ্রহণ করবেন, এমন ঘোষণা তারা নিজেরাই দেবেন’ উল্লেখ করে সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আরও বলতে দেন, তাদের নিয়ে এত কথা বলা হয়, একটু কষ্ট তো হবেই। একটু বলতে দেন, সত্য কথা বলতে আদালতের অবজারবেশন সঠিক ছিল।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করব না। বিচারকদের ক্ষেত্রে, আপনারা যে রায় দিয়েছেন সেটা সঠিক; পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন এটাও সঠিক, সরকারকে এটা মানতেই হবে।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন। আলোচনায় অংশ নেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।