প্রেস রিলিজ:
সমাজ জীবনে পথশিশুদের বৈষম্য ও অবিচার দূর করে তাদের জীবন আলোকিত করতে পাশে দাড়িয়েছে ঢাকা আহছানিয়া মিশন ইউএসএ (ডি এএম ইউ এস এ) । ভাগ্য বিড়ম্বিত এক হাজার পথশিশুদের নিয়ে পঞ্চগড়ে আরেকটি শিশু পল্লী গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে ডিএএমইউএসএ ।
আর এ লক্ষে শনিবার, ২৯ শে জুলাই আলীবাবা রেস্টুরেন্টে “ঢাকা আহছানিয়া মিশন চিলড্রেন সিটি” শীর্ষক এক ফান্ডরেইজিং ডিনারের আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সর্বমোট ১১৬১৫.০০ ডলার (এগার হাজার ছয়শত পনের ডলার) আনুদান এবং স্পন্সরশীপের মাধ্যমে সংগৃহীত হয়।

ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন ইউএসএ এর সভাপতি নাঈমা খানের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ডিএএমইউএসএ এর যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এবং ঢাকা আহছানিয়া মিশন চিলড্রেন ভিলেজ এর প্রধান নওশের রহমান, সহ সভাপতি এবং ফান্ডরেইজিং ডিনার অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ড. ইলোরা রফিক, কোষাদক্ষ্য সেলিনা শারমিন, ডিএএমইউএসএ এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক আনিসুল কবির জাছির ফান্ডরেইজিং অনুষ্ঠানে সকলকে শুভেচ্ছা রাখেন এবং ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন ইউএসএ এর উন্নতি কামনা করেন।

উক্ত অনুষ্ঠানটিতে সম্মানিত বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জনাব কাজি রফিকুল আলম, প্রেসিডেন্ট এবং প্রতিষ্ঠাতা ঢাকা আহসানিয়া মিসন বাংলাদেশ। আর উপস্থিত ছিলেন, ডঃ দেলয়ার হোসেন, মহাম্মেদ নুরুদ্দিন, মহাম্মেদ মফিজ রাহমান, এবং আফতাব মান্নান।

সমাজের সবাইকে পথশিশুদের সাহায্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ডিএএমইউএসএ এর সভাপতি নাঈমা খান। তিনি বলেন, পথশিশুরা সমাজ জীবনে বিভিন্ন বৈষম্যের মধ্যদিয়ে বেড়ে উঠছে। আর এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদেরকে বিভিন্ন অপরাধমূলক এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করছে এক শ্রেণির মানুষ। তাই পথশিশুদের জীবন আলোকিত করতে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। যার যার জায়গা থেকে আমরা সবাই যদি এগিয়ে আসি তবেই মিলবে সফলতা।

আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশের পঞ্চগড়ে ঢাকা আহছানিয়া মিশন চিলড্রেন ভিলেজ গড়ে তোলা হবে। আর এই প্রকল্পের সরাসরি তত্বাবধানে থাকবে ডিএএমইউএসএ । ২০১১ সালে জার্মানীর সহায়তায় পঞ্চগড়ে ৩০০ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠা করা হয় আহছানিয়া মিশন শিশু নগরী’র প্রথম শিশুগ্রাম। আর এবার আরো এক হাজার পথশিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে দ্বিতীয় প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা।

অনুষ্ঠানে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নওশের রহমান (হ্যাড অব ঢাকা আহছানিয়া মিশন চিলড্রেন ভিলেজ)। প্রেজেন্টেশনে তিনি বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস), সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য তুলে ধরে বলেন, ২০০৪ সালে বাংলাদেশে সুবিধাবঞ্চিত, ভাগ্য বিড়ম্বিত পথশিশু ছিল ৫ লাখ, যা ২০১৪ সালে দাড়ায় ১০ লাখে এবং আগামী ২০২৪ সালে এ সংখ্যা দাড়াবে ২০ লাখে। আর এসব পথশিশুদের ৮০ শাতাংশের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং পয়নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। শুধু তাই নয় তাদের অনেককেই যোগাড় করতে হয় সংসারের খরচ। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ। যা একটি বড় সমস্যা। আর এ সমস্যার সমাধানে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিতে হবে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা। তিনি বলেন, পথশিশুদের অবৈতনিক শিক্ষাদানের পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করতে হবে। সাইকোলজিক্যাল কাউন্সিল করতে হবে, এবং খেলাধুলার ব্যবস্থা করতে হবে। ঢাকা আহছানিয়া মিশন চিলড্রেন ভিলেজে শিশুদের থাকা, খাওয়া, স্বাস্থ্যসেবা, সাধারন ও কারিগরি শিক্ষাসহ খেলাধুলার ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান নওশের রহমান।

“ঢাকা আহছানিয়া মিশন চিলড্রেন ভিলেজ” শীর্ষক এই ফান্ডরেইজিং ডিনার অনুষ্ঠানটি যাদের সহযোগীতায় সফল হয়েছে তারা হলেন, নাঈমা খান, ফরহাদ রেজা, ড. ইলোরা রফিক, নওশের রহমান, সেলিনা শারমিন, আনিসুল কবির জাছির, কিউনি বাংলাদেশী এ্যালমনাই নেটওয়ার্ক (সিবিএএন), এটর্নি এট ল ইশরাত সামি, আফতাব মান্নান,(মালিক আলী বাবা রেস্টুরেন্ট), সৈয়দ মান্নান, (মালিক মান্নান সুপার মার্কেট), মহাম্মেদ মফিজ রাহমান, ফটোগ্রাফার নেহার সিদ্দিকি সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। নিউ ইয়র্কের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী শাহ মাহবুবের চমৎকার সঙ্গীত পরিবেশনা উপস্থিত সবাই উপভোগ করেন।