আব্দুল আলীম নোবেল:

কক্সবাজারে সম্প্রতি ভুয়া ডিবির অপতৎপরতা বেড়েছে। এতে আসল ডিবি তাদের কার্যক্রম চালাতে গিয়ে বার বার চরম বেকাদায় পড়ছে। এর আগেও সুকৌশলে ডিবি পরিচয়ে প্রতারকরা মাঝে মাঝে এমন ঘটনার করতে দেখা গেছে। তবে ইদানিং ভুয়া ডিবি সেজে সাধারণ মানুষেকে হয়রানির আগের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। একদিকে প্রশাসন মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেও কিছু প্রতারক মানুষের অপৎতপরতায় প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ(ডিবি)র কার্যক্রম। এইভাবে ডিবি পুলিশের নামে হয়রানির এমন চিত্র চোখে পড়ছে জেলার সর্বত্র। এতে অপরাধীরা আরো বেশি সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে। তাদের কারণে হয়রানির শিকার হচ্ছে এলাকার নিরহ মানুষ। ডিবি কোন অপরাধীকে ধরতে গেলে আসল না নকল ডিবি আতংকে থাকে এলাকাবাসী। এই কারণে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে সাধরণ মানুষের সাথে। ভুয়া ডিবির অপৎতপরতা বন্ধ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকার সচেতন মহল।

সম্প্রতি রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের উমখালী এলাকায় ডিবি পরিচয়ে এক ব্যক্তিকে অপহরণ চেষ্টার অভিযোগে ৮ যুবককে আটক করেছে পুলিশ। এই যুবকরা ডিবি পরিচয় দিয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তিকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী তাদের ধরে পুলিশে হাতে তুলে দেন। আটকরা হল- ইফতেখার, বাদশা, সোহেল রানা, জামাল উদ্দিন, আসাদ, আবদুর রহিম, দেলোয়ার ও জাহাঙ্গীর। তাদের আটজনের বাড়িই কক্সবাজার পৌরসভার পেশকার পাড়া এলাকায়। দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুচ ভূট্টো জানান, তার এলাকার জসিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে ডিবি পরিচয়ে ৮ যুবক উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তাদের চ্যালেঞ্জ করে আটকে রাখে। পরে পুলিশকে খবর দিলে রামু থানার এসআই একরামুল হক ঘটনাস্থলে এসে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এছাড়াও শহরতলীর লিংরোড এলাকা থেকে পুলিশের ষ্টিকারযুক্ত গাড়ি ব্যবহার করায় আরো ৪ যুবককে আটক করে পুলিশ। গতবছর কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে থেকে এক ভুয়া মেজরকে আটক করা হয়। মাসখানেক আগে শহরের কলাতলী ও রুমালিয়ারছড়া এলাকা থেকে ডিবি পরিচয়ে ইয়াবার চালান ধরে সটকে পড়ে কতিপয় যুবক। ওই সময় অপরিচিত কয়েকজন যুবককে আটক নিয়ে যেতে দেখেন প্রত্যক্ষদর্শিরা। পরে মোটা অংকের টাকা পয়সা আদায় করে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানাগেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, একই কাদায় টেকনাফ কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কে লম্বরী, হাতিয়ার ঘোনা, রাজার ছড়া, নোয়াখালী পাড়া, কচ্ছপিয়া, মারিষ বনিয়া, হাজাম পাড়া, শামলাপুর প্রভৃতি এলাকায় মোটর বাইক আটকিয়ে ডিবি পরিচয়ে সাধারন মানুষকে হয়রানি করার খবর রয়েছে। বিশেষ করে টেকনাফ উপজেলা মেরিন ড্রাইভ সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় এই ধরণের ঘটনা নিত্যনৈমেত্তিক ঘটনাতে পরিণত হচ্ছে। সড়কে তারা বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে তল্লাশির নামে নিরঅপরাধ মানুষকে হয়রানির একাধিক ঘটনা ঘটছে। এতে এলাকার সাধরণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে জানান,টেকনাফ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ জাহান মিয়া ও টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মৌলভী আজিজ উদ্দিন। কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনর্চাজ(ওসি ডিবি), মোঃ মনিরুল ইসলাম পিপি এম জানান,আমাদের ডিবিরা পোশাক পরিহিত অবস্থায় অপরাধীর ধরতে অভিযান চালায়। তবে ভুয়া ডিবিরাতো পোশাক পড়ে কোথাও অভিযান করতে দেখা যায়নি। আসলে এক্ষেত্রে এলাকাবাসী সচেতন হলে এই ধরণে ভুয়া ডিবি সেজে সাধারণ মানুষে হয়রানি করতে পারবে না।