শাহেদ মিজান, সিবিএন:
পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি, জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ও তার তিন ভাইয়ের আটক ঘটনাটি গভীর ষড়যন্ত্র। মগনামার চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমসহ আওয়ামী লীগের আরো কয়েকজনের ইন্ধনে মোটা টাকার বিনিময়ে র‌্যাব পরিকল্পিতভাবে জাহাঙ্গীর ও তার ভাইদের আটক করেছে। একইভাবে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাও জঘন্য মিথ্যাচার। কারণ অস্ত্রগুলো ছিলো র‌্যাবের সরবরাহ করা। সোমবার দুপুরে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী রোমানা আকতার।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রোমানা আকতার বলেন, কুড়ার দিয়ে ঘরের গেইটের তালা ভেঙে আকস্মিক ঘরে ঢুকে পড়ে র‌্যাবের দল। তারা সরাসরি ঘরে ঢুকে প্রথমে ব্যাপক ভাংচুর চালান। এসময় ঘরের আলমিরা, ওভারড্রপ, ওয়াল-সুকেচ, ফাইল বক্স’র তালা হাতুড়ি দিয়ে ভাঙে এবং ঘরের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশীর অভিনয় করে। এক পর্যায়ে র‌্যাবের সোর্সের হাতে থাকা কালো একটি ব্যাগ থেকে তিনটি দেশীয় বের করে ‘অস্ত্র পেয়েছি’ বলে হৈ-চৈ শুরু করে র‌্যাব সদস্যরা এবং অস্ত্রগুলো জাহাঙ্গীর তার ভাইদের কাছ থেকে পেয়েছেন বলে দাবি করে জাহাঙ্গীর ও তার চারকে ভাইকে আটক করেন। র‌্যাবের এই অত্যাচারের খবরটি জানতে পেরে এক পর্যায়ে দলে দলে এলাকার লোকজন বেরিয়ে আসে। এমন সময় জাহাঙ্গীরের কক্ষের ওভারড্রপে থাকা জাতীয় শোক দিবস ও ব্যবসায়িক কাজের ১৭ লাখ টাকা ও ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে তড়িঘড়ি চলে যায় র‌্যাব দল। আসার পথে জাহাঙ্গীরের এক ভাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ওসমান সরওয়ার বাপ্পীকে ছেড়ে দেয়।

রোমানা আকতার জানান, তার স্বামী জাহাঙ্গীর জন্মগতভাবে আওয়ামী পরিবারের সন্তান। ছাত্রজীবনের ছাত্রলীগ করেছেন। এই কারণে জোট সরকারের আমলে বিভিন্ন মামলা-হামলা ও জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। একই সাথে তিনি এলাকার একজন জনপ্রিয় নেতা ও ব্যবসায়ী। যার প্রমাণ, স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার এই জনপ্রিয়তায় আওয়ামী লীগসহ বিএনপি-জামায়াতের কিছু কুচক্রী ব্যক্তি ঈর্ষান্বিত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে মগনামার বিএনপির প্রার্থী ও জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর দোসর চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম এবং আওয়ামী লীগের আরো কয়েকজন চেয়ারম্যান ও নেতা মিলে মোটা টাকার বিনিময়ে র‌্যাবকে ম্যানেজ করে পরিকল্পিতভাবে অস্ত্র উদ্ধারের নামে তিনভাইসহ জাহাঙ্গীরকে আটক করিয়েছে।

রোমানা আকতার বলেন, সম্পূর্ণ অন্যায় ও ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আমার স্বামীকে গ্রেফতার করার বিষয়টি আমরা প্রধামন্ত্রী, কেন্দ্রীয়, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উদ্ঘাটন করার দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীর আলমের মা রেজিয়া বেগম, জেলা যুবলীগের সভাপতি খোরশেদ আলম, সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এটিএম জিয়া উদ্দীন চৌধুরী জিয়া ও রাশেদুল ইসলামসহ আরো অনেকে।
উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘জাহাঙ্গীরের ঘটনাটি সাজানো এতে কোনো সন্দেহ নেই। কেননা জাহাঙ্গীর একজন জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী নেতা এবং ব্যবসায়ী। সে কেন দেশীয় তৈরি কাঠের বন্দুক তার ঘরে রাখবে? তারতো লাইসেন্সধারী বন্দুক রাখার সব যোগ্যতাই রয়েছে। এটাই সাজানোর ঘটনার প্রধান প্রমাণ।’

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘র‌্যাব টাকার বিনিময়ে এখন ব্যবসায় নেমেছে। টাকা নিয়ে নিরীহ ও যাকে তাকে ফাঁসিয়ে দিচ্ছে। এমনকি সরকার দলীয় নিরীহ লোকজন পর্যন্ত রেহায় পাচ্ছে না। এটা অত্যন্ত বড় অশনি সংকেত। এভাবে শুরু হলে জাহাঙ্গীর কেন, কেউই রেহায় পাবে না। এর জন্য একই সাথে র‌্যাব ও তাদের সাথে আতাঁতকারী কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। আমরা প্রয়োজনের প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবো।’