সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) :

গত মাসে সৃষ্ট পাহাড়ী বন্যা ও পানির প্রবল স্রোতে ভেঙ্গে যাওয়া চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী লালগোলা সড়কের বিশাল ভাঙনে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করা হয়েছে। ইউনিয়নের প্রায় ১০/১৫টি চিংড়ি ঘের মালিকদের আর্থিক সহযোগিতায় শুক্রবার (১১আগষ্ট) সকালে স্কেভেটর দিয়ে মাটি ভরাটের কাজ আনুষ্টানিকভাবে উদ্ভোধন করেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি বাহাদুর হক। এসময় প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল আওয়াল, সাবেক মেম্বার আকতার আহমদ, আবদুল মতলব, মো: খলিল, মহিলা মেম্বার ফাতেমা বেগমসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সড়কে মাটি ভরাটের উদ্দোক্তা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাহাদুর হক জানান, লালগোলা সড়কের হাফেজখানা পয়েন্টের বিশাল এলাকা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় প্রতিদিন প্রায় ৯ গ্রামের সাড়ে ৪ হাজার মানুষ ১০/১৫টি চিংড়ি ঘেরের মালিক-শ্রমিক চরম ঝুঁকি নিয়ে যাতায়ত করে আসছে। এছাড়া সড়কটি এলাকাবাসীর জন্য মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ঐ অংশে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কায় স্থানীয়রা প্রাথমিকভাবে বাশেঁর সাঁকো দিয়ে চলাচল উপযোগী করা হলেও প্রতিষ্টানগামী শিক্ষার্থীদের দূর্ভোগের শেষ ছিলনা। তা বিবেচনা করে মূলত সড়কের বিশাল ভাঙনে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করা হয়েছে। তিনি ভাঙন এলাকা পূন:মেরামত কাজে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

খোঁজ খবর নিয়ে জানাগেছে, ইউনিয়নের উত্তর ফুলছড়ি এলাকার সাড়ে ৪ হাজার মানুষের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম লালগোলা হাফেজখানা সড়ক। টানা ভারী বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে সড়কের হাফেজখানা পয়েন্টে পানিতে বিলীন হয়ে যায়। ফলে ওই এলাকার নারী পুরুষ জীবনঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত যাতায়ত করছেন।

স্থানীয়রা জানান, সড়কের ১০০ ফুট অংশ বিলীন হয়ে যায়। স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে জলদাশ পাড়া,উত্তর ফুলছড়ি এলাকার শত শত ঘরবাড়ী পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এলাকার কয়েক হাজার মানুষ কার্যত জোয়ারের পানিতে বন্দী অবস্থায় জীবন যাপন করছেন। ভাঙ্গন এলাকা দিয়ে পানি প্রবেশ করায় মাইজপাড়া, হাফেজখানা,দক্ষিন পাড়া, জলদাশ পাড়া,উত্তর ফুলছড়িতে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এতে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে জনভোগান্তি চরমে উঠেছে। স্থানীয়রা স্ব-উদ্যোগে কিছু কিছু সড়ক সংস্কারে নামলেও বৃষ্টির পানিতে তা ভেসে গিয়ে পুনরায় বেহাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়া জনসাধারণ বেহাল পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থায়ী ভাবে সড়ক সংস্কারে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সাবেক মেম্বার আকতার আহমদ জানিয়েছেন, ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড তথা চেয়ারম্যান পাড়া, কাঠালিয়া পাহাড়, কাচারি পাহাড়, গুরুস্থান পাহাড়, খাসঘোনা, কচিকাটা, লুইঘোনা, গরুলুটা পাড়াসহ প্রায় ৯ গ্রামের সাড়ে ৪ হাজার মানুষের একমাত্র চলাচল রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ায় জনদূর্ভোগ বাড়ছে। অন্যদিকে পশ্চিম বিল রন্জু ঘোনার প্রায় সাড়ে ৩শ কানি ধানি জমির চলিত মৌসুমের চাষ ভেস্তে গেছে। তলিয়ে গেছে ৬/৭টি চিংড়ি ঘের। ক্ষয়ক্ষতি প্রায় কোটি টাকা হবে জানিয়ে তিনি বলেন বর্তমানে অনেক বাড়ি-ঘর পানিবন্দি রয়েছে। রয়েছে এসব গ্রামের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।

৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক নাজেম উদ্দিন হেলালী জানান, রাস্তাটি এলাকার জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রতি বছর বর্ষা এলেই এটি পাহাড়ি ঢলে ভেঙ্গে যায়। তিনি সড়কের পাশাপাশি হাফেজখানা এলাকার বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্থ অংশটি মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন।