অাজিজুল হক,উখিয়া:

সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের অভিযানে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের শীর্ষ ইয়াবা গড়ফাদার জামাল মেম্বার সহ অন্যান্যরা গ্রেফতার হলেও এখনো ধরাছোয়ার বাইরে রয়ে গেছে আরেক শীর্ষ ইয়াবা গড়ফাদার স্বরাষ্টমন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী নুরুল হুদা মেম্বার। অথচ র‌্যাবের ত্রুসফায়ারে নিহত শীর্ষ ইয়াবা গড়ফাদার নুর মোহাম্মদের ভাই নুরুল হুদা প্রসাশনের মোস্ট ওয়ানটেন্ড তালিকায় রয়েছে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে দেশের বিভিন্ন থানায় ইয়াবা,হত্যা,অস্ত্র,চাঁদাবাজি,পুলিশ এসল্ট মামলা সহ ১৯ টি মামলা। সে গ্রেফতার এড়াতে টেকনাফের জঙ্গল,রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও বস্তিতে পালিয়ে বেড়ালে তার অবর্তমানে ঠিকই ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে নিচ্ছে তার নিয়োজিত ম্যানেজার মৌলভী জামাল। উক্ত মৌলভী জামাল নুরুল হুদা মেম্বারের অবৈধ বানিজ্য সহ সর্বত্র ম্যানেজ করে চলার ফলে নুরুল হুদাকে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি বলে স্থানীয় জনগনের অভিমত।
টেকনাফের স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,ইয়াবার বিরুদ্ধে প্রসাশনের বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে,এ অভিযানে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে টেকনাফের হৃীলা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জামাল হোসেন,৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার শামশুল আলম বাবুলের স্ত্রী ছালেহা বেগম সহ একাধিক ব্যাক্তিকে। কিন্ত প্রসাশনের তালিকায় মোষ্ট ওয়ান্টেড ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল হুদা এখনো রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। স্থানীয় জনগন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,নুরুল হুদা মেম্বারকে দিনে মাঝেমধ্যে প্রকাশ্যে দেখা গেলেও বেশীর ভাগ সময় তিনি জঙ্গলে ও রোহিঙ্গা বস্তিতে পালিয়ে থাকেন। রোহিঙ্গা বস্তিতে সে অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করে বলেও স্থানীয়রা জানান। তাদের মতে, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও বস্তিতে বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে আসা ত্রান সামগ্রী বিতরন সহ উন্নয়নমুলক কাজ নুরুল হুদা মেম্বারের ইশারাতেই হচ্ছে। তার কথার বাইরে গিয়ে ক্যাম্প ও বস্তিতে কেউ কাজ করতে পারেনা। এছাড়াও স্থানীয় বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেপরোয়া ভাবে ইয়াবা পাচারে জড়িত  নুরুল হুদা সিন্ডিকেট। তার দিক নির্দেশনাতে বিভিন্ন গাড়ীতে যোগানের মাধ্যমে সড়ক পথে ও সমুদ্র পথে ইয়াবা পাচারে তদারকির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তার নিয়োজিত ম্যানেজার লেদা এলাকার খলিলুর রহমানের পুত্র মৌলভী জামাল। ম্যানেজারীর দ্বায়িত্ব পেয়ে মৌলভী জামালও এখন কোটি টাকার মালিক,বিলাশ বহুল বাড়ী ছাড়াও কিনে নিয়েছেন নামে বেনামে একাধিক সম্পদ। নুরুল হুদার বিরুদ্ধে যে ১৯ টি মামলা রয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার থানার ইয়াবা মামলা যার নং-জি,আর-৭৩১/২০১৩,ঢাকার মতিঝিল থানার ইয়াবা মামলা,যার নং জি,আর-৬৪৮/২০১২,টেকনাফ থানার ইয়াবা মামলা,যার নং জি,আর-৩২৭/২০১১,রামু থানার মাদক মামলা,যার নং জি,আর-২৬৫/২০০৭,টেকনাফ থানার ইয়াবা মামলা,যার নং জি,আর-৪৩৩/২০১২,টেকনাফ থানার ইয়াবা মামলা,যার নং জি,আর-৭২৫/২০১২,ঢাকার খিলগাও থানার ইয়াবা মামলা,যার নং জি আর-৪৭৭/২০১২, মগদা থানার ইয়াবা মামলা,যার নং জি আর-২২৯/২০১২, ঢাকা মোহাম্মদপুর থানার মামলা,যার নং জি,আর-৫৫৮/২০১৩,টেকনাফ থানার মামলা,যার নং জি,আর-৫৩৯/২০১২,কক্সবাজার থানার মামলা,যার নং জি,আর-৩০/২০১৩,কক্সবাজার থানার মামলা,যার নং জি,আর-৫৬৩/২০১৩,রামু থানায় অস্ত্র মামলা,যার নং জি,আর-৩১/২০১৪,রামু থানার ইয়াবা মামলা,যার নং জি,আর-৩০/২০১৪,টেকনাফ থানার হত্যা মামলা,যার নং জি,আর-৫৪/২০১৪,টেকনাফ থানার ইয়াবা মামলা,যার নং জি,আর-২৪১/২০১৬,টেকনাফ থানার পুলিশ এসল্ট মামলা,যার নং জি,আর- ১১১/২০১৬ ও টেকনাফ থানার ফরেষ্ট মামলা,যার নং জি,আর-৬৫৩/২০১৫।
স্থানীয় লোকজনের দেওয়া তথ্য মতে,টেকনাফের হৃীলা ইউনিয়নের লেদা গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেমের পুত্র নুর মোহাম্মদ ও নুরুল হুদা ট্রাকের হেলপার থেকে ইয়াবা বানিজ্যের মাধ্যমে অল্প সময়ে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তোলে। নাম লেখায় স্বরাস্টমন্ত্রনালয়ের তালিকায় শীর্ষ ইয়াবা গড়ফাদার হিসেবে। এর মধ্যে ২০১৪ সালে র‌্যাবের ত্রুসফায়ারে নিহত  হয় নুর মোহাম্মদ । সে থেকে নুরুল হুদা ইয়াবা বানিজ্যর মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলে। নামে বেনামে একাধিক ব্যাংক একাউন্ড ছাড়াও কক্সবাজার,চট্রগ্রাম ঢাকায় একাধিক জায়গা জমি,ট্রলার,গাড়ীবাড়ীর মালিক বনে যায়। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিদমন কমিশনও তদন্ত শুরু করেছে। এ  ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে টেকনাফ থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন জানান, নুরুল হুদা মেম্বারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে,তাকে ধরতে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ অভিযান চলমান থাকবে।