প্রথম আলো:

চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে জব্দ করা ডিম নকল নয় বলে পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে। গত ২৮ জুলাই নকল সন্দেহে পটিয়ার একটি দোকান থেকে প্রায় দুই হাজার ডিম জব্দ করেছিল পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে পটিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় এসব ডিম আসল না নকল, সে পরীক্ষা করে।

পটিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আলমগীর বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি স্থানীয় থানায় জমা দেন। রোববার প্রতিবেদনটি আদালতে জমা দেওয়া হবে বলে জানান ডিম জব্দের ঘটনায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পটিয়া থানার এসআই সৈয়দ মোশারফ হোসেন।

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষায় ডিমগুলো আসল প্রমাণিত হয়েছে। এগুলো নকল ডিম নয়।

পুলিশ জানায়, গত ২৮ জুলাই রাতে পটিয়া আদালতের এক বিচারক উপজেলা সদরের কামাল বাজারের শাহ আমির পোলট্রি ফার্ম নামের দোকান থেকে এক ডজন ডিম কেনেন। পরে তাঁর বাসায় একটি ডিম ভাজার জন্য ভাঙা হয়। দেখা যায়, ডিমের কুসুম ঘোলা। ডিমে কোনো গন্ধ নেই। পচা হলে গন্ধ থাকত। এভাবে আরও দুটি ডিম ভাঙার পর দেখা যায় কুসুম ঘোলা। ডিমে গন্ধ নেই। সন্দেহ হওয়ায় ডিমের ভাঙা খোসাগুলো গরম তেলে দেওয়া হয়। দেখা যায় খোসা তেলে গলে গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে ওই বিচারক বিষয়টি পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ ওই দোকান থেকে দুই হাজার ডিম জব্দ করে।

এ ঘটনায় পটিয়া থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. মামুন মোস্তফা বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়। তাঁরা হলেন দোকানমালিক মো. আরমান, ডিমের দুই পাইকারি বিক্রেতা মোহাম্মদ বেলাল ও নুরুল আবছার। তাঁদের মধ্যে আরমান ও বেলালকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। নুরুল আবছারকে এখনো ধরতে পারেনি পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সৈয়দ মোশারফ হোসেন ডিমগুলো পরীক্ষার আবেদন জানালে আদালত গত সোমবার জেলা কিংবা উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগে পাঠানোর আদেশ দেন।

জব্দ করা ডিম পরীক্ষা শেষে পটিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সই করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরীক্ষার সময় ভাঙা ডিমটিতে পচা গন্ধ বের হয়। ভালো ডিম নষ্ট হওয়ার পর যে লক্ষণ থাকে, ওই ডিমটিতে সব লক্ষণ বিদ্যমান ছিল। বিচারক যে ডিমগুলো বাসায় ভেঙেছিলেন, এগুলো সম্ভবত কেন্ডিলিং ডিম ছিল। কেন্ডিলিং ডিম হলো সেসব ডিম যা বাচ্চা ফুটানোর উদ্দেশে৵ হ্যাচিং মেশিনে দেওয়া হয়। সাত–আট দিন পর পরীক্ষা করে যদি দেখা যায়, ডিমগুলো থেকে বাচ্চা ফোটানো সম্ভব নয় তখন বাছাই করে কিছু ডিম বাজারে বিক্রি করা হয়। কিন্তু ডিমগুলো অনেক দিন হ্যাচিং মেশিনে থাকায় ভেতরের বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তন ঘটে এবং অতিরিক্ত গরমে ডিমের ভেতরের পানি বাষ্পীভূত হয়ে যায়। এর ফলে ডিমের ভেতরে নড়ে এবং ভাঙলে নকল বলে মনে হয়।