কক্সবাজার শহরে উন্মুখ হয়ে আছে ভয়ংকর ম্যানহোল

প্রকাশ: ৩ আগস্ট, ২০১৭ ১২:০৪ , আপডেট: ৩ আগস্ট, ২০১৭ ০৪:১৯

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


পিটিস্কুল বাজারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের বিপরীতে উন্মুক হয়ে আছে আটটি ভয়ংকর ম্যানহোল।

শাহেদ মিজান, সিবিএন:
কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রধান সড়কের ফুটপাতে প্রায় অর্ধশত ভয়ংকর ম্যানহোল খোলা রয়েছে। ছোট-বড় ও গভীর অনেক ম্যানহোল খোলা অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে খোলা এসব ম্যানহোলে পড়ে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে অনেক মানুষ আহতও হয়েছে। তবে পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই।
জানা গেছে, কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কের ফুটপাতে কয়েকট ফুট দূরত্বে ম্যানহোল রয়েছে। এর মধ্যে কিছু ম্যানহোল ঢাকনা দিয়ে ঢাকা থাকলেও কিন্তু শতাধিক ম্যানহোল প্রতিনিয়ত খোলা রয়েছে। তবে অন্য ম্যানহোলগুলোও নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে।
সূত্র মতে, পিটিস্কুল বাজারের পূর্বপাশে প্রধান সড়কের উত্তর পাশের ফুটপাতে মাসতিনেক আগে প্রায় ১৪টি ম্যানহোল কাটা হয়। ময়লা আটকে নালা বদ্ধ হয়ে যাওয়ায় হয়ে দীর্ঘদিন ধরে পানি নিষ্কাশনের বাধাগ্রস্ত ছিলো। সে কারণে ফুটপাতের ছাদ কেটে ম্যানহোলগুলো তৈরি করেছিল পৌরসভা। ম্যানহোল তৈরি করা হলেও ঢাকা দেয়নি পৌর কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে স্থানীয় দোকানদাররা নিজেদের নিরাপত্তার প্রয়োজনে ছয়টি ম্যানহোলের ঢাকনা লাগিয়ে দেন। কিন্তু আরো আটটি ম্যানহোল সংলগ্ন স্থানে দোকান নেই। এমনকি বাসাবাড়িও নেই। ফলে কেউ ম্যানহোল গুলোতে ঢাকনা দেয়নি।
ফরিদুল আলম নামে এক কোম্পানি বিক্রয়কর্মী এই প্রতিবেদককে জানান, কয়েকদিন আগের প্রবল বৃষ্টিতে পিটিস্কুল বাজার এলাকা পানিতে ঢুবে যায়। এসময় হাঁটুর বেশি পরিমাণ পানিতে পুরো এলাকা নিমজ্জিত থাকায় কিছু দেখাচ্ছিল না। এসময় তিনি সড়কের পাশ ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন। বাজার থেকে উঠে কিছুদূর এগুতেই আকস্মিক তিনি ম্যানহালে তিনি পড়ে যান। তাৎক্ষণিক পথচারীরা এগিয়ে এসে তাকে ম্যানহোল থেকে তোলেন। তবে ততক্ষণে ম্যানহালের চারপাশে খাড়া হয়ে লোহার রডের আঘাত ও মুচড়ে পড়ায় গুরুতর আহত হয়ে যান তিনি। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দিয়ে দেয়া হয়। পাঁচদিন চিকিৎসা নিয়ে তিনি সুস্থ হয়েছেন।
তিনি আরো জানান, লোকজন তাকে উদ্ধার না করলে তিনি নালায় তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিলো। তবে ভাগ্য বলেই তিনি বেঁচে গেছেন। তবে পানিতে তার দুটি মোবাইল ফোন ও জুতা তলিয়ে গেছে।
স্থানীয় দোকানীরা জানিয়েছেন, বৃষ্টি সময় সময় ডুবে থাকায় বেশ কিছু মানুষ এসব ম্যানহোলে পড়েছেন। এছাড়া প্রায় সময়ই রাতের আঁধারে অনেকে পড়েছেন। পড়ে যাওয়ারা সবাই কমবেশি আহত হয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের বিপরীতে অবস্থিত ওই ম্যানহোল অত্যন্ত বিপজ্জনক রয়েছে। এসব ম্যানহোলের গভীরতা বুক সমান হবে। ইট-কংক্রিটের ছাদ কেটে ফুটপাতে তৈরি এসব ম্যানহোলের চারপাশে ধারালোভাবে খাড়া হয়ে রয়েছে। ফুটপাতের সাথে মিলিয়ে থাকায় দূর থেকে এগুলো সহজে চোখে পড়ে না। যার ফলে অসাবধানতাবশত: পথচারীরা ওইসব ম্যানহোলে পড়ে যায়।
আরেকটি বিপজ্জনক ম্যানহোল খোলা রয়েছে কোরালরীফ সংলগ্ন পশ্বিমে। এই ম্যানহোল অনেক বড় এবং তার পাশে তিনমুখী লম্বা আরো দু’টি খোলা বিপজ্জনক নালা রয়েছে। ব্যস্ততম এই এলাকা দিনরাত হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছে। এই বিপজ্জনক পরিস্থিতি মাড়িয়ে মানুষকে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে। মাস ছয়েক আগে সেখানকার ম্যানহোলে পড়ে মারাত্মক আহত হয়েছিল সাংবাদিক শামসুল হক শারেক। পরে পৌর কর্তৃপক্ষ ওই ম্যানহোলে ঢাকা দিয়েছিল। কিন্তু বিগত মাস খানেক আগে ময়লা পরিস্কার করতে গিয়ে ঢাকনাটি তুলে আর দেয়া হয়নি এই সময়ে অনেক মানুষ ওই সেখানে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে। বর্তমানেও অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে লোকজন।
এছাড়াও শহরের সিকদার মহল, বাজারঘাটার আরো কয়েক স্থানে উন্মুক হয়ে আছে ম্যানহোল। আর যেসব ম্যানহোলের ঢাকনা রয়েছে তার অধিকাংশও নড়বড়ে।
এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহবুুবুর রহমান চৌধুরীর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।