ডেস্ক নিউজ:

পূর্ব লন্ডনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই তরুণের ওপর এসিড হামলা চালানো হয়েছে। তাদের দু’জনেরই পৈত্রিক নিবাস সিলেটে। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টায় বেথনাল গ্রিন পুলিশ স্টেশনের খুব কাছে রোমান রোডে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত দু’জনকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এসিড হামলার শিকার দুই তরুণের একজনের নাম শওকত হুসেইন (২৪)। তার সঙ্গে থাকা আরেক তরুণের নাম জানা যায়নি। তাদের ওপর এসিড হামলা হওয়ার পর তারা যন্ত্রণায় কাতর অবস্থায় পাশের একটি দোকানে আশ্রয়ের জন্য ছুটে যান। এসময় একটি পুলিশের গাড়িকেও তারা থামার জন্য ইশারা করেন। পরে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্যারামেডিক্যাল টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পুলিশ কর্মকর্তারা ও লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ঘটনাস্থলে হাজির হয়েছিলেন। তাদের দু’জনকেই পূর্ব লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। তাদের ওপর অজ্ঞাত তরল পদার্থ নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তবে তাদের আঘাত প্রাণঘাতী নয়। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।’
আহত শওকতের বোন জাকিয়া (২২) বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, শওকতকে পরে এসেক্সের চেমসফোর্ডের ব্রুমফিল্ড হাসপাতালের বিশেষায়িত বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। জাকিয়া বলেন, ‘এটা আমার ভাইয়ের জীবনকে কঠিন করে দেবে। এরই মধ্যে তার চেহারা সম্পূর্ণরূপে বদলে গেছে। নতুন একটি চাকরি শুরু করার কথা ছিল তার। কিন্তু এই ঘটনার পর জানি না তার জীবনে ভবিষ্যতে কী ঘটবে।’
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে স্থানীয় একজন দোকানি বলেন, ‘‘আমার দোকানে দু’জন বাঙালি তরুণ আসেন ৭টার কিছুক্ষণ আগে। তারা এসে বলতে থাকেন, ‘আমরা এসিড আক্রান্ত হয়েছি। আমাদের শরীর পুড়ে যাচ্ছে পানি দাও।’ তারা নিজেরাই শরীরে পানি ঢালতে থাকে।’ ওই দোকানি আরও বলেন, ‘আমি সত্যিই ভয় পেয়েছিলাম। তারা চিৎকার করে কান্না করছিল।’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, উভয় কিশোরের মুখ মারাত্মকভাবে ঝলসে গেছে।
টাওয়ার হ্যামলেটসের সাবেক কাউন্সিলর ও কনজারভেটিভ পা‌র্টির নেত্রী ডা. আনোয়ারা আলী বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের মতো দেশে এমন এসিড সন্ত্রাস আসলেই ভয়াবহ।’
গত ১৩ জুলাই নর্থ লন্ডন ও ইস্ট লন্ডনে দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে পাঁচ জনের ওপর এসিড হামলার পর এটাই সবচেয়ে বড় হামলা। তবে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে এসিডসহ শরীরের জন্য ক্ষতিকর তরলজাতীয় পদার্থ ব্যবহার করে সংঘটিত অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে। এ ধরনের হামলা মোকাবিলায় চলতি সপ্তাহেই লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের যানবাহনগুলোতে এডিস হামলাবিরোধী বিশেষ সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। এসব সরঞ্জাম ব্যবহার করে পুলিশ কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে এডিস হামলার শিকার ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারবেন।