মোহাম্মদ শফিক, কক্সবাজার:

টানা বর্ষণে কক্সবাজার শহরের রাস্তাঘাটে অথৈ পানিতে জনজীবনে দূর্ভোগ নেমে এসেছে। স্বাভাবিক গাড়ী চলাচল তো দূরের কথা, খালি পায়েও পথচলা দুরুহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও অনুন্নত নালা নর্দমার কারণে বৃষ্টির পানি পথ দিয়ে চলছে।

পাহাড়ী ঢল ও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে কক্সবাজার শহরতলির বিভিন্ন এলাকা। বুক পরিমান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে প্রধান সড়কসহ অধিকাংশ উপসড়কগুলো। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়েছে। এতে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার হাজার ব্যবসায়ীর। ভেসে গেছে বসতবাড়ির বিভিন্ন আসবাপত্রসহ গৃহপালিত প্রাণি। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। নষ্ট হয়েছে কৃষকের আবাদের চারা। রাস্তা-ঘাটেরও ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কের বাজারঘাটা, পুরাতন পিটিআইস্কুল এলাকায় কোমরসমান পানি। বড় বাজার এলাকার প্রায় তিন’শ দোকান ডুবে গেছে পানিতে। এছাড়া টেকপাড়া, উত্তর রুমালিয়ারছড়া, গোদারপাড়া, বার্মিজ মার্কেট, লারপাড়া,ও শত শত ঘরবাড়ি পানির নিচে। চলাচলের পথ বন্ধ থাকায় পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। কর্মস্থানে যেতে না পারায় অনেকে অলস সময় কাঠিয়েছেন দিনভর। এতে বিপাকে পড়তে হয়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের।

তলিয়ে গেছে শহরের সমিতিপাড়া, এসএমপাড়া, গোদারপাড়া, নুনিয়াছাড়া, টেকপাড়া, আলির জাঁহাল, কলাতলীসহ বিভিন্ন এলাকা। লোকালয়ে নদীর পানি ঢুকে তলিয়ে গিয়েছিল মসজিদ মাদ্রাসা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।

অপরদিকে কক্সবাজার শহর ও রামুতে পাহাড় ধসে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৫ জনকে আহতাবস্থায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। কক্সবাজার শহরের লাইট হাউজ এলাকা এবং রামু উপজেলার মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চেইন্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, রামুর চেইন্দা এলাকায় একই পরিবারের সায়মা (৫) ও জিহান (৭) নামের একই পরিবারের দুই শিশু এবং কক্সবাজার শহরের লাইট হাউজ এলাকা মোহাম্মদ শাহেদ (১৮) ও সাদ্দাম হোসেন (২৮)। আহতরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

এভাবে পিএমখালী, রামু, কাউয়াখোপ, গর্জনিয়া চকরিয়া, পেকুয়া, উখিয়া ও সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁওর বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে হাজার পরিবার।

কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহবুব আলম চেšধুরী জানান, সৃষ্ট বর্ষণে কক্সবাজার পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাস্তা-ঘাটের ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে। যাদের বেশি ক্ষতি হয়েছে তাদের একটি তালিকা তৈরি করে পূর্নবাসন করার চেষ্টা করার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।