ডেস্ক নিউজ:

দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলে দেখা দিয়েছে বন্যা। বন্যার পানি বাড়িঘরে ওঠার পর এবং পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে পানিবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। বিশুদ্ধ পানির অভাবে দেখা দেয় পানিবাহিত নানা রোগ যেমন- ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড, পেটের পীড়া, কৃমির সংক্রমণ, চর্মরোগ প্রভৃতি। একটু স্বাস্থ্য সচেতন হলেই এসব সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
বন্যা শুরুর আগে থেকেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বিশুদ্ধ পানি না পাওয়া গেলে পানি ভালোমতো ফুটিয়ে পান করতে হবে। দৈনন্দিন ব্যবহারিক কাজেও টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার করতে হবে। বন্যার সময় টিউবওয়েলের উপরি ভাগের পানি চেপে ফেলে দিয়ে ব্যবহার করতে হবে। পানি ফুটানো ছাড়াও ফিটকারি অথবা ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে পানি বিশুদ্ধ করা যায়।
বন্যা পরবর্তী প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যা হলো ডায়রিয়া। ডায়রিয়া প্রতিরোধের জন্য খাবার আগে সাবান বা ছাই দিয়ে নিরাপদ পানির সাহায্যে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে। প্রতিবার মলত্যাগের পরে হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। স্যানিটারি বা স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহার করতে হবে। ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা শুরু হলে নিয়মিত খাবার স্যালাইন খেতে হবে। বন্যার সময়ে খাবার স্যালাইনের সঙ্কট দেখা দেয়, এজন্য আগে থেকেই খাবার স্যালাইন সংগ্রহ করে রাখা ভালো। খাবার স্যালাইন না থাকলে বিকল্প হিসেবে বাড়িতে প্রস্তুত লবণ-গুড়ের তৈরি স্যালাইন খাওয়ানো যেতে পারে। পাশাপাশি ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীকে স্যালাইনের পাশাপাশি ভাতের মাড়, চিঁড়ার পানি, ডাবের পানি, গুড়ের শরবত দেয়া যেতে পারে। এ সময় যাতে শিশুর পুষ্টিহীনতা না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। ডায়রিয়া হলে রোগীর স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে অবহেলা করা কোনোভাবেই উচিত হবে না। বন্যার সময় মলমূত্রত্যাগে সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি একটি বিষয়। যেখানে সেখানে মলত্যাগ করার ফলে পেটের পীড়া তো রয়েছেই, উপরন্তু কৃমির সংক্রমণ বেড়ে যায়। বন্যার সময় আকস্মিক দুর্ঘটনা থেকে সাবধান থাকতে হবে।
বন্যার কারণে যেমন রোগের বিস্তার বৃদ্ধি পায় তেমনি দেখা দেয় আকস্মিক কিছু দুর্ঘটনা। কেবল একটু সতর্কতার মাধ্যমে এসব দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। বন্যায় সাধারণত বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা, পানিতে ডুবে যাওয়া, সাপ ও পোকামাকড়ের কামড়ের ঘটনাগুলো বেশি ঘটে থাকে। পানিতে ডুবে যাওয়া ও সাপের কামড়ে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হেেব। বন্যার সময় শিশুদের প্রতি বাড়তি নজর রাখতে হবে। এ সময় শিশুদের চোখের আড়াল করা যাবে না। অভিভাবকদের অসচেতনতার দরুণ বন্যার পানি থেকে শিশুদের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। একটু বাড়তি নজর রাখলেই এ ধরনের দুর্ঘটনা থেকে শিশুরা রক্ষা পেতে পারে।