বিশেষ প্রতিবেদকঃ

এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার সেন্টমার্টিন দ্বীপে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা মোঃ আরমান নামে এক ফেসবুক আইডি থেকে সংগৃহিত তথ্যে জানা যায়, স্বামী অত্র দ্বীপের ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফজল করিমের পুত্র মোঃ আয়াজ উদ্দীন। অন্যদিকে স্ত্রী অত্র দ্বীপের ৭নং ওয়ার্ডের অস্থায়ী বাসিন্দা নুরুল বশরের মেয়ে চোফাইরা বেগম। তারা দুজন সেন্টমার্টিন দ্বীপের সিটিবি রিসোর্ট নামে একটি আবাসিক হোটেলের ১০৬ নম্বর রুমে মাসিক ভাড়া থাকত।

গত ২০ জুলাই জুমাবার, সকাল ৯ ঘটিকার সময় স্বামী পরিকল্পিতভাবে হত্যার জন্য দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে একটি ধারালো ভাংগা গ্লাস দিয়ে নির্মমভাবে জখম করে।পরে স্ত্রীর আত্মচিৎকারে আশেপাশের মানুষজন ছুটে এলে ঐ ঘাতক স্বামী দ্রুত পালিয়ে যায়। পরবর্তিতে লোকজন স্ত্রীকে রুমের ভিতর দরজা জানালা বন্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।

এই বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য দ্বীপের ৫নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা ও মেয়ের দুলাভাই সিরাজুল ইসলামের (০১৮২৯৭৭৫৬৫৩) সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গত ৫-৬ মাস আগে তাদের প্রেম করে টেকনাফ গিয়ে বিয়ে হয়। বিয়ের পর  অত্যাচারের শিকার হলে একপর্যায়ে স্ত্রী তার সংসার বিচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এক সালিস বৈঠকে নিজ জিম্মায় জোরপূর্বক মেয়েটিকে পুনরায় সংসার বেধে দেন। তারপর তারা স্থানীয় একটি আবাসিক হোটেলে একটি কক্ষ ভাড়া থাকেন। কয়েকদিন যেতে না যেতেই মেয়েটির উপর নিয়মিত চলে অমানবিক অত্যাচার নির্যাতন শুরু করে। একপর্যায়ে হত্যার পরিকল্পনায় রুমের দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পুরো শরীরের বিভিন্ন অংশ গুরুতর জখম করে। পরে আশেপাশের লোকজনের সহযোগীতায় মেয়েটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে সেন্টমার্টিনে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কক্সবাজারে পাঠানো হয়। বর্তমানে মেয়েটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এখনও মেয়েটি আশংকাজনক অবস্থায়।

মেয়ের বাবা নুরুল বশর জানান, আমরা অস্থায়ী বাসিন্দা। তাই আমাদের বিচার নাই, দেখার কেউ নেই। এখন বিচার দিলে আমাদেরকে সেন্টমার্টিন থাকতে দিবেনা বলে হুমকি দেন বিবাদীরা। আমার মেয়ে যে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে এটাই শুকরিয়া।

সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহাম্মদ (০১৮১৫৬১৪৫৭৬) জানান, আমি বিষয়টি একবার সালিস করেছিলাম। এখন আহতের ঘটনাটি সত্য। এই ব্যপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাড়ীর ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ জাকির হোসেন ও ফিরোজ (০১৭২০১৬০১৫৪) জানান, আমরা বিষয়টি শুনেছি। তবে আমাদের কাছে কোন লিখিত আকারে অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ দাখিল করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সেন্টমার্টিন পর্যটন শাখার সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক (০১৮১৪১১৬১১৬) জানান, বিষয়টি আমরা শুনেছি এবং ফুটেজ দেখেছি। তবে আমাদের কাছে এখনও কোন অভিযোগ আকারে আসেনি। এটি সেন্টমার্টিন দ্বীপের জন্য একটি ব্যতিক্রম ঘটনা। অত্যাচারি স্বামীকে বিচারের আওতায় আনা না হলে এমন ঘটনা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে। অচিরে স্বামীকে গ্রেপ্তার করে সুষ্ট বিচারের দাবি জানাচ্ছি।