আতিকুর রহমান মানিক:
সাঙ্গ হলো মিলনমেলা। সপ্তাহব্যাপী আকাশভাঙ্গা বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে সবকটি প্রোগ্রামে অংশ নেন জোলার মৎস্য চাষী, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। হ্যাঁ, কক্সবাজারে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৭’র মূল্যায়ন, পুরস্কার বিতরন ও সমাপনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০১৭ উদযাপন কমিটির আয়োজনে ২৪জুলাই (সোমবার) বিকাল ৩ টায় জেলা মৎস্য কর্মকর্তার সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মোঃ আবদুল আলীম ও প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার আঞ্চলিক মৎস্য কর্মকর্তা একেএম মোখলেসুর রহমান। এতে বক্তারা বলেন, সরকারের বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপের ফলে দেশে মৎস্য উৎপাদন ও রপ্তানী বেড়েছে। চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ চাষে ব্যাপক সফলতার পর এখন কাঁকড়া ও কুঁচিয়া চাষে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হচ্ছে। ফলে এ বছর ৬৮ লক্ষ টন মাছ উৎপাদন হয়েছে। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (সদর) ডঃ মঈন উদ্দীন আহমদের সঞ্চলনায় এতে বক্তব্য রাখেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মোঃ আব্দুল আলীম, আঞ্চলিক মৎস্য কর্মকর্তা একেএম মোখলেসুর রহমান, ১০ একর /১১ একর চিংড়ি চাষ প্রকল্প এডিবি’র প্রজেক্ট ম্যানেজার মিজানুর রহমান, সী উইড চাষী ওমর হাসান, মাছ চাষে সফলতার জন্য পুরস্কার পাওয়া চাষী খোরশেদ, ওমর ফারুক ও বাগদা চিংড়ি পোনা উৎপাদনে স্বর্ন পদক বিজয়ী মডার্ণ হ্যাচারীর জেনারেল ম্যানেজার মিশন দত্ত প্রমূখ। বিপুল সংখ্যক জেলে-মৎস্যজীবি, চিংড়ি- মাছ চাষী, হ্যাচারী মালিক ও ফিশিং বোট মালিক-শ্রমিকরা অনুষ্ঠানে উপস্হিত ছিলেন।
“মাছ চাষে গড়বো দেশ, বদলে দেব বাংলাদেশ” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জেলাব্যাপী গত ১৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়া জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচীর সমাপনী দিনে জেলার ৩ জন সফল মৎস্য চাষীকে সম্মাননা দেয়া হয়। সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে জেলার চিংড়ি চাষী, কাঁকড়া চাষী, উদ্যোক্তা, ঘের মালিক, শুঁটকি উৎপাদনকারী, হ্যাচারী মালিক, ফিশিং বোট মালিক-শ্রমিক ও বরফ কল মালিকসহ মৎস্য সেক্টরের সাথে জড়িত আরো রকমারী শ্রেনী-পেশার জনগন অংশ নেন। এতো পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়, মাছ ও চিংড়ি চাষে রোগ-বালাই প্রতিরোধ, খাদ্য ব্যবস্হাপনা ও উত্তম আহরন পদ্ধতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনায় অংশ নেন সবাই। চাকরির পিছনে না ছুটে মাছ ও চিংড়ি চাষে বিনিয়োগ করে সফল হওয়া উচ্চশিক্ষিত অনেক তরুন এখন সম্ভাবনাময় শিল্প উদ্যোক্তা হিসাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে। আর প্রযুক্তিগত পরামর্শ, প্রশিক্ষন ও উৎসাহ দিয়ে তাদেরকে সহায়তা করেছেন মৎস্য অধিদপ্তরের চৌকস কর্মকর্তারা। তাই প্রতিবছর জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের অনুষ্ঠানমালা এসব সফল উদ্যোক্তাদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠে। যেন তাদেরই প্রাণের অনুষ্ঠান জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ।