ডেস্ক নিউজ:
শিশুদের গ্যাজেট আসক্তিবাবা-মা স্মার্টফোন দিতে অস্বীকার করায় ৯ বছর বয়সী এক শিশু ছুরি দিয়ে নিজেই নিজের শরীরে আঘাত করেছে। সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে ভারতে।
ফর্টিস ন্যাশনাল মেন্টাল হেলথ কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন ও কনসালট্যান্ট ড. সামির পারিজ -এর মতে বর্তমানে শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ তৈরি হচ্ছে। ফলে শিশুরা সহজেই বিভিন্ন ডিভাইস পরিচালনায় পারঙ্গম হয়ে উঠছে। তার মতে শিশুদের ডিভাইস ব্যবহার করতে দেওয়ার মাধ্যমে ব্যস্ত রাখার একটি ক্রমবর্ধমান প্রবণতা আজকাল বাবা-মায়েদের মধ্যে বেশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাবা-মায়েদেরকে বিভিন্ন অডিও-ভিজুয়াল সাহায্য করছে তাদের সন্তানদের সঠিকভাবে পরিচালনা করতে। কিন্তু এই সাময়িক স্বস্তি তাদের দীর্ঘমেয়াদে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
ম্যাক্স গ্রুপ হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ড. সমীর মালহোত্রার মতে শিশুর ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির সময়টুকুতে এই শহুরে জীবনযাত্রা এবং প্রযুক্তির আগ্রাসন একটি প্রাণঘাতী ভূমিকা পালন করছে।
বেশিরভাগ বিদ্যালয়ও ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের অত্যধিক ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছে এবং বিদ্যালয়ে মোবাইলফোন আনার ক্ষেত্রে শিশুদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি অবলম্বন করছে। কলকাতার স্কুল শিক্ষক পৌলমি পোদ্দারের মতে, শিশুরা তাদের পিতা-মাতার কাছ থেকেই এই অভ্যাসগুলো পায়। তারা দেখে তাদের বাবা-মায়েরা বেশিরভাগ সময় ফোনে ব্যস্ত থাকছে।
তিনি বলেন, একটি স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে আনন্দ পাওয়া যায় তার চেয়ে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক বেশি। বাবা-মায়েরা তাদের ছেলে-মেয়েদের ব্যস্ত রাখার জন্য তাদের হাতে ফোন তুলে দিচ্ছে। বরং এর পরিবর্তে তাদের উচিত সন্তানদেরকে দক্ষতা বৃদ্ধির কর্মসূচিতে অংশ নিতে উৎসাহিত করা। এক্ষেত্রে নিবিড়ভাবে সন্তানের সমস্যাগুলো জানা, তার জন্য একটি ইতিবাচক পরিবেশ নিশ্চিত করা, মোবাইল ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করে দেওয়া এবং গঠনমূলক শখকে উৎসাহিত করা। এসবই তাদেরকে এই আসক্তি থেকে দূরে রাখার ভাল উপায় বলে মনে করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন মোবাইলফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত। পরিবারের সদস্যদের বন্ডিংয়ের জন্য সময় দিতে হবে। বাবা-মা হিসেবে যে ভূমিকা পালন করার কথা তা সঠিকভাবে পালন করতে হবে। তার মতে গ্যাজেট আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করার এখনই উপযুক্ত সময়।