রফিক মাহমুদ,উখিয়া :

চলতি বর্ষা মৌসুমের টানা ও প্রবল বর্ষনের গত ৫ জুলাইয়ের পাহাড়ী ঢলের সৃষ্ট বন্যায় উখিয়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়ক উপ-সড়ক লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। পানির তীব্র স্রোতের টানে গ্রামীন জনপদের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার অধিকাংশ ব্রীজ কালভার্ট বিধ্বস্থ হওয়ার পাশা-পাশি সড়কের ভাঙ্গনের কারনে এলাবাসীর যাতায়ত ও যানবহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বন্যা পরবর্তী গ্রামীণ সড়ক গুলো সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় জনপ্রতিনিধিদের উপর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ গত ৫জুলাইর ভয়াবহ বন্যার শিকার হয়েছে। ঐসব গ্রামে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে শত শত কাঁচা ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে বানের ¯্রােতে ভেসে গেছে। বসত বাড়ী সহায়সম্বল হারিয়ে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। তীব্র খাদ্য সংঘটে পড়ে অনাহারে অর্ধহারে দিনাতিপাত করছে অনেকে। ২সপ্তাহ অতিবাহিত হয়ে গেলেও অনেকই অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।

রাজাপালং, রত্নাপালং, হলদিয়াপালং, জালিয়াপালং ও পালংখালী ইউনিয়নের শতাধিক মৎসঘের বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে যায়। ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের বীজতলা পানের বরজসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ।

এবারের বন্যায় ৫জনের মৃত্যু ছাড়াও অবিরাম বর্ষনে স্রোতের তীব্রতার ফলে অভ্যন্তরিন গ্রামীন সড়ক গুলো লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। উক্ত সড়কের ভয়াবহ ভাঙ্গনে বড় বড় আকারের গর্ত সৃষ্টি হয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে দুর দুরান্তের বাসিন্ধাদের মাইলের পর মাইল পায়ে হেটে যাতায়ত করতে হচ্ছে। বন্যা সবছেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার পালংখালী, হলদিয়াপালং, জালিয়াপালং ও  রত্না পালং ইউনিয়ন, এসব ইউনিয়ন গুলো নিন্মঞ্চলীয় এলাকা হওয়াতে বন্যার অধিক শিকার হতে হয়েছে ঐসব এলাকার বাসিন্ধাদের। হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ আলম বলেন, অঝুর ধারায় বৃষ্টির পাহাড়ী ঢল ও পশ্চিমের সাগরের জোয়ারের পানিতে একাকার হয়ে ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি হয়ে মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষতির কারনে হলদিয়ার মানুষ নানান সমস্যার সম্মুখিন হয়েছে। রূমখাঁ কুলাল পাড়া, মাতবর পাড়া, চৌধুরী পাড়া, ক্লাস পাড়া, মৌলভী পাড়া, জনাব আলী পাড়া বড়বিল এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকার গ্রামীন সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী বলেন, জালিয়াপালং উপকূলীয় অঞ্চল হওয়াতে বন্যায় ক্ষতির পরিমান বেশী, বানের পানিতে ভেসে গিয়ে এক স্কুল ছাত্রীর মুত্যু ছাড়াও ভেসে গেছে গাবাদি পশু হাসঁ মুরগী সহ প্রয়োজনীয় মালামল, পুরো বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক বসতবাড়ী।

বন্যার পরদিন থেকে উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী, রত্নাপালং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহ আলম চৌধুরী বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাড়ালেও এই পযর্ন্ত আর কোন জনপ্রতিনিধি উল্লেখযোগ্য হারে ত্রাণ বিতরণ করেনি। এই নিয়ে এলাকার বন্যাকবলিত সাধরন মানুষের মাঝে চাপাক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।