বদল…!

প্রকাশ: ১৭ জুলাই, ২০১৭ ০৫:৫৪

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


আলমগীর মাহমুদ :
তুমি কি সে আগের মতো আছো !  নাকি বদলেই গেছো ? বড়ই জানতে ইচ্ছে করে…
গানটি যে কেউর হৃদয় ছোঁয়া। পৃথিবীতে সব বদল মেনে নেয়া যায় ।  আপন মানুষের বদল মেনে নেয়া কঠিন, অসম্ভব।সব ভাগে শেয়ার আছে।  এই ভাগে মানুষ ১০০%কৃপন,স্বার্থপর।
উন্নয়নের জগতে বিধিটি বাম। ‘বদল বিনে আসে না উন্নয়ন ‘। সবুজ বিপ্লব এনেছিল কৃষিতে সমৃদ্ধি।  সমাজজীবনের বদলে এসেছিল ফ্রান্স রিভ্যূলেশন । সাম্য,মৈত্রী, ব্যক্তিস্বাধীনতা ছিল মুলমন্ত্র।
শিল্পের বদলে পৃথিবীবাসীর অর্জন শিল্প বিপ্লবের। কারখানায় পদার্পন ছিল এর চূড়ান্ত অর্জন। ঢেকি থেকে উত্তরণ ঘটে অটোরাইচমিলে তথা যন্ত্র জগতে।
“মানুষ মরে গেলে পচে যায়,
বেঁচে থাকলে বদলায়।
কারনে বদলায়,অকারনে বদলায়।
সকালে বদলায়,বিকেলে বদলায়,
সে শুধু বদলায়। “বদলানোই মানব জীবনের নির্মম সত্য।
বদল হউক আপন আপন প্রক্রিয়ায়।নিয়মতান্ত্রিক ধারার। তাতে নেই কারো আক্ষেপ, হা হুতাশ ও। বদল যখন সমাজদেহে বিষফোড়া তখন কি আর চোখে থাকে ক্লান্তির নিদ?
সংস্কৃতিতে বদল, নিজস্বতা হারানোর প্রাপ্তি ‘মন্দ ভাগ্যের’।  মন্দের ঘরে পাহারাদারিই এখন আমাদের ললাট লিখন।  ভুলের সাগরে ষ্টিমারের ড্রাইভার বনে আছি। কালচারাল হতে গিয়ে আনকালচারকেই কালচার বানিয়ে তার পীঠেই এখন আমরা।
আমরা ও বদল হয়েছি, হাফপ্যান্ট পরে ময় মূরুব্বীর সামনে শো ডাউন করে। কানে তার লাগিয়ে ডেমকেয়ারে। আদাব সালামের বদলে HI, Hello তে। বাবার বদলে’ ডেড্ডি, মাম্মার বদলে ‘মাম্মি’ডাকে। পরগাছা গাছ দখলে নিতে নিতে পরগাছাই বদলে দিয়েছে আসল গাছের পরিচয়।
গেল ঈদে বাসায় ভাগিনা ভাগিনি, ভাইপো ভাইঝি গেছে বদলে। সবাই ঈদগাহে গেলাম। এসে দেখি সালামের পর সালাম। প্রণামের পর প্রনাম। একবার আমারে। একবার মা,রে। একবার বাবারে। একবার ফুপারে ফুপিরে। সমানে সমানতালে। চেহারার দিকেও তাকাচ্ছে।
আমরা চুপচাপ। ভাইয়ের মেয়ে মেহেনাজ প্রথম শ্রেনির ছাত্রী। মুচকি হেসেই—-এতক্ষন সালাম করার পরও ব্যাগটাতো খালি…ব্যাগটাতো খালি..।
ওর সাথে আছে বোনের মেয়ে শাহেরীন। ও শুধু কৌশলী ভাষায় …দিবে..দিবে..।
না বুঝার ভানে আমরা। এবার ভাইয়ের মেয়েটা ডাক দিয়ে বলতেই রইল…’সালাম করলে সেলামী দিতে হয়’….’সালাম করলে সেলামী দিতে হয়’.
তারপরেও যখন বেওকুপ বেওকুপ ভাবে। তারা প্রচন্ড রকমের মন খারাপ করে। মনের অবস্থা চরমে। কমরু পাঁচশত টাকা এনে ভাইয়ের কাছে বলছে এই পাঁচশত টাকা পাঁচজনকে দেই?
ভাইকে বলতে শুনলাম, ‘অভ্যাস একবার হারিয়ে গেলে, ফেরত করা হবে অসন্ভব। তারা না শুনে মত,’চাই য়, খবরদার’।
তারা নানাবাড়িতে গেলে সবাইরে সালাম করে একজনে পেয়েছে ২২০ আরেকজনে ২৭০। বাসায় এসে আমাদের টাকা দেখায়। আর বলে। ওরাতো কিছু না বলেই টাকা দিয়েছে। তোমরা কেন দাও না?
তোমরা পঁচা…পঁচা…
এরপর থেকে ভিক্ষুক আসলে তাদেরও সালাম করা শুরু করে। এই সালাম টাকার। শ্রদ্ধার নয়।  সালাম শ্রদ্ধার মাধ্যম তারা ভুলে বেমালুম।
নানা বাড়িতে সালামের সেলামী পাওয়ায় আমরা যে সালামের বিনিময়ে টাকা দেয়া সিষ্টেম এর বিরুদ্ধে, এটা খারাপ সিষ্টেম তাহা আর বুঝানো গেল না।কেউ দিয়ে কেউ না দিয়ে, নিয়ম প্রতিষ্টা অসন্ভব ।
দোকানের সেলামী প্রবেশ করল সালামে। সালামকে ও আমরা বানিজ্যিক বানিয়ে শ্রদ্ধায় মুল্যমানহীন ! প্রজন্মের আদবের মাধ্যম
থাকতে দিলাম কই!
অবশেষে গান শুনিয়ে ইজি করার চেষ্টায়…..
গেয়েই গেলাম….”বন্ধু হতে চেয়েই আমি, শত্রু বলেই গন্য হলাম”….
লেখক:—-উখিয়া কলেজের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক।
alamgir83cox @gmail.com