সংবাদদাতা:

কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডিতে এক মাসে দুই খুনের ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দিয়েছে এলাকাবাসী।

বুধবার প্রদান করা স্মারকলিপিতে বলা হয়, কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসীর কারণে এলাকাবাসী অতীষ্ট। অত্যাচারে জনবীবন স্থবির। চিহ্নিত চক্রটি সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। মুক্তিপণ আদায়, গুম, হত্যাসহ নানা অপরাধকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে সংঘবদ্ধ চক্রটি। তাদের অতিসত্ত্বর গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা না হলে পুরো এলাকায় অশান্তির দাবানল জলবে।

মাত্র এক মাসের মাথায় তাদের এলাকার বদিউর রহমানের ছেলে মাদরাসা শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ও ছৈয়দ আহমদের ছেলে প্রবাস ফেরত যুবক ছৈয়দ করিমকে নির্মমভাবে খুন করা হয়। এ সব ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভয়ে মানুষ চলাফেরা করছেনা।

ঘাতকদের বিচার চেয়ে এলাকাবাসীর মানববন্ধন ও বিক্ষোভ।

এলাকাবাসী মনে করেন, আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় একের পর এক খুনের মতো জঘন্য ঘটনা সংঘটিত হয়ে যাচ্ছে। অার ঘাতকরা রয়ে যাচ্ছে বরাবরই অধরা। এ কারণে ঘটকরা আগামীতে আরো উৎসাহিত হবে বলে তাদের মন্তব্য।

স্মারকলিপিদাতারা অত্যন্ত দুঃখের সাথে উল্লেখ করেছেন, এলাকায় যারা হত্যাকান্ডসহ অপরাধকর্মের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছেন, প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন- তাদের বিভিন্ন মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকী দিয়ে যাচ্ছে অপরাধীচক্র। মেধাবী শিক্ষক সাইফুল ইসলামের ঘাতক এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী সাহাব উদ্দিন, ছৈয়দ করিমের ঘাতক নরপিশাচ ওসমান গনি তাদের অপরাধ কর্ম নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। যা চৌফলদন্ডিবাসী অবগত।

ঘাতকদের ছুরিকাঘাতে নিহত মাদরাসা শিক্ষক সাইফুল ইসলাম

সন্ত্রাসীরা এতই ভয়ংকর যে, দিনদুপুরে হত্যা, লুটপাট, ধর্ষণসহ নানা অপরাধ করে যাচ্ছে। ভয়ে কেই মুখ খোলেনা। খুনের শিকার পরিবারের সদস্যরা উল্টো জীবন নিয়ে হুমকীর মুখোমুখি। অসহায় পরিবারগুলো খুবই যন্ত্রণার দিন কাটাচ্ছে।

সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, এত অপরাধ করেও কেন সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার হয়না? তাদের শক্তির উৎস কোথায়? এলাকাকে বাসযোগ্য রাখতে হলে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। প্রয়োজনে ফাঁসির রশিতে ঝুলাতে হবে বলেও মনে করেন ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা।

জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেনকে স্মারকলিপি প্রদানকালে এহছানুল হক, আবদুস ছবিহ, শহিদুল হক, ছৈয়দ নূর, হাফেজ আহমদ, আহমদ হোসাইন, নুরুল আমিন, সাদ্দাম হোসাইনসহ এলাকার মান্যগন্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

জবাবে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

এদিকে চৌফলদন্ডিসহ আশ পাশের এলাকায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে জরুরি ভিক্তিতে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবী তুলেছে এলাকাবাসী। পাশাপাশি ইয়বা ব্যবসা, মাদকদ্রব্য বিকিকিনি বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনকে আরো বেশী সতর্ক হওয়ার আহবান করেছেন চৌফলদন্ডির বাসিন্দারা।