এম আবু হেনা সাগর, ঈদগাঁও
কয়েকদিন ধরে জেলার অন্যান্য স্থানের ন্যায় বৃহত্তর ঈদগাঁওতে প্রবল বর্ষণ আর পাহাড়ী ঢলের বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছিলো ঈদগাঁও বাজার সহ বিশাল এলাকার নিমাঞ্চল। সর্বশ্রেণি পেশার মানুষের দূর্ভোগ আর দূর্গতি চরম পর্যায়ে পৌছেছিলো। তবে দুয়েক দিন ধরে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় জেলা সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁও তথা ছয় ইউনিয়নের নিমাঞ্চল কিংবা গ্রামাঞ্চল থেকে চারদিন পর বন্যার পানি নিচে নেমে গেছে। তবে বেড়েছে দূর্ভোগ। এদিকে ঈদগাঁও ইউনিয়নের বৃহৎ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এলাকা দরগাহ পাড়ার প্রধান যাতায়াত সড়ক ও ঐতিহ্যবাহী বৃহত্তর মাইজ পাড়ার নাসি খালের কাঠের ব্রীজটি গেল বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জন ও যানচলাচল বন্ধ বললেই চলে। সরেজমিনের দেখা যায়, গেলো বন্যার ঢলের পানিতে বিশাল এলাকার লোকজন হাবু-ডুবু খেয়েছিলো। গ্রামীণ যোগাযোগ সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ার পাশাপাশি চলাচল অনিচ্ছিত হয়ে পড়ে। এতে করে নিদারুন কষ্টে ছিলো বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজন। পানিবন্দি এলাকার লোকজন চুলাই আগুন জ্বালাতে পারেনি কয়েক দিন। অনেকে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। আবার বহুজন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনও কাটাচ্ছে। বাড়ির গুছালো জিনিসপত্র বন্যার পানি তছনচ করে দিয়েছে। এদিকে বেশ কিছুদিন পূর্বে প্রচন্ড বৃষ্টিপাত আর ঢলের পানি নিমাঞ্চলের এলাকা থেকে নেমে যাচ্ছে। তবে সাধারণ লোকজনের দূর্ভোগ আর দূর্গতি বেড়েছে। অপরদিকে ঈদগাঁও ইউনিয়নের পালপাড়া, ভোমরিয়া ঘোনা, মাইজ পাড়া, চান্দের ঘোনা, কালিরছড়া, মাছুয়াখালী, জাগির পাড়া, সাতঘড়িয়া পাড়া, মেহেরঘোনা সহ বিভিন্ন গ্রামঞ্চল থেকে ঢলের পানি কমে গেছে। পাশাপাশি বৃহত্তর মাইজ পাড়া হয়ে ঈদগাঁও বাজার, বাসষ্টেশন সহ বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগের আরেক অন্যতম মাধ্যম ঐতিহ্যময় নাসি খালের উপর নির্মিত কাঠের সাঁকোটি গেল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এই নিয়ে বৃহত্তর এলাকাবাসী চলাচলের ক্ষেত্রে নিদারুন কষ্ট পাচ্ছে। যে ব্রীজ দিয়ে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থী, চাকুরিজীবি, কর্মজীবি ও শত শত পথচারী অনায়াসে যাতায়াত করত। কিন্তু সম্প্রতি সাঁকোটি ভেঙ্গে যাওয়ায় দুরর্বতি স্থান হয়ে দ্বিগুন টাকা খরচ করে প্রয়োজনীয় কাজকর্মে যেতে হয়। তবে এলাকাবাসীর যোগাযোগের সুবিধার্থে দ্রুত সময়ে এই সাকোঁটি নির্মাণের জোর দাবী জানান ব্যবসায়ী ছৈয়দ করিম সহ আরও অনেকে। অপরদিকে একই ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ দরগাহ পাড়ার প্রধান যাতায়াত সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় দশ সহ¯্রাধিক মানুষজন চরমভাবে ভোগান্তিতে পড়েছে যাতায়াত নিয়ে। কোন রকম কষ্ট করে হেঁটে পার হলেও যানবাহন চলাচল করতে না পারায় রোগী সহ নারীরা মহা বিপাকে পড়েছে বলে জানান ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি সেলিম। এদিকে এ সড়ক দিয়ে পূর্ব ভাদিতলা, দক্ষিণ ভাদিতলা, শিয়াপাড়া, হাসিনা পাহাড়, স্থানীয় দরগাহ পাড়াবাসী সহ বিকল্প সড়ক হিসাবে বহুদিন ধরে ব্যবহার করে আসছে ভোমরিয়াঘোনা আর রামু উপজেলার ঈদগড় আর নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারীর লোকজন। গেল বন্যায় লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া সড়ক আর পানিবন্দি লোকজনের মাঝে কেউ ত্রাণ সামগ্রী দেননি বলে জানান ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হাকিম নূকী। তিনি দেশ-বিদেশের এ প্রতিনিধিকে শুধুমাত্র জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসরিন সরওয়ার কাবেরী ভাঙ্গনকৃত সড়কটি পরিদর্শন করেছেন বলে জানান। অন্যদিকে জালালাবাদ ইউনিয়নে গত বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। রাবারড্যাম পয়েন্টের বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন আর ঈদগাঁও ফরাজী পাড়ার প্রধান যোগাযোগ সড়কের লরাবাক এলাকায় রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে ঐ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ। বন্যার পানি ইউনিয়নের জলদাস পাড়া, তেলিপাড়া, বাজারপাড়া, লরাবাক, পালাকাটা, বটতলী পাড়া, মোহনভিলা সহ নানা গ্রামাঞ্চল থেকে পানি নি¤œস্থরে চলে গেছে। ঐ সব এলাকার মানুষজন ব্যাপক কষ্টে দিনপার করেছে কয়েক দিন। ঠিক একই ভাবে পোকখালী, চৌফলদন্ডী, ইসলামপুর সহ রামুর ঈদগড় এলাকায় গেল বন্যার পানিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি বাড়িঘর প্লাবিত হয়ে পড়েছিলো। বর্তমান সময়ে গ্রামগঞ্জ থেকে ঢলের পানি কমে যাওয়ায় কর্দমাক্ত সহ নানা কারনে দূর্ভোগে পড়েছে পাড়া মহল্লার লোকজন। অবিলম্বে বৃহত্তর ঈদগাঁওবাসীর দিকে সু-নজর দেওয়ার প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন অসহায় এলাকাবাসী।