সিবিএন রিপোর্ট :

প্রাকৃতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক বা সাম্প্রদায়িক সংকটে উখিয়া উপজেলার মানুষের ভরসার এক জীবন্ত প্রতীক হলেন উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক সফল চেয়ারম্যান মাহামুদুল হক চৌধুরী। উখিয়া উপজেলার মানুষ যখনই সংকটে পড়েছেন সবার আগে তাদের কাছে ছুটে গেছেন মাহামুদুল হক চৌধুরী। দীর্ঘদিন গুরুত্বপূর্ন পদে না থেকেও নিঃস্বার্থ ভাবে যে কোন সংকটে অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোয় উখিয়ার সাধারন মানুষের কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ব্যক্তিতে উখিয়া উপজেলা পরিষদের সফলতম সাবেক এই চেয়ারম্যান। গত দুদিনে উখিয়া ইতিহাসের ভয়াবহ বন্যার সময় রাতের আধারে সবার আগে দূর্গতদের মাঝে তিনি পৌচেছেন। বন্যার পানিতে আটকে পড়াদের উদ্ধারের পাশাপাশি দূর্গতদের মাঝে খাদ্য ও খাওয়ার পানি সহ ত্রান সমগ্রী পৌছে দিচ্ছেন।

ভয়াবহ বন্যায় আশ্রয়হীন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন উখিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী। উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে রাতের অন্ধকারে নিজ উদ্যোগে ৬ হাজার মানুষের মাঝে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি বিতরন করেন সেই সাথে বন্যায় আটকে পড়া মানু্ষকে রাতের আধারে জীবন বাজিরেখে উদ্ধার করেছেন। সেই সাথে আশ্রয়হীন এসব মানুষকে নিজের বাড়িতে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখেন। তাদের পরের দিনেও রান্না করে খাবার পরিবেশন করেছেন।

সরকারের লাভজনক পদ বা জনপ্রতিনিধি না হয়েও মানবতার তাগিদে তার এগিয়ে আসাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দুর্গত মানুষরা। উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের কুলাল পাড়ার সৈয়দ হোসেন জানান বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে আকর্ষিক বন্যায় যখন শত শত মানুষ ঘরে আটকা পড়ে। সেই দূর্যোগে রাত ৮টায় সর্বপ্রথম মাহমুদুল হক চৌধুরী সাধারন মানুষের পাশে দাড়াতে ছুটে আসেন। তিনি রাতের আধারে নৌকা নিয়ে বন্যার পানিতে আটকাপড়া মানুষদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসেন।

রুমখা পালং এর জসিম উদ্দিন জানান, মাহামুদুল হক চৌধুরী রাত ভর নৌকা নিয়ে হলদিয়াপালং ইউনিয়নের বন্যা আক্রান্ত রুমখা বাজারপাড়া, চরপাড়া, চৌধুরী পাড়া, হাজী পাড়া, চৌকিদার পাড়া, তেলিপাড়া, কোলালপাড়া, বড়ুয়া পাড়া, জনাব আলী পাড়া ও মজাহন পাড়ায় উদ্ধার কাজের পাশাপাশি ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।

বৃহস্পতিবার সকালে ও দুপুরে নিজ উদ্যোগে বন্যা কবলিত এলাকায় ৬ হাজার মানু্ষের মাঝে খাদ্য ও পানি বিতরন করেন। আগামীকালও তিনি দূর্গতদের মাঝে সহযোগীতা অব্যহত রাখবেন।

হলদিয়া পালং আওয়ামীলীগ নেতা নূর মোহাম্মদ জানান মাহমুদুল হক চৌধুরী ১৯৯১ সালের ভয়াহ ঘূর্ণিঝড়, ৯৬ সালের ঘূর্ণিঝড়, ২০০৬ সালের বন্যায় নিজের ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে ত্রানসামগ্রী নিয়ে সবার আগে হলদিয়া পালং ও জালিয়া পালং এর দূর্গতদের মাঝে ছুটে গেছেন মাহামুদুল হক চৌধুরী।

জালিয়া পালং ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ শাহাজাহান জানান, আমাদের এলাকায় অনেক বড় বড় নেতা থাকলেও তারা কখনো দূঃসময়ে সাধারন মানুষের পাশে দাড়াননা। কিন্তু মাহামুদুল হক চৌধুরী সবার চেয়ে ভিন্ন। তারমতো উদার মনের ও পর উপকারী মানুষ সমাজে এখন আর দেখা যায়না।

রুমখা বড়ুয়া পাড়ার শংকর বড়ুয়া জানিয়েছেন, ২০১২ সালে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে বৌদ্ধমন্দির গুলোতে যখন হামলা চালিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছিলো তখন মাহামুদুল হক চৌধুরী জীবন বাজিরেখে বৌদ্ধ মন্দির রক্ষা করেছেন। ঐদিন মাহামুদুল হক চৌধুরী না থাকলে ৬ টি মন্দির ধ্বংশ করে দিতো হামলাকারীরা। চৌধুরী নিজের বৈধ অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীদের সাথে যুদ্ধ করে ৬টি বৌদ্ধ মন্দির রক্ষা করেছেন। এসময় সন্ত্রাসীদের হামলায় মাহামুদুল হক চৌধুরী পায়ে আঘাত পেয়েছিলেন।

যুবলীগ নেতা ইমাম হোসেন জানান, উখিয়ার জন্য মাহমুদুল হক চৌধুরী একটি ইতিহাস। তিনি যেমন উদার মনের মানু্ষ তেমনি তার সাহসের তুলনা হয়না। ২০১৩ সালে ও ২০১৫ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় যখন সারাদেশে যোগাযেগ ব্যাবস্থা অচল হয়ে পড়ে তখন মাহমুদুলহক চৌধুরীর দৃঢ় প্রচেষ্টায় উখিয়ার সাথে কক্সবাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রেখেছিলো।