শাহেদ মিজান, সিবিএন:
প্রবল বৃষ্টিতে কক্সবাজার জেলার অধিকাংশ এলাকায় বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। গত পাঁচ দিনের টানা বৃষ্টিতে এরই মধ্যে জেলার চকরিয়া, রামু, কক্সবাজার সদরসহ আরো কয়েক স্থানে পানির নিচে তলিয়ে গেছে জনপদ। এতে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন। অন্যদিকে বসতবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব ধরণের স্থাপনার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে বীজতলাসহ ফসলী জমি। এই বন্যার পরিস্থিতি সৃষ্টিতে মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীই মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এছাড়াও সাগরের পানি ঢুকেও অনেক স্থানে বন্যার উপক্রম হয়েছে। বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে পড়ে মহেশখালীতে একজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে অনেক মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টানা প্রবল বর্ষণের কারণে মাতামুহুরীর নদীর পানি উপচে চকরিয়া উপজেলার পৌসভার ৯নং ওয়ার্ড এবং সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, কৈয়ারবিল, লক্ষ্যারচর, বরইতলী, হারবাং, কোনখালী, ঢেমুশিয়া, খুটাখালী, ডুলাহাজারা, সাহারবিল পুরোসহ ১৭ ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় অন্তত দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বাঁকখালী নদীর পানি উপচে পড়ে রামু উপজেলার গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, কাউয়ারখোপ, জোয়ারিয়ানালা, দক্ষিণ মিঠাছড়ি, রাজারকুল ও ফতেখাঁরকুলে ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মইশকুম নামক স্থানে সড়ক পানিতে ডুবে থাকায় রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কযোগ পুরো বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও, চৌফলদন্ডী, খুরুস্কুল, ঝিলংজা, জালালাবাদ, পোকখালী, পিএমখালীসহ অনেক স্থান পানিতে ডুবে গেছে। এত প্রায় লক্ষাধিক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়ন, রাজাখালী, মগনামাসহ সবকটি ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। এসব স্থানের অনেক লোকজন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আশ্রয়কেন্দ্র ও ইউপি ভবনসহ বিভিন্ন উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।


চকরিয়া: মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে চকরিয়ায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েরছে। নদীর বাঁধ উপচে করে প্রবাহিত হচ্ছে ঢলের পানি। এতে উপজেলার শতাধিক গ্রামের অন্তত দু’লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। কোথাও কোথাও বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ ভেঙে পড়েছে। চকরিয়া-মহেশখালী সড়কের চকরিয়ার বাটাখালী পয়েন্টে সড়ক দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে থেকে যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ থাকে। তাই বাধ্য হয়ে লোকজন নৌকায় করে যাতায়াত করছে।
অন্যদিকে মাতামুহুরী নদীতে তীব্র বেগে নেমে আসার পাহাড়ি ঢলের পানির স্রোতে কাকারা ইউনিয়নের প্রপার কাকারা পয়েন্টের নদীতীরের ভাইরগ্যাতলার বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি নদীতে তলিয়ে গেছে। চিরিঙ্গা-কাকারা-মাঝেরফাঁড়ি সড়কের প্রপার কাকারা পয়েন্টের সড়কের বিশাল অংশ নদীতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। এছাড়াও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দিগরপানখালী পয়েন্টে তীব্র ভাঙনের কবলে পড়ে প্রায় ২০বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। দিগরপানখালী সড়ক কাম বেড়িবাঁধটি যে কোন মুহূর্তে ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পাগলির বিলস্থ ছড়াখালের একটি বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ছে। এতে বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিএমচর ইউনিয়নের কুরুইল্যারকুম পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বোর্ডেও বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ব্যাপকভাবে ঢুকে পড়ছে বানের পানি। বরইতলী ইউনিয়নের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।


খুটাখালীতে ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে খুটাখালীর ছড়ার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা ২/৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। খুটাখালীর ছড়া দিয়ে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত হওয়ায় বেড়িবাঁধের পূর্বপাড়া ও হাফেজখানা সংলগ্ন বিরাট একটি অংশ পানির প্রবল স্রোতে ভেঙ্গে গেছে। ভাঙ্গন এলাকা দিয়ে ছড়ার বন্যার পানি অনুপ্রবেশ করায় ৬নং ওয়ার্ডের পিয়াজ্জ্যাকাটা,হরইখোলা, পূর্বপাড়া, অফিসপাড়া, নাপিতপাড়া, চড়িবিল, দরগাহপাড়া, কিশলয় স্কুল, ফরেষ্ট অফিস, ৫নং ওয়ার্ডের মাইজপাড়া, হাফেজখানা, দক্ষিণ পাড়া, খুটাখালী উচ্চ বিদ্যালয়,৭নং ওয়ার্ডের জলদাশ পাড়া, উত্তর ফুলছড়ি এলাকার শত শত ঘরবাড়ী পানির নিচে তলিয়ে যায়। চট্টগ্রাম-কক্সবজার মহাসড়কের গ্রামীণ ব্যাংক পয়েন্ট দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচলে চরম বিঘœ সৃষ্টি হয়েছে। একইভাবে চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, কৈয়ারবিল, লক্ষ্যারচর, বরইতলী, হারবাং, কোনখালী, ঢেমুশিয়া, ডুলাহাজারা, সাহারবিলসহ ১৭ ইউনিয়ন এবং পৌরসভার অন্তত দুই লক্ষাধিক মানুষ বানের পানিতে ভাসছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, প্লাবিত এলাকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যেতে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জরুরী প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসন কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

পেকুয়ায় সড়কে পানি চলাচল। মানুষ চড়ছে ভ্যানে।

পেকুয়া: অতিবৃষ্টির কারেণে মাতামুহুরী নদী দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে এসে প্লাবিত হয়েছে লোকালয়। পেকুয়া সদর ইউনিয়নের পূর্ব মেহেরনামা, মোরার পাড়া ও শীলখালী ইউনিয়নের হাজীর ঘোনা, মাঝের ঘোনা, জারুলবনিয়া গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি।
এদিকে বরইতলি-মগনামা সড়কের ১কিলোমিটার অংশ (সালাউদ্দিন ব্রীজ এলাকা থেকে পঁহরচাদা মাদ্রাসা পর্যন্ত) পানিতে ডুবে থাকায় বন্ধ রয়েছে চকরিয়া-পেকুয়ার যান চলাচল। তবে যাত্রীরা সড়কের এ অংশটি পারাপার হচ্ছেন ভ্যানযোগে। এভাবেই পেকুয়া থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের সাথে যোগাযোগ করছেন হাজার হাজার মানুষ।
পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানি উপচে পড়ে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব মেহেরনামা ও শীলখালী ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা। সড়ক প্লাবিত হয়ে বন্ধ রয়েছে চকরিয়া-পেকুয়া সড়কে যান চলাচল।
কক্সবাজার সদর: পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে ঈদগাঁও’সহ সদরের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। বন্যার উপক্রম হয়ে পানিবন্দি মানবেতর জীবনযাপন করছে হাজার হাজার মানুষ। ঈদগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম ভোমরিয়াঘোনা, দরগাহ পাড়াসহ ৬/৭ টি গ্রাম; ইসলামাবাদের খোদাইবাড়ী, ওয়াহেদরপাড়া, হিন্দু পাড়ারসহ ৫ টি গ্রাম; জালালাবাদের লরাবাক এলাকায় বেড়িবাধ ভাঙনে মোহনবিলাসহ ৮/৯ গ্রাম, পোকখালী, ইসলামপুর এবং চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের প্রায় সব গ্রাম জোয়ারের পানি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এছাড়াও পিএমখালী, ঝিংলংজার অনেক গ্রামও পানিতে ডুবে আছে।


ঈদগাঁও বাজার রক্ষাবাঁধের উপর দিয়ে প্রবল বেগে ঢলের পানি উপচে পড়ে বাজারের উত্তর পাশেল বাঁশঘাটা ও অন্যান্য এলাকাগুলো পানিতে ডুবে গেছে। এতে চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বাঁশঘাটা ঝুলন্ত ব্রীজটি। ঈদগাঁও নদীর ঢলের পানি জলনাশী দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে বাধ ভেঙে পশ্চিম ভোমরিয়াঘোনা, চৌধুরীপাড়া, দরগাহ পাড়া, ঈদগাঁও বাজার এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন ২৭নং স্লুইচগেইটটি বন্ধ করে রাখায় উজান থেকে নেমে আসা পানি বের হতে না পারায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে ইউনিয়নের প্রায় ৫/৬ শত পরিবার পানিবন্দী।
জালালাবাদের চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদ জানান, জালালাবাদ ইউনিয়নে বেড়িবাধ ভাঙনে ও ঢলের পানিতে প্রায় ৭/৮ শত পরিবার পানিবন্দী রয়েছে।
কক্সবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম রহিমুল্লাহ জানান, পানিবন্দি মানুষগুলোকে সরিয়ে নিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদেরকে প্রয়োজনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
রামু: টানা বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে রামুতে বাঁকখালী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদ সীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি, ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়কসহ বেশ কয়েক রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। বর্তমানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তবে রাস্তাঘাটের পানিতে চলাচল সীমিত হয়ে পড়ায় বিভিন্ন পেশার পরিবারগুলো কাজকর্মে যেতে না পেরে এক রকম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মঙ্গলবার সকাল থেকে গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, কাউয়ারখোপ, জোয়ারিয়ানালা, দক্ষিণ মিঠাছড়ি, ঈদগড় ও রাজারকুল ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে।
রামু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম জানান, ভারি বর্ষনে সাত ইউনিয়নের নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সমুহ বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বর্তমানে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ধাপে ধাপে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষেত খামার, বিভিন্ন ধমীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান পানিতে ডুবে যায়। যেভাবে উজান থেকে পানি নেমে আসছে তাতে নদীর পানি আরও বাড়বে । এসব বিষয়ে নদী সংলগ্ন এলাকাগুলোর সার্বিক খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

মহেশখালী: অন্যদিকে প্রবল বর্ষণের ফলে মহেশখালী, উখিয়া ও টেকনাফে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বীজতলাসহ ফসলী জমি পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে। এতে চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মহেশখালীতে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে কাঁচা বাড়ীঘর ও ফসলি জমি। টানা ৪দিনের ভারী বর্ষণে মহেশখালী উপজেলার পৌরসভাসহ ৮ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। হোয়ানক ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম এর বাড়ীতে পাহাড়ী ঢলের পানি ডুকে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। সাবেক এই চেয়ারম্যান জানান, হোয়ানকের বড় ছড়ার উত্তর পাশে যে গাইড ওয়ালটি নির্মাণ করা হয়েছে; তা নিচু হওয়ায় পাহাড়ি ঢলের পানি দেওয়াল গড়িয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে বেশ কয়েকটি পরিবার।
স্থানীয়রা জানান, গাইড ওয়ালটি আরো উচ্চু করে দিলে, পাহাড়ি ঢলের পানি থেকে রক্ষা পাবে বেশ কয়েকটি পরিবার।
কালামারছড়া ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার ইকবাল চৌধুরী জানান, মোহাম্মদ শাহ ঘোনা এলাকার আব্দুর রহিম নামের এক ব্যক্তি বসতবাড়ীর দেওয়া ধ্বসে পড়ে। কোন প্রাণ হানির ঘটনা না ঘটলেও মানবেতর জীবন যাপন করছে ওই পরিবারটি। এছাড়াও কাঁচা রাস্তঘাট ভেঙে গেছে।
ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক জমির উদ্দীন জানান, ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের আহমদিয়া কাটা এলাকায় বেশ কয়েকটি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও কাঁচা রাস্তঘাট ভেঙে গেছে।


মাতারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জি এম ছমি উদ্দীন জানান, মাতারবাড়ী ইউনিয়নের মগড়েইল, ফুলজান মোরা, রাজঘাটসহ বেশ কয়েকটি এলাকা বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়। পৌরসভার ঘোনারপাড়া এলাকার বশিরের বাড়ীসহ বেশ কয়েকটি বাড়ী পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ধলঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান জানান, প্রবল বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে ধলঘাটার কয়েকটি গ্রামের সড়কের উপর পানি ওঠে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
বর্ষার মৌসুমের ধানের বীজতলা, পানের বরজ এর ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। বিল এর পান বরজ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গিয়ে ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
সার্বিক প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন মঙ্গলবার রাতে এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘চকরিয়ায় বন্যা পরিস্থিতি অত্যন্ত প্রকট আকার ধারণ করেছে। রামুতেও পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। সব স্থানের বন্যা কবলিত মানুষকে সহযোগিতা করা হবে। এরই মধ্যে চকরিয়ার জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অন্যান্য এলাকার জন্যও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগামীকাল (আজ) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শনে যাবো আমি।’