নুরুল কবির, বান্দরবান থেকে:

বান্দরবানে প্রবল বর্ষণে সাংঙ্গু,মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে লামা ও আলীকদমর উপজেলা। এ সব এলাকার পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। লামা উপজেলার চকরিয়া সড়কের বিভিন্ন জায়গার পানি প্রবাহিত হওয়ায় লামা ও আলীকদম উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। টানা বৃষ্টিতে বান্দরবান সদরের ইসলামপুরসহ কয়েকটি নিন্মাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়েছে ।

অন্যদিকে বান্দরবানের সঙ্গে রাঙামাটির সড়ক যোগাযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। পাহাড় ধসের কারণে বান্দরবানের সঙ্গে রুমা উপজেলারও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এদিকে, নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে লামা বাজারে পানি প্রবেশ করেছে। নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। লামা বাজারে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতঘরে পানি ওঠায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে লোকজন। মাত্র ২৫ দিনের ব্যবধানে লামায় আবারো জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। এবং আলীকদমেও একই অবস্থা। ভারি বর্ষণে দ্রত পানি উঠেছে। সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অল্প দিনের ব্যবধানে লামা বাজারে পানি ওঠায় সাধারণ মানুষ কষ্টের মধ্যে পড়েছে। লামা পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম জানান, লামা বাজারসহ পৌর এলাকা ৯টি ওয়াডে এখন পানির নিচে। সোমবার সকাল থেকে পানিবন্দি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। নৌকা দিয়ে মানুষ চলাচল করছে। শুধু পৌর এলাকায় প্রায় সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী মানুষের সংখ্যা বেশি হওয়ায় ত্রাণ, নিরাপদ পানি ও শুকনো খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে। এদিকে,লামা বাজার ব্যবসায়ী নেতারা জানান, যে পরিমাণ পানি হয়েছে তাতে শুধু বাজার ব্যবসায়ীদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হবে কয়েক কোটি টাকা। মাতামুহুরী নদীর গতিপদ পরিবর্তন ছাড়া বারবার সৃষ্ট এ বন্যা ঠেকানো সম্ভব নয়। এ রকম পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের আশ্রয়ের কোনো জায়গা নেই। লামা বাজারে একটি আশ্রয় কেন্দ্র করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি। এদিকে বান্দরবান রুমা সড়কের ওয়াই জংশনসহ বেশ কয়েকটি স্থানে পাহাড় ধসে পড়ায় এ সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগ সড়ক যোগাযোগ পুনঃস্থাপিত করতে চেষ্টা চালালেও ভারি বর্ষণের কারণে নতুন করে পাহাড় ধসে পড়ায় সড়ক চালু করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশিষ্ট কর্মকর্তারা। এদিকে পাহাড় ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে জেলা প্রশানস সতর্কতামূলক অবস্থান নিয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে জেলা প্রশাসন ও পৌর সভা কতুপক্ষ মাইকিং করা হচ্ছে। ভারি বৃষ্টি শুরু হওয়ায় রাতেও শহর এলাকা এবং এর আশপাশে নিম্নাঞ্চল আর পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকরীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস না করতেও অনুরোধ করা হচ্ছে।