বিশেষ প্রতিবেদক:

কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগরে প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে চলাচলের জন্য পাকা রাস্তা নির্মাণ করছে ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অধ্যয়ন ও গবেষণার কাজে আসা দেশী-বিদেশী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য আরো প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি ডরমিটরি। ইতোমধ্যে উক্ত উন্নয়ন কাজের জন্য গতমাসে ঠিকাদার নির্বাচনের পর কার্যাদেশও দেয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এসব উন্নয়ন কাজ শুরু হচ্ছে। আর এমনই সময়ে এসব উন্নয়ন প্রকল্প ভন্ডুলে স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্র শুরু করেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শনিবার বিকালে দরিয়ানগর এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ ডেকেছে স্থানীয় গ্রামবাসী।

গ্রামবাসীর মতে, প্রায় ২৪ বছর আগে শহর ও সাগরপাড়ের উচ্ছেদকৃত চার শতাধিক পরিবারকে দরিয়ানগর বড়ছড়া এলাকায় পূনবার্সনের পর ৯৭ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ৮০টি পরিবারকে নিয়ে আশ্রায়ণ প্রকল্প নির্মাণ করেন। এরপর এতদিন সেখানে কোন রাস্তাঘাট তৈরী বা উন্নয়ন করা হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূনরায় ক্ষমতায় আসার পর গত চার-পাঁচ বছরে এখানে একটি ব্রীজ, একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গ্রামে বিদ্যুতায়নের ব্যবস্থা করেন। পাশাপাশি গত দুই বছর আগে একটি ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসও প্রতিষ্ঠা করেন। সমুদ্র সীমা বিজয়ের ফসল ঘরে তুলতে দেশের সমুদ্র সম্পর্কিত অর্থনীতি বা ব্লু-ইকোনমি জোরদারে সরকারের যে পরিকল্পনা, তারই অংশ হিসাবে গড়ে তোলা হচ্ছে ক্যাম্পাসটি। এ ক্যাম্পাসের সুফল এখনই ভোগ করতে শুরু করেছে এলাকাবাসী। ইতোমধ্যে এলাকায় নতুন ও উন্নত মানের রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হয়েছে। আরো রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এলাকার দরিদ্র ও বেকার যুবক-যুবতিদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে এবং হচ্ছে। এই অবস্থায় ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ, ডীন প্রফেসর ড. নুরুল আবছার খান ও রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর পাহাড় কাটার অভিযোগে মিথ্যা মামলা রুজু করেছে।

স্থানীয় সমাজ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ ইসমাইল অভিযোগ করেন, রাস্তা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মিথ্যা অভিযোগে এমন মামলা করেছে।

তিনি সংশ্লিষ্টদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন- কেউ উন্নয়ন কাজ বানচালের চেষ্টা করলে গ্রামবাসী সম্মিলিতভাবে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে।

এদিকে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন- পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ে পড়ালেখা ও গবেষণার জন্য স্থাপন করা একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পাহাড়কাটার অভিযোগ অমূলক। তিনি বলেন- রাস্তা বা ডরমিটরি নির্মাণের জন্য এক ইঞ্চি পাহাড়ও কাটা হবে না এবং কাটার প্রয়োজনও নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়কে জমি বরাদ্দ দেয়ার পরে নয়, আগেই উক্ত এলাকায় পাহাড় কাটা হয়েছে বলে জানান উপাচার্য।