বান্দরবানে মং পু মারমা অপহরনের ১ বছর

নুরুল কবির,বান্দরবান থেকে :

বান্দরবান সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা মং পু মারমা অপহরনের এক বছর পুর্তি উপলক্ষে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার রাজবিলা ইউনিয়নের জামছড়ি বাজার এলাকায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা। বান্দরবান সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পাই হ্লা অং মারমা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মং ক্য চিং চৌধুরী, যুগ্ন সম্পাদক লক্ষি পদ দাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক অজিত দাশ, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক মং হ্নৈ চিং মারমা, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তিং তিং ম্যা মারমা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব চৌধুরী, সদর ইউপি চেয়ারম্যান সা চ প্রু মারমা, রাজবিলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ক্য অং প্রু মারমা, ছাত্রলীগ নেতা ম্যা সাইং নু মারমা, মং চ সিং মারমা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় বক্তারা বলেন, তিন পার্বত্য জেলায় সন্তু লারমার সশস্ত্র বাহিনীরা বছরে ৪ শত কোটি টাকা চাঁদাবাজী করে। চাঁদা না দিলে খুন। পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের কাছ থেকে তোলা চাঁদাবাজীর এই টাকা দিয়ে সন্তু লারমাসহ তার নেতারা আরাম আয়েশে থাকেন। তাদের ছেলে মেয়েদের বিদেশে পাড়া-লেখা করায়। জুম্মো জাতিস্বত্তার কথা বলে তারা পাহাড়ে তারা বিভেদ ও অশান্তি সৃষ্টি করে জাতিকে দাবিয়ে রাখতে চায়। তারা পাহাড়ী কোন ছেলে-মেয়ের হাতে কলম তুলে দিতে পারেনি । কলমের বদলে তুলে দিয়েছে অস্ত্র । আর্দশ জাতি গঠনের শিক্ষা না দিয়ে তারা সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজী করার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। শান্তি বাহিনীর সৃষ্টির শুরু থেকে এ পর্যন্ত তারা শুধু লুট করেছে। তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলে নিরিহদের প্রাণ লুট, নয়তো মোটা অংকের টাকা লুট। লুট করা ছাড়া তারা পাহাড়ী কোন জাতির আর্ত সামাজিক উন্নতি ও অর্থনৈতিক মুক্তি জন্য কিছুই করতে পারেনি।

আজ সন্তু লারমাসহ জেএসএস নেতা-কর্মীদের মুখোমুখি হওয়ার সময় এসেছে। তাদের প্রশ্ন করুন জনসংহতি সমিতি পাহাড়ী কোন জাতির জন্য কি করেছেন ? কার স্বার্থের জন্য তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও চাঁদাবাজী করছে। পাহাড়ের উন্নয়নকে কেন তারা বাঁধাগ্রস্ত করছেন। পাহাড়ে উন্নয়ন হলে জাতি শিক্ষিত ও উন্নত হবে, এটা সন্তু লারমারা চান না কেন ? অস্ত্রের ভয়ে আর মাথা নীচু করে থাকার কোন প্রয়োজন নেই। মং পু অপহরনের পর জামছড়ির প্রতিটি পরিবার এখন প্রতিবাদী কন্ঠস্বর। জামছড়ির মতো পাহাড়ের যেখানে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজী সেখানে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। পাহাড়ের প্রত্যকটি এলাকা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হলে সন্ত্রাসীরা বান্দরবানে স্থান পাবে না। বক্তারা আরো বলেন, পাহাড়ে সম্প্রীতি রক্ষার জন্য বীর বাহাদুরের বিকল্প নেই। বীর বাহাদুর সন্ত্রাসকে পশ্রয় দেয় না। তিনি সব সময় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পার্বত্য জেলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালি করার জন্য বীর বাহাদুরকে আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী করার জন্য বক্তারা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বক্তারা অপহৃত মং পু মেম্বারের অপহরণ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান। উল্লেখ্য ২০১৬ সালের ১৩ জুন রাতে মং পু মেম্বারকে জামছড়ির তার নিজ বাসা থেকে অস্ত্রের মুখে দুর্বৃত্তরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। এক বছর পার হলেও এখনো পর্যন্ত তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।