এম.এ আজিজ রাসেল :

ব্যক্তির পছন্দ এবং ফ্যাশন সচেতনতার কারণে বিভিন্ন সময়ে পোশাকের ধরনে ভিন্নতা এসেছে। বর্তমান সময়ে রেডিমেড পোশাকের চাহিদা বেশি থাকলেও দর্জির হাতের তৈরি পোশাকের আবেদন কোনোভাবেই হ্রাস পায়নি। অনেক ফ্যাশন সচেতন মানুষ নিজের পছন্দ এবং মাপমতো পোশাক বানিয়ে নিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এক্ষেত্রে ভরসা দর্জি দোকানগুলোই।

পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে দর্জি বাড়িতে। সেলাই-সুতা, কাটছাটে কর্মব্যস্তায় নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের। যেন দম ফেলার ফুসরত নেই কারো। ইতোমধ্যে অনেক টেইলার্স ২০ রোজা থেকেই অগ্রিম অর্ডার নেয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন। কোথাও কোথাও বিশেষভাবে অর্ডার নিলেও তার জন্য গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক। শহরের তরুণী টেইলার্স, মীম টেইলার্স, সীমা টেইলার্স, ফ্যাশন টেইলার্স, জিন্স কর্ণার, ডিসেন্ট টেইলার্স, বস টেইলার্স, ফেমাস টেইলার্স ও রয়েল টেইলার্স ঘুরে দেখা যায়, রোজা শুরুর আগে থেকে ঈদের পোশাক তৈরির ব্যস্ততা শুরু হয়ে হয়েছে। রোজা শুরুর পর তা বাড়তে শুরু করে। ঈদের আগে বাড়তি কাজের চাপের সঙ্গে একটু বাড়তি আয়েরও সুযোগ থাকছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। ফ্যাশন সচেতন তরুণীদের কাপড় সেলাইয়ে প্রথম পছন্দ এ. ছালাম মাকেটস্থ তরুণী টেইলার্র্স। রোজার প্রথম দিন থেকে এখানে মহিলাদের ভীড় জমে। এখানকার ডিজাইন ও মনকাড়া কারুকাজের প্রতি মহিলাদের আস্থা বেশি বলে জানা গেছে। তাছাড়া এখানে এসে কেউ কখনো প্রতারিত হয়নি। তরুণী টেইলার্সের কর্ণধার মোঃ বেলাল জানান, রোজার প্রথম থেকেই কাজের চাপ বাড়তে শুরু হয়েছে। কারিগরদের প্রতিদিনই অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। যতদিন যাচ্ছে এই চাপ ততই বাড়ছে। চাঁদ রাত পর্যন্ত ব্যস্ততা থাকবে। তাই রেগুলার গ্রাহক ছাড়া এখন আর অন্যদের কাজের অর্ডার নিতে পারছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে পুরুষদের দৌড়ঝাপ বেশি রুয়েছে জিন্স কর্ণার, রয়েল টেইলার্স ও ডিসেন্ট টেইলার্সে। জিন্স কর্ণারের সত্বাধিকারি অংসেন ও তার ছোট ভাই মংবাসেন জানান, এখন কাজের প্রচুর চাপ। এবার ব্যবসাও ভাল হয়েছে। বর্তমানে অর্ডার নেয়া বন্ধ রয়েছে। তবে অতি পরিচিতদের অর্ডার শর্ত সাপেক্ষে নেয়া হচ্ছে।

তরুণী টেইলার্সে সেলোয়ার কামিজ সুতি ৩৫০ টাকা, জর্জেট আস্তর ৫৫০ টাকা, আনারকলি ১২০০ টাকা, গ্রাউন সেট ১২০০-১৩০০টাকা, দেশি বিদেশী নানা ডিজাইনের কাপড়সহ বোরকা সেলাই নেয়া হচ্ছে ৩৫০০-৪৫০০ টাকা পর্যন্ত। অন্য টেইলার্স গুলোতেও ভিন্ন ভিন্ন দাম নেয়া হচ্ছে। এছাড়া পুরুষ টেইলার্স গুলোতে শার্ট ৩৫০-৪৫০ টাকা, প্যান্ট ৪৫০-৫০০, পাঞ্জাবী ৪০০-৪৫০ টাকা ও পায়জামা ৩৫০-৪০০ টাকা করে সেলাই করা হচ্ছে।

কক্সবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মিথিলা, জিনাত ও শারমিন আক্তার জানান, অনেক আগেই তাদের পছন্দে পোশাক তরুণী টেইলাসে সেলাই করতে দিয়েছেন। এই টেইলার্সে বছরজুড়ে তাদের পোশাক সেলাই করতে দেন। এখানকার ডিজাইন ও কারিগরদের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। জিন্স কর্ণারে শার্ট-প্যান্ট সেলাই করতে আসা ছৈয়দ আলম নামে এক ক্রেতা জানান, প্রতি বছর তিনি ঈদে সেলাই করা কাপড় পরেন। তাই পিছ কিনে দেরি না করে এখানে সেলাইয়ের অর্ডার দিতে ছুটে এসেছি।