শাহেদ মিজান, সিবিএন:
ধূমপানের পক্ষে প্রচারণা চালানো নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সে নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ‘বিড়িখোর’দের নিয়ে মানববন্ধন করেছে বিড়ি কোম্পানিগুলো। গতকাল রোববার বিকালে কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন করে তারা। মানববন্ধনটির শ্লোগানটি ছিলো সিগারেট কোম্পানি গুলোর বিরুদ্ধে। তবে পুরো অবস্থান ছিলো সরকার বিরোধী। সিগারেট কোম্পানি বিরুদ্ধে ‘বিড়িখেকো’দের ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ তোলা হলেও তাদের মূল এজেন্ডা ছিলো বাজেটে বিড়ির উপর কর বৃদ্ধির প্রতিবাদ! কৌশলে এই প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে অর্থমন্ত্রীসহ পুরো সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন তারা। এই মানববন্ধনটিতে ছিলো ১০/২০ জন লোকজন। যারা সবাই অশিক্ষিত শ্রমিক। তবে এদিকে ‘বিড়িখোর’দের দোহাই দিয়ে করা এই মানববন্ধন দেখভাল করেছেন বিড়ি কোম্পানির লোকজন।
অন্যদিকে মানববন্ধনের পাশাপাশি এক সংবাদ সম্মেলনের কথাও জানান তারা। এই সংক্রান্ত একটি লিখিত বক্তব্য পেশ করা হলেও কোনো সাংবাদিককে নিয়ে বসেনি। এই ব্যাপারে উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক জানতে চাইলে তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি তারা।
বিড়ি কোম্পানিগুলো এই দুঃসাহী ও বিতর্কিত কর্মকান্ড নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। অনেকে প্রকাশ্যে ক্ষুব্ধতা প্রকাশ পেলে তড়িঘড়ি শেষ করে কেটে পড়ে বিড়ি কোম্পানির ওইসব লোকজন।
সংবাদ সম্মেলনের জন্য করা লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, … বিড়ি কোম্পানির আজ খুবই নিদারুন কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করছেন। কোম্পানিগুলো আজ বাজেটের কালো থাবায় শেষ হয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১২০টি বিড়ি কোম্পানি চরম বিপর্যয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাাঁড়িয়েছে বেনসন সিগারেটের দাম সহজে বাড়ে না। কিন্তু বিড়ি দাম ৩-৪ গুণ দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
আরেক স্থানে লেখা হয়েছে, কি আজব রাষ্ট্র, আজব আমার দেশ। আমি স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। কিন্তু স্বাধীনচেতা হয়ে বিড়ি সেবন করতে পারবো না? দেশটা কি অর্থমন্ত্রীর বেড়াজালে বিদেশী প্রভুদের লিখে দিবো? সেটা আমাদের প্রশ্ন। পাশের দেশ থেকে চোরাই পথে অনায়সে আনা হচ্ছে সিগারেট। এভাবে হলে আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে আমরা বিড়ি খেতে পারবো কিনা জানিনা। আমাদের দেশটা সত্যি সেলুকাস।
বিড়ির পক্ষে ও সরকারের বিরুদ্ধে এমন বিতর্কিত মন্তব্যে উপস্থিত সাংবাদিকেরা মানববন্ধন আয়োজককারী বিড়ি কোম্পানির লোকজনের কাছে জানতে চাইলে তারা সটকে পড়ার চেষ্টা করেন।
জানা গেছে, মানববন্ধনে অংশ নেয়া লোকজনকে টাকার বিনিময়ে ভাড়া করে এনেছে বিড়ি কোম্পানিগুলো। নাম প্রকাশ্যে অংশ নেয়া কয়েকজন এই কথা স্বীকার করেছেন।