শফিক আজাদ, উখিয়া :

পবিত্র রমযানের ঈদের বাজারকে টার্গেট করে মিয়ানমারের অর্ধ শতাধিক কারখানা থেকে তৈরীকৃত কোটি কোটি টাকার মরণনেশা ইয়াবা বড়ি সাগর পথ দিয়ে পাচারের হয়ে যাচ্ছে। স্থল পথে কড়াকড়ি আরোপ হওয়ায় পাচারকারী সিন্ডিকেট সাগর পথকে এবার নিরাপদ রুট হিসেবে বেচে নিয়েছে। মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসা এসব ইয়াবা ট্টলার যোগে বঙ্গোপসাগর হয়ে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন ঘাঠে উত্তোলন করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে পাচারকারীরা। ২০১৪সালের জুলাই মাসে টেকনাফে ইয়াবা পাচারকারীদের সাথে বন্দুক যুদ্ধের ঘটনায় টেকনাফে র‌্যাব, কোষ্টগার্ড, পুলিশের হাতে ৬ জন ইয়াবা গড ফাদার নিহত হলেও ইয়াবা পাচার থেমে নেই।

জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে প্রতিনিয়ত পাচার হয়ে আসছে এ দেশে ইয়াবার চালান। এসব ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যদের সাথে কয়েক দফা বন্দুক যুদ্ধের ঘটনাও ঘটেছে। আহত হয়েছে একাধিক বিজিবি ও পুলিশ সদস্য। ২০১৪সালে নিহত হয়েছে ইয়াবার গডফাদার নুর মোহাম্মদ, জাহেদ হোসেন জাকু, ফরিদ আলম, আমিন মাঝি, মোঃ কালু, জহির আহমদসহ ৬ জন। গেল সাড়ে ৫ মাসে বিজিবি, পুলিশ, কোষ্টগার্ড ও র‌্যাব সদস্যরা পৃথক অভিযান চালিয়ে প্রায় শত কোটি টাকার অধিক মূল্যের ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বর্তমানে সাগর পথ ছাড়াও কক্সবাজার ও বান্দরবান সীমান্তের অর্ধশতাধিক পয়েন্টে মরণ নেশা ইয়াবা পাচার অব্যাহত রয়েছে। আর এতে রোহিঙ্গাসহ জড়িত রয়েছে প্রায় অর্ধহাজার নারী-পুরুষ। যার ফলে সীমান্ত এলাকা এখন ইয়াবার স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। সীমান্তে দায়িত্বে নিয়োজিত বিজিবি, র‌্যাব, কোষ্টগার্ড ও পুলিশ সদ্যসরা একের পর এক অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ও বিভিন্ন মাদক দ্রব্যের চালান উদ্ধার করতে পারলেও শীর্ষ ইয়াবা পাচারকারীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকায় কোন মতেই ইয়াবাসহ মাদক পাচার থামছে না। যার কারনে সীমান্তে দায়িত্বে নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন ইয়াবা প্রতিরোধ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের শতাধিক নেতাকর্মী এ কারবার নিয়ন্ত্রণ করলেও তাদের গায়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আচঁড় লাগছে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রণীত ইয়াবা পাচার কারীর তালিকা অনুযায়ী র‌্যাব-পুলিশ, বিজিবি যৌথ এবং পৃথক অভিযান চালিয়ে ইয়াবা পাচারকারীদের ধরপাকড় শুরু করলেও অদৃশ্য কারণে তা থমকে থাকায় পাচারকারীরা ফের বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ঈদের সময় আগত পর্যটকদের মধ্যে কেউ ইয়াবা আবার কেউ মাদক সেবনের মাধ্যমে আনন্দ উপভোগ করে থাকে। ওইদিন কক্সবাজার সহ বিভিন্ন স্থানে ভীড় জমান দেশি-বিদেশী লোকজন। তাদের চাহিদা মেঠানোর জন্য প্রয়োজন হয়, প্রতিটি হোটেল-মোটেল মালিকদের কোটি কোটি টাকার ইয়াবা ও মাদক। যারই ধারাবাহিকতায় এসব চাহিদা মেঠাতে হোটেল-মোটেল মালিকেরা সীমান্তের পাচারকারীর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে যাওয়ায় পাচারকারীরা সড়কপথ কে ঝুকিপূর্ণ মনে করে নিরাপদ রুট হিসেবে বেঁচে নিয়েছে সাগরপথকে। সাগরপথ দিয়ে কোটি কোটি টাকার মজুদকৃত ইয়াবা ও মাদক পাচারের হয়ে যাচ্ছে জানিয়েছেন টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপ এলাকার বাসিন্দা নুর বশর। কোস্টগার্ড একটু আন্তরিক হলে সমুদ্রপথে ইয়াবা ও মাদকের চালান রোধ করা সম্ভব হবে।

কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর ইকবাল আহমেদ বলেন, ইয়বা ও মাদকের চালান রোধে বিজিবি’র তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।