প্রেস রিলিজ :

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে শনিবার ১০ জুন মাসিক পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌফিক আজিজ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কনফারেন্স এর শুরুতে মোঃ তৌফিক আজিজ স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনা অনুসরনপূর্বক, নির্দেশনায় উল্লেখিত এজেন্ডাসমূহ ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করে, কনফারেন্সে উপস্থিত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের মতামত গ্রহণপূর্বক এজেন্ডা ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌফিক আজিজ তার বক্তব্যে বলেন, আদালত কতৃক ইস্যুকৃত পেন্ডিং প্রসেস সমূহের তালিকা প্রতি মাসের শেষে আদালতে দাখিল করার জন্য সুস্পষ্ট আইন থাকা স্বত্বেও তা দাখিল করা হচ্ছেনা। ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিত পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্সসমূহে এই বিষয়ে বার বার নির্দেশনা দেওয়া স্বত্বেও নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের পুরনো ওয়ারেন্টমূলে অনেক সময় নিষ্পত্তিকৃত মামলার অনেক আসামিও ধরে আনা হয়। এর ফলে অনেক সময় আদালতে নথি না থাকায় আসামিদের বিনা কারনে জেল হাজতে থাকতে হয়। তিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রতি কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারন করে বলেন, আইনের বিধান অমান্য করলে কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। তাছাড়াও বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেটগণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং আদালত চত্ত্বরের নিরাপত্তা বিধানের জন্য মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের সুস্পষ্ট নির্দেশনা উল্লেখপূর্বক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সদর থানা বরাবরে একাধিক চিঠি প্রেরণ করা হলেও আদালত চত্ত্বরে অবৈধ ভ্রাম্যমান দোকানসমূহ উচ্ছেদের বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এবং বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেটদের নিরাপত্তা বিষয়ে যথাযথ তদারকি না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। বিচারের জন্য মামলা দ্রুত প্রস্তুত করার লক্ষ্যে পুলিশ রিপোর্ট ও থানায় যে সকল সি.আর মামলা তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয় সে সকল মামলার তদন্ত প্রতিবেদন, ইস্যুকৃত সমন/ওয়ারেন্ট/ক্রোকী পরোয়ানা দ্রুত জারি করে আদালতে প্রেরণ করার জন্য কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেন। তাছাড়া জখমীসনদ সমূহ কম্পিউটার টাইপ করার জন্য সিভিল সার্জনের প্রতিনিধিকে নির্দেশনা প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আফরুজুল হক টুটুল বলেন, পুলিশ আদালত চত্বরের হকার উচ্ছেদ করে নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া। তাছাড়া, রিমান্ড বিষয়ে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা বিষয়ে ইতিমধ্যে সকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। পেন্ডিং প্রসেসের তালিকা নিয়মিত প্রেরণের জন্য ব্যবস্থা নিবেন মর্মে তিনি জানান।

কক্সবাজারের পাবলিক প্রসিকিউটর মমতাজ উদ্দিন আহমদ বলেন, পুলিশ সমন, ওয়ারেন্ট এবং হুলিয়া ঠিকমত জারি না করার কারনে মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত হতে সময় লেগে যায়। পুলিশকে শুধু জি.আর. মামলা নয়, সি.আর মামলার তদন্ত ও প্রসেস জারির উপরও সমান গুরুত্ব দিতে হবে।

কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জনাব মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, এই দেশ আমাদের সকলের। এই দেশের মানুষের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।

কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিন তার বক্তব্যে, পুলিশ যে সকল সাক্ষীদের হাজির করে, সেই সকল সাক্ষীদের আসামীপক্ষ যাতে হুমকি দিতে না পারে, তার জন্য সাক্ষীদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরী মর্মে মত প্রকাশ করেন।

সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ এবং সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও সম্মেলনের ফোকাল পার্সন জনাব তৌহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জনাব মোঃ নেজাম উদ্দিন, জনাব মোঃ আলাউল আকবর, জনাব মোঃ সিরাজ উদ্দিন, জনাব রাজীব কুমার দেব, বেগম নুসরাত জামান। তাছাড়া বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা জনাব সুশান্ত প্রসাদ চাকমা, জনাব আলমগীর কবির, জনাব তারেক আজিজসহ স্টেশন কমান্ডার (কোষ্ট গার্ড) নুরুজ্জামান এবং বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।