শফিক আজাদ, উখিয়া:

উখিয়া ভেজালবিরোধী অভিযানে ভাটা পড়েছে। রযমানের শুরুতে যেভাবে ঢাকঢোল পিটিয়ে ভেজালবিরোধী অভিযান শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু এখন তা আর চোখে পড়ছে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ভেজালমুক্ত খাবার খাওয়ানোর দেয়া প্রতিশ্রুতিও ভেস্তে যেতে বসেছে। সন্দেহাতীতভাবেই এ পরিস্থিতিকে রোযাদাররা দুঃখজনক হিসেবেই উল্লেখ করতে চায়। কেননা যখন প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তখন জনমনে যে স্বস্তি লক্ষ্য করা গিয়েছিল তা এখন নেই। যদিও স্বাস্থ্য বিভাগ এবং উপজেলা প্রশাসন বললেন ভেজালবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান বন্ধ হয়নি। এটি চলমান রয়েছে।

সুত্রে জানা গেছে, বিশুদ্ধ খাদ্য অধ্যাদেশ, ১৯৫৯ (সংশোধিত ২০০৫)-এর ৬ (ক) ধারা অনুযায়ী সব খাদ্যদ্রব্য ভেজালমুক্ত হতে হবে। এমনকি খাদ্যদ্রব্যে কোনো ধরনের ভেজাল দেয়া হলে এই ধারায় ভেজালকারীকে অর্থদ-কারাদ- অথবা উভয় দ-ে দ-িত করা যাবে। অথচ এর চেয়ে পরিতাপের আর কী হতে পারে যে, খাদ্যে ভেজাল দেয়া ব্যবসায়ীদের কাছে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে এমন পরিস্থিতিও হয়েছে যে, রমযানের ইফতারি থেকে শুরু করে সহ নিত্যপণ্যে খাবারে ভেজাল দেয়াটাই স্বাভাবিক! এটা ঠিক যে, ভেজাল প্রতিরোধে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ যৌথ ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ভেজালবিরোধী অভিযান চালিয়ে আসছে। আর এসব অভিযানের ব্যাপক সফলতারও দৃষ্টান্ত রয়েছে উখিয়ায়। সর্বশেষ রযমানের শুরুর দিন উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ যৌথ ভাবে উখিয়া সদর, কোটবাজার, মরিচ্যা বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ভেজালবিরোধী অভিযান শুরু করেছিল। আর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মূল উদ্দেশ্য ছিল মূলত রমযানের ইফতারি ও খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধ করা। কিন্তু রমযানের আর দেখা যায়নি এই ভেজাল বিরোধী অভিযান। হঠাৎ করেই তা বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে উখিয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ষ্টেশনে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা ইফতারি থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীতে রঙ মাখানো এবং ভেজাল মালামাল মিশিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের প্রবীণ মুরব্বি আলী আহমদ (৫০) বলেন, এভাবে অভিযান বন্ধ হয়ে গেলে আবারো একশ্রেণির ব্যবসায়ী তাদের পুরনো স্বভাবে ফিরে যেতে উদ্যত হবে। আর মানুষকে ভেজাল খাদ্য খাওয়াতে বাধ্য করবে। উখিয়ার সচেতন মহলের দাবী আবারো এই অভিযান পরিচালনায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। যার মাধ্যমে জনমনে যে শঙ্কার উদ্রেক হয়েছে তা দূর হবে।

উখিয়া সেনিটারী ইন্সেপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক নুরুল আলম জানান, একশ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী তাদের মুনাফার আশায় মানুষকে জিম্মি করবে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মনে রাখা দরকার, ভেজাল খেয়ে প্রতিনিয়ত মানুষ নানারকম রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের তুলনায় চিকিৎসা ব্যয়ও কম নয়। তাই ভেজাল পণ্য বিক্রি করা মারাত্মক অপরাধ। তিনি বলেন, শ্রীঘ্রই ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হবে উখিয়া।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন, ভেজাল খাদ্য বিক্রির খবর পাওয়া মাত্র অভিযান পরিচালনা করা হবে। কারণ রমযানের পূর্বে মাইকিং করে এসব ব্যবসায়ীদের ভেজাল পণ্য বিক্রির ব্যাপারে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে।