সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও:
চকরিয়া উপজেলার খুটাখালি খাস ঘোনাতে নির্বিচারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে রাবারড্যাম ছড়া তীরবর্তী বাসিন্দাদের বসতবাড়ি ফসলি জমি ও খাসঘোনা গ্রাম রক্ষা বাঁধ ধসের আশংকা দেখা দিয়েছে। বিলিন হয়ে নি:স্ব হচ্ছে মানুষ। প্রশাসনের নির্বিকার আচরনে বেঁচে থাকার শেষ আশ্রয়স্থল হারিয়েছেন অনেকে। খুটাখালি ইউনিয়ন অধিনস্থ রাবারড্যাম খাস ঘোনাতে বালির ব্যবসা এখন রমরমা। ব্যবসায়ীরা তাদের বালি রেখে সরকারি সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে।

একটি সূত্র জানায়, রাবারড্যাম খাস ঘোনাতে বালি ব্যবসায়ীরা সরকারি সম্পত্তি দখল করে রমরমা ব্যবসা করে গেলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও কর্তৃপক্ষ কেউ কিছু বলছে না। এরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারছে না।

এমনকি সড়ক কেটে সমান করে সেখানে বালু উঠিয়ে রাখছে। বালির সাথে ওঠা পানি গড়িয়ে গিয়ে সড়ক ভেঙ্গে দেবে যাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কজন সচেতন ব্যক্তি জানান, প্রভাবশালী একটি মহলের মদদে এরা বালি উঠিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিহিত ব্যবস্থা নেয়া একান্ত জরুরি বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

সূত্র জানায়, খাস ঘোনাতে নির্বিচারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে খুটাখালী ছড়ার ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে ইউনিয়নের জনবহুল রাবার ড্যাম সড়ক। ছড়া তীরবর্তী ৭ গ্রাম বাসি রয়েছ চরম ঝুঁকিতে। চলতি বর্ষায় ভাঙ্গন এলাকা দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। যার কারনে সংশ্লিষ্ট এলাকার ৫ শতাধিক পরিবারের লোকজনের মধ্যে এখন বিরাজ করছে চরম আতংক। সর্বস্ব হারানোর ভয়ে দিন কাটছে ঐ সব গ্রামের শত শত পরিবারের। যার কারনে এ বেহাল দশা বিরাজ করছে বলে এলাকাবাসির অভিযোগ।

স্থানীয় লোকজন জানান, বালু উত্তোলনের ফলে ১কি:মিটারের এ রাস্তাটির প্রায় অংশ নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। ১ শ মিটার রাস্তা বর্তমানে ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। যান চলাচলতো দূরের কথা স্বাভাবিক ভাবে হাটা চলাই এখন মুশকিল হয়ে পড়েছে। স্কুল কলেজগামী ছেলে মেয়েরা পড়েছে চরম বিপাকে। গত কয়েকদিনের অবিরাম বর্ষন ও বালু উত্তোলনের ফলে ছড়ার ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করছে। এত কিছুর পরও স্থানীয় পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কোন উদ্দ্যোগ নেই। ছড়া তীরবর্তী ও রাবার ড্যাম সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচলকারী লোকদের দূর্ভোগের সীমা নেই।

স্থানীয় চেয়ারম্যান পাড়ার বাসিন্দারা জানান, খাস ঘোনা পয়েন্টে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে রাবার ড্যাম সড়কের পাশ দিয়ে প্রবাহিত খুটাখালী ছড়ার পশ্চিম পাশের ১ শ মিটার রাস্তা ভেঙ্গে চৌচির হয়ে গেছে। নদী ক্রমশই পাড়ার দিকে এগিয়ে আসছে। আধা কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ এ রাস্তাটি বিলীন হলে হুমকির মুখে পড়বে ৭ নং ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান পাড়া, খাস ঘোনা, আজল্লা পাড়া, লুই ঘোনা, কচি কাটা, ঘাটঘর, রাবার ড্যাম এলাকার বিস্তীর্ণ জনপদ। বর্তমানে শতাধিক পরিবার, দেড় শ একর ধানি জমি, অর্ধ শতাধিক মৎস্য চাষের পুকুর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

এলাকাবাসিরা জানান, স্থানীয় জব্বার, ইদ্রীস, বশির, রহিম সিন্ডিকেট তথা বালু লুটেরাদের নিজ নিজ ভাড়াটে বাহিনী রয়েছে। ঐ বাহিনী মূলত বালু সিন্ডিকেটের হয়ে বালু উত্তোলন করছে।

কক্সবাজার পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, নদী শাসন অত্যান্ত ব্যায় বহুল কাজ। রাবার ড্যাম সড়কের ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্র্তপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

রাবার ড্যাম সংশ্লিষ্টরা জানান, ড্যামের নিচের এলাকা খাস ঘোনায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে চরম ঝুঁকিতে রায়েছে রাবার ড্যাম । তারা বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।