শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর :

গত ৩০ এপ্রিল প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় “মোরায় দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ জেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন পোকখালীর দুর্দশাগ্রস্থ মানুষের পাশে গিয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে চাল বিতরণ করলেন পার্শ্ববর্তী জালালাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান রাশেদ। গতকাল ৫ জুন সোমবার সকাল ১০টা’য় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠণের নেতৃবৃন্দ এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে পোকখালী ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা গোমাতলী ও রিফিউজিঘোনার হতদরিদ্র ২২০ টি পরিবারের মাঝে এ চাউল বিতরণ করা হয়। বিগত ১ সপ্তাহ আগে ঘূর্ণিঝড় মোরায় লন্ডভন্ড হয়ে যায় ওই ইউনিয়নের বিশাল অংশ। বিশেষ করে গোমাতলী ও রিফিউজিরঘোনা গ্রামের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়ে। গোমাতলীতে ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাধ দিয়ে দিনরাত সাগরের লোনা পানি অনুপ্রবেশ করার কারণে কয়েক’শ পরিবার দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বসত ঘরে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় বহু পরিবারের এই রমজানে উনুন জ্বালাতেও কষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গাইট্টাখালীর বাসিন্দা আবদুর রহমান। মোরায় ক্ষতিগ্রস্থরা সরকারী সাহায্যের আশায় দিনের পর দিন তীর্থের কাকের মত চেয়ে থাকলেও কোন জনপ্রতিনিধি কিংবা সরকারী বা বেসরকারী কোন সংস্থার লোকজন ত্রাণতো দূরের কথা দূর্গতদের খবর নিতেও আসেননি বলে জানান সাংবাদিক মোঃ সেলিম উদ্দিন। ইমরুল হাসান রাশেদই সর্বপ্রথম মোরায় আক্রান্তদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বলে জানালেন, চাল নিতে আসা রিফিউজিঘোনার ষাটোর্ধ্ব নারী কুলচুমা বেগম। ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে চাল বিতরণকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠণিক সম্পাদক এম. ফিরোজ উদ্দিন খোকা, উপ-স্কুল বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আ’লীগের নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয়জনগণ। ঘূর্ণিঝড় মোরায় আক্রান্তের পর থেকে সপ্তাহেরও বেশী সময় ধরে ওই এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ভেঙ্গে ও হেলে পড়েছে বেশ কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটি, ছিঁড়ে গেছে সঞ্চালন লাইনের তার। পুরো এলাকা বর্তমানে অন্ধকারে নিমজ্জিত। এক প্রশ্নের জবাবে, জালালাবাদের ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল রাশেদ জানান, সরকার ইতিমধ্যেই ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য কক্সবাজার পাউবোর অনূকূলে ১৬৭ কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে এবং ওয়ার্ক অর্ডারও প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া বিদ্যুত সংযোগ পুনরায় চালু করার জন্য পল্লী বিদ্যুতের একটি টীম আজ মঙ্গলবার ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাটি পরিদর্শণ শেষে শ্রীঘ্রই লাইন মেরামতের কাজ শুরু করবে বলে জানান। উল্লেখ্য, ওই এলাকার বেড়িবাধটি নির্মিত হলে গোমাতলীর শত শত একর চিংড়ি ঘের আবারও চিংড়ি চাষের আওতায় আসবে এবং দরিদ্র মানুষ রক্ষা পাবে জোয়ার ভাটার দূদর্শা থেকে। এদিকে মোরায় ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন সহসায় ত্রাণ তৎপরতা শুরু করতে সংশ্লিষ্ঠ কতৃপক্ষের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন।