কামাল শিশির, ঈদগড় ( কক্সবাজার):

রামু উপজেলার ঈদগড় ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারীতে বন্য হাতির আক্রমণে নিহতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে । এছাড়া হাতি আতংকে দিন কাটাচ্ছে ঈদগড়- বাইশারীর প্রায় ৫০ হাজার জনগণ। বন্য হাতির কবলে পড়ে এলাকার শত শত লোক অকালে প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বিগত বছর গুলোতে পাহাড়ে লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে, জুমচাষ করতে গিয়ে, পাহাড়ের পাদদেশে চাষ করতে গিয়ে, বাঁশ- গাছ আনতে গিয়ে এবং নানা কার্য সম্পাদন করতে বন্য হাতির কবলে পড়ে নিহত হয়েছে প্রায় ১শ জনেরও অধিক এবং আহত হয়েছে ২শ জনের বেশি। বন্য হাতির উপদ্রব দিন দিন বাড়ার কারণ হল বনের গভীর জঙ্গল কেটে পেলে লোকজন রাবার বাগান সহ বিভিন্ন ফলজ বাগান করায় বন্য হাতি গুলো আশ্রয় খুঁজে না পেয়ে প্রায় সময় লোকালয়ে ডুকে পড়ে এবং রোপনকৃত ধান সহ বিভিন্ন ক্ষেত খামার বসত বাড়ীতে তান্ডব চালায় । এলাকার জনগণ হাতি তাড়াতে গিয়ে অবশেষে হাতির আক্রমণের শিকার হয়ে মারা যায়। প্রতিবছর লোক মারা গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আদৌ কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। জীবনের তাগিদে এলাকার হাজার হাজার লোক প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। সকাল বেলায় লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে অনেকেই প্রাণ হারায়। এছাড়া সারাদিনের কাজ শেষে রাতে পাহাড়ের পাদদেশে চাষ করা ধানক্ষেত পাহারা দিতে গিয়ে এবং রাবার বাগানে কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারায় । শুধু মাত্র জীবনের জন্য বাঁচার তাগিদে। মানুষ মরণশীল এটা সত্য কিন্তু এভাবে বন্য হাতির কাছে এলাকার জনগণ মৃত্যু বরণ করবে তা খুবই বেদনা দায়ক। অনেক স্বজনহারা ব্যক্তি এই প্রতিবেদককে দুঃখ করে জানান, বর্তমান সরকারের আমলে এলাকায় একটি হাতি অভায়ারণ্য নির্মাণের কথা শুনা গেলেও তা আদৌ নির্মাণ করা হয়নি । প্রথম রোজার দিন হাতির কবলে পড়ে মারা যায় ঈদগড়ের পার্শ্ববর্তী গ্রাম বাইশারী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ডলুরঝিরি গ্রামের মোঃ সোবাহান ।এর আগে ঈদগড় ইউনিয়নের কুদ্দুস মিয়ার জুম এলাকার বাসিন্দা আজিজুল হক,ইসলামাবাদ ইউনিয়নের গজালিয়ার বাসিন্দা ছৈয়দনুর, ঈদগড় মোহাম্মদ শরীফ পাড়া গ্রামের মোঃ সেলিমের স্ত্রী রেবেকা বেগম,ঈদগড় ঠুটারবিল এলাকার ফরিদুল আলম, ইসলামাবাদ গজালিয়া এলাকার মোজাফফর আহমদ , ঈদগড় চরপাড়া এলাকার সাকের আহমদ, মাতবর পাড়ার মিন্টু সহ আরো অনেকেই। এলাকাবাসী বর্তমানে নানা ভয় ভীতির মধ্য দিয়ে এলাকায় দিন কাটাচ্ছে শুধু মাত্র বিভিন্ন ক্ষেত খামার গুলো বন্য হাতির কবল থেকে রক্ষা করার জন্য । বর্তমানে এলাকার সর্বত্রে বন্য হাতির অবাধ বিচরণ দেখা দিয়েছে । এলাকার সর্বস্তরের জনগণ হাতির উপদ্রব কমাতে এবং হাতির কবলে পড়ে যাতে এলাকার নিরহ লোকদেরকে আর প্রাণ হারাতে না হয় সেই জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।