হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ :
ঘুর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে লন্ডভন্ড হয়েছে টেকনাফ উপজেলার সব ইউনিয়ন। সেমিপাকা ও কাঁচা বসতঘর নেই বললেই চলে। বিধ্বস্থ হয়েছে ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্টান। সড়ক যোগাযোগ, টেলিযোগাযোগ, মোবাইল যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, নৌ-যোগাযোগ সবই ২৯ মে গভীর রাত থেকে ৩০ মে বিকাল পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন ছিল। ৩০ মে বিকালে উপড়ে ও ভেঙ্গে পড়া গাছ সরিয়ে কোন রকম সড়ক যোগাযোগ চালু করা হয়েছে। ল্যান্ড ফোন যোগাযোগ. মোবাইল ফোন যোগাযোগ, টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ, নৌ-যোগাযোগ এখনও বন্দ রয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ে মৃত্যুর খবর পাওয়া না গেলেও সেন্টমার্টিন-শাহপরীরদ্বীপ থেকে শুরু করে পুরো টেকনাফ এখন যেন মৃত্যুপুরী।
সব চেয়ে মারাতœক আকার ধারণ করেছে পবিত্র মাহে রমজানে হাজার হাজার পরিবারে চুলা জ্বলছেনা। তীব্র খাবার সংকট। বসতঘরে ছাউনী না থাকায় মাথা গোঁজার ঠাঁয় নেই। সর্বত্র গাছ উপড়ে ও ভেঙ্গে পড়েছে। উপজেলা পরিষদ এবং হাসপাতালেও একই অবস্থা। গাছ উপড়ে পড়ে উপজেলা নির্বাচন অফিস ও উপজেলা পরিষদের ভবনের উপর পড়েছে। তাছাড়া গাছ পড়ে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন ‘শিশু পাঠাগার’ সম্পুর্ণ বিধ্বস্থ হয়েছে। পুরো উপজেলায় পানের বরজ সম্পুর্ণ বিধ্বস্থ হয়েছে। সৈকতের ঝাউ বাগানের অসংখ্য গাছ ভেঙ্গে ও উপড়ে পড়েছে।
২৯ মে গভীর রাত থেকে টেকনাফে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্দ রয়েছে। টেকনাফ উপজেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমে ৩০ মে বিকালে যোগাযোগ করে জানা যায় ল্যান্ড ফোন যোগাযোগ. মোবাইল ফোন যোগাযোগ, টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ বন্দ থাকায় ক্ষয়ক্ষতির কোন ধরণের তথ্য পৌছেনি। শুধুমাত্র বলা হয় এই ঘুর্ণিঝড়ে কোন নিহত নেই। জেলা প্রশাসন থেকে ১৩ মেট্রিক টন খয়রাতি চাল বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্ত চালগুলো এখনও ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌছেনি। চিংড়ি, কৃষি, শিক্ষা, মৎস্য, গবাদিপশু ইত্যাদির ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ এখনও কন্ট্রোল রুমে পৌছেনি।
টেকনাফ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গিয়ে জানা যায়, ঘুর্ণিঝড়ে বিভিন্নভাবে আহত হয়ে ২৪ জন হাসপাতালে এসেছিল। তম্মধ্যে অঅঘাত গুরুতর হওয়ায় ২ জনকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুর আহমদ জানান ঘুর্ণিঝড়ে দ্বীপে নিহতের কোন ঘটনা ঘটেনি। শতাধিক ব্যক্তি কমবেশী আহত হয়েছে। বসতবাড়ি সম্পুর্ণ বিধ্বস্থ ৪০০টি, আংশিক বিধ্বস্থ ৬০০টি, দোকান সম্পুর্ণ বিধ্বস্থ ৩০টি, আংশিক বিধ্বস্থ ৭০টি, ফিশিং ট্রলার সম্পুর্ণ বিধ্বস্থ ৩০টি, আংশিক বিধ্বস্থ ৭৫টি, নারিকেল গাছ সম্পুর্ণ বিধ্বস্থ ৩৫০টি, আংশিক বিধ্বস্থ ১০০০০টি, অন্যান্য গাছ ২০০০০টি, সুপারি গাছ ৩৫০টি, গবাদিপশু মারা গেছে ১৫০০টি, মসজিদ সম্পুর্ণ বিধ্বস্থ ১০টি, আংশিক বিধ্বস্থ ৫টি।